Image description

স্বাস্থ্য খাতে হচ্ছে বড় রদবদল। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগ এক হওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পাঁচটি অধিদপ্তর ও দুটি প্রতিষ্ঠান ভেঙে তিনটি অধিদপ্তর করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আগামী দেড় মাসের মধ্যে এ সংস্কার সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা, কাজের গতি বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন ধরনের সেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এ রূপান্তর। দুই বিভাগ এক হওয়ার বিষয়ে প্রি-নিকার, নিকার (ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটি ফর অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রিফর্মস) ও সচিব কমিটির অনুমোদন বাকি আছে, যা আশা করা যায় ইতিবাচকই হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশে প্রয়োজনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ, মানসম্পন্ন এবং টেকসই কোনো স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই এই উপলব্ধি থেকে স্বাস্থ্য খাতের সংস্কারের জন্য নেওয়া হয় বেশকিছু বড় উদ্যোগ। দাতানির্ভরতা কাটিয়ে ওঠা ছিল তার মধ্যে অন্যতম প্রধান, যা ইতোমধ্যে বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে। এ ছাড়া আরও কিছু সিদ্ধান্ত আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে।’ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সেবা, শিক্ষা ও গবেষণাসহ স্বাস্থ্যের পুরো কার্যক্রম চালাতে আছে কয়েকটি অধিদপ্তর এবং প্রতিষ্ঠান। এগুলো হলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অর্থনীতি অধিদপ্তর, জাতীয় পুষ্টি পরিষদ, জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নিপোর্ট। বিভিন্ন ধরনের দপ্তর ও প্রতিষ্ঠান হওয়ায় প্রায়ই দেখা দিত সমন্বয়হীনতা, যার প্রভাব পড়ত কাজে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ সমন্বয়হীনতা কাটিয়ে কাজে গতি আনতে সব মিলিয়ে অধিদপ্তরের সংখ্যা হতে পারে তিনটি। অধিদপ্তরগুলোর নাম হবে- প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও জনস্বাস্থ্য, চিকিৎসাসেবা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও গবেষণা। তার মধ্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে সব ধরনের রোগ প্রতিরোধ ও উন্নয়নমূলক কর্মকা পরিচালনা করবে। হাসপাতালের চিকিৎসাসহ অন্যান্য সেবা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে চিকিৎসাসেবা অধিদপ্তরের কাছে। আর মেডিকেল, ডেন্টাল, নার্সিংসহ সব ধরনের চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণার দেখভাল করবে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও গবেষণা অধিদপ্তর। আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হচ্ছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। নাম হবে, মেডিসিন অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি বা অথরিটি (এমএইচআরএ)। ওষুধের পাশাপাশি কসমেটিকের বিষয়টিও দেখবে এ প্রতিষ্ঠান। স্বাস্থ্য খাতে ব্যবহার্য সব ওষুধ, ভ্যাকসিন, ডিভাইসসহ সব প্রযুক্তির উপযোগিতা মূল্যায়ন করে মতামত দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করা হবে হেলথ টেকনোলজি অ্যাসেসমেন্ট ইউনিট। এটি স্বাস্থ্য খাতে সব ধরনের প্রযুক্তি ক্রয়, সংগ্রহ বা অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ প্রদান করতে পারবে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক উপদেষ্টা (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল) ডা. মোজাহেরুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিকেন্দ্রীকরণে কাজের তদারকি এবং জবাবদিহি সহজ হয়। এখন সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য একত্র করা হলে ভালো। মনিটরিং ও সুপারভিশন শক্তিশালী হলে এ উদ্যোগ সফল হবে।