চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি অপি দাশ নিহতের পর গুরুতর আহত মো. তানিম বিল্লাহ (২০) নামে আরেক ছাত্রদল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাক আহম্মেদ।
নিহত ছাত্রদল কর্মী তানিম উপজেলার ৩নং মির্জাপুর ইউনিয়নের সরকারহাট এলাকার বাকের আলী চৌধুরী বাড়ির মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের পুত্র। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে চৌধুরীহাট এলাকায় তার নানার বাড়িতে বসবাস করে আসছিল বলে জানা গেছে।
নিহত ছাত্রদল কর্মী তানিম একই ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত উপজেলার চিকনদণ্ডী ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি অপি দাশের কর্মী। তারা উভয়ে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিনের অনুসারী বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার চিকনদণ্ডী ইউনিয়নের চৌধুরীহাটের দাতারাম সড়কে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হঠাৎ একদল দুর্বৃত্ত চিকনদণ্ডী ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি অপি ও তার সঙ্গীয় ছাত্রদল কর্মী তানিমের ওপর চড়াও হয়ে হামলা চালায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
ওই সময় স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক চিকনদণ্ডী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড এলাকার মিন্টু দাশের পুত্র অপি দাশকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এছাড়া ছাত্রদল কর্মী তানিমের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। এরই মধ্যে ছাত্রদল কর্মী তানিম বুধবার সকালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ছাত্রদল কর্মী তানিম হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদল সভাপতি তকিবুল হাসান চৌধুরী তকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি তাদের দুই ছাত্রদল নেতাকর্মীকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত হত্যাকারীদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
এদিকে ঘটনার পরপরই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হত্যার ঘটনায় জড়িত মো. আফসার উদ্দিন (১৮) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে মডেল থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত যুবক আফসার কক্সবাজার জেলা সদরের পানখালী গ্রামের কবির আহম্মদের পুত্র। বর্তমানে সে চৌধুরীহাটের ইউনিক চিকেন হাউস নামক একটি রেস্টুরেন্টের পাশে সুজন কলোনিতে বসবাস করত বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে ঘটনার ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও এখনও থানায় মামলা রুজু হয়নি বলে জানিয়েছেন হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনজুর কাদের ভূঁইয়া।
তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত উক্ত ঘটনার কারণ উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার তদন্তে পুলিশ কাজ করছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।
এছাড়া নিহতদের পরিবারের সদস্যরা এখনো পর্যন্ত থানায় মামলা রুজু না করার কারণে ঘটনার পরপরই সিসিটিভির ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে গ্রেফতারকৃত যুবক আফসারকে বুধবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
