Image description

আসন্ন নির্বাচন পরবর্তী সরকার গঠনের জন্য বিএনপিকে সবচেয়ে উপযুক্ত বলে মনে করেন ৩৯ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে, ২৮ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে মত দিয়েছেন।

 

ইনোভিশন কনসালটিং-এর পরিচালিত ‘পিপলস ইলেকশন পালস সার্ভে’র দ্বিতীয় দফার প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয় আর্কাইভস মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

 

জরিপে ১০,৪১৩ জন ভোটারের মতামত নেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে ৬৯.৫ শতাংশ গ্রামীণ এবং ৩০.৫ শতাংশ শহরের বাসিন্দা। দেশের ৬৪টি জেলার ৫২১টি স্থান থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ইনোভিশন কনসালটিং-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জরিপের প্রধান গবেষক মো. রুবাইয়াত সরওয়ার এই ফলাফল তুলে ধরেন।

 

আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ এম শাহান, ভয়েস ফর রিফর্মের যুগ্ম আহ্বায়ক ফাহিম মাশরুর, নাগরিক সংগঠন ব্রেইনের নির্বাহী পরিচালক শফিকুল রহমান এবং দ্য ডেইলি স্টারের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাইমা ইসলাম।

 

জরিপ অনুযায়ী, ৪০ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, আগামীতে বিএনপির সরকার গঠনের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ২৩ দশমিক ৩ শতাংশের মতে, এই সম্ভাবনা জামায়াতের।

 

ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- এমন উত্তরদাতাদের মধ্যে ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ বিএনপিকে এবং ৩০ দশমিক ৩ শতাংশ জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন জানিয়েছেন। আগের জরিপের তুলনায় আওয়ামী লীগের সমর্থন ১৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের সমর্থন কমে যথাক্রমে ৪ দশমিক ১ শতাংশ ও ৩ দশমিক ১ শতাংশ হয়েছে।

 

জরিপে একটি সম্ভাব্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া হয়, যেখানে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির সমর্থন বেড়ে ৪৫ দশমিক ৬ শতাংশ এবং জামায়াতের সমর্থন ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়াতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

জরিপের তথ্য বলছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে বিএনপিতে সমর্থন বাড়ে, তবে শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়লে এই সমর্থন কমে আসে। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তরুণ ও বেশি শিক্ষিত ভোটারদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি জনপ্রিয়।

 

প্রথম দফার তুলনায় ভোটারদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার হার কিছুটা কমেছে (৬২% থেকে ৫৭.৮%)। তবে, যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের মধ্যে পছন্দের কথা জানানোর প্রবণতা ৬৫.৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮৩.২ শতাংশ হয়েছে।

 

ভবিষ্যৎ সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে। নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ (৫৪.৬%) একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হলেও এখন জনগণের প্রধান দাবি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি (৫৭.৫%)। এ ছাড়া, ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ উত্তরদাতা দুর্নীতি কমানোকে এবং ২০ দশমিক ৩ শতাংশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সংস্কার করাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।