এআর জাহাঙ্গীর (AR Xahangir)
আলি রিয়াজ। আটলান্টিক কাউন্সিলের নন-রেসিডেন্ট সিনিয়র ফেলো। সাউথ এশিয়া সেন্টার। আটলান্টিক কাউন্সিলের একজন লোয়ার র্যাংক একাডেমিক ও আমেরিকান সিটিজেন আপনাদের সংবিধান পুনঃলিখন করতেসে। তার একমাত্র যোগ্যতা হল তিনি আটলান্টিক কাউন্সিলের একাডেমিক। ওয়ার অন টেররের যুগে তিনি বাংলাদেশে জঙ্গীবাদ দমন নিয়ে লিখতেন, যে জঙ্গীবাদের কোন অস্তিত্ব বাংলাদেশে ছিল না।
আমেরিকান ও ইইউ এর বিশ্বস্ত এজেন্ট হওয়ার কারনে ইউনুস তাকে সংবিধানের মত অতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পন করসেন।
তিনি কোন রাজনৈতিক দল কে তার কমিশনে অংশ গ্রহণ করতে দেন নাই। যে রাজনীতিবিদদের এই দেশ তাদের কেই তিনি সংস্কার কমিটিতে ঢুকতে দেন নাই। নিজের ফরেন ব্যাকার ও এমপ্লয়ারদের স্বার্থ ও হুকুম অনুযায়ী এই সংবিধান সংস্কারের খসড়া লিখসেন।
কারন তিনি, ইউনুস, তার পশ্চিমা আটলান্টিক কাউন্সিল মনে করে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা নিজেদের রাজনীতি ও দেশের ভাগ্য নির্নয়ের অধিকার রাখেন না। ইনডিজেনাস রাজনীতিবিদরা রাজনৈতিক কাঠামো পুনঃগঠনের অধিকার রাখে না। তারা পুনঃগঠনের যোগ্য না। তারা জংলী বর্বর, তাদের সভ্য করার জন্য আমেরিকান-আটলান্টিক-কাউন্সিলের একজন লোয়ার র্যাংকের একাডেমিককেই সংবিদান পুনলিখন করতে হবে।
এটাই কলোনিয়ালিজম। আপনার সরকার কেমন হবে সেটা ঠিক করে দিতেসে আটলান্টিক কাউন্সিল। আপনার নেতা কয় টার্ম থাকতে পারবে সেটা ঠিক করতেসে আমেরিকা।
যে আমেরিকান পলিটিক্স ও লিডারশিপ তাদের এলিটদের এলিট শহর লস এঞ্জেলস কে আগুন থেকে বাঁচাতে পারে নাই। ১০দিন হয়ে গেল এখনও আগুন জ্বলতেসে। সেখানে ফায়ার হাইড্রান্টে পানি ছিল না, রিজার্ভয়ার খালি করে রাখা হইসিল করাপশন ও পলিটিকাল টানাটানির কারনে। তাদের মেয়র গভর্নর জ্বলন্ত নেইবারহুডের সামনে কাঁধ ঝাকিয়ে নাচিয়ে হেসে হেসে বলেন যে এখানে প্রপার্টি সেল হয়ে আবার নতুন করে আবাসন হবে। খুব খুশী।
আমেরিকার লিবারেল ডেমোক্রেসি যেভাবে সংবিধান লিখে দূর্বল লিডারসিপ তৈরি করসে পুতিন ও এরদোগানের মত "স্বৈরাচার" কে ঠেকানোর নামে, সেই "স্বৈরাচার"রা ঠিকই একটা ধ্বংসপ্রাপ্ত রাশিয়া কে ইউরোপের অন্যতম প্রসপেরাস দেশ ও মিলিটারি সুপারপাওয়ারে পরিণত করসে। তুর্কিয়ের এরদোগান বাংলাদেশের বর্তমান ব্যাংকরাপ্ট সিচুয়েশনে পাইসিল তুর্কিয়ে কে, সেখান থেকে আজকে তারা রেজিওনাল ইকোনমিক ও মিলিটারি পাওয়ারে পরিণত হইসে।
আমেরিকার "ভাল" সংবিধান দিয়ে লস এঞ্জেলসের আগুন থামানো যায় নাই। আর "স্বৈরাচার" পুতিন-এরদোগান দিয়ে তাদের ২দেশ সুপারওপাওয়ার ও রেজিওনাল পাওয়ার হয়ে গেসে।
আমাদের দেশে কোন পলিটিকাল সিস্টেম চলবে সেটা আমাদের দেশের ইনডিজেনাস পলিটিসিয়ান, পিপল অফ পাওয়ার ও জনগনই ঠিক করবে। কোন পলিটিকাল সিস্টেমে জনগন শান্ত থাকবে সেটা জনগনই সাড়া দিবে। তাদের শান্ত থাকা মানে সমর্থন, তাদের অশান্ত হওয়া মানে অসমর্থন। ইকোনমিক ও পলিটিকাল ট্রান্সফরমেশন করে হাসিনার রেখে যাওয়া রেন্ট-সিকিং ইকোনমি থেকে ম্যানুফ্যাকচারিং ইকোনমিতে যাবে সেটা ঠিক করবে পলিটিশিয়ান ভার্সেস ব্যবসায়ী-আর্মি-ব্যুরোক্রেট দের বার্গেইন।
এই প্রসেসে একজন বিদেশী ও পশ্চিমের হাউজনিগাসামা এসে যদি আমেরিকান কলোনিয়ালিজম চাপায় দেয়, তাহলে বাংলাদেশ লস এঞ্জেলসের মত আগুনে পুড়বে। আমাদের দেশ IMF-WB এর লোন নিয়ে IMF-WB এর লোনই শোধ করে যাবে। এই ডেট ট্রাপ থেকে আমরা আর বের হতে পারবো না।
আমাদের উচিত আল্লাহর ওপর ভরসা করে নিজেদের মুক্তির পথ নিজেরা বের করা। পলিটিশিয়ানরাদের উচিত নতুন সলুশন বের করার জন্য ব্যপক হারে জনগনের সাথে সম্পৃক্ত হওয়া, ব্যবসায়ী ও আর্মির সাথে কোলাবোরেশন করা। পলিটিশিয়ানরাই জনগন, ব্যবসায়ী, আর্মি ও ব্যুরোক্রেটদের মধ্যে ভারসাম্য স্থাপনকারী। ব্যবসায়ী ও আর্মি সরাসরি জনগনের সাথে কানেক্টেড, একজন জনগনের কাছে পণ্য বিক্রি করে, আরেকজন জনগন কে সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ রাখে। এরাই রিয়েল স্টেক হোল্ডার। এরা সবাই এক থাকলে ব্যুরোক্রেটরা বাধ্য হবে জনগন কে সার্ভ করতে। আর্মি নিরাপদে সসম্মানে দেশ কে সিভিল এনফোর্সারদের হাতে দিয়ে ব্যারাকে ফিরতে পারবে।
কিন্তু আলি রিয়াজ ও আটলান্টিক কাউন্সিলের প্রেসক্রিপশনে সংবিধান সংস্কার করে শক্তিসালী রাজনৈতিক নেতৃত্ব তৈরির পথ বন্ধ করে দিলে আমরা পাকিস্তানের মত বার বার সাফার করতে থাকবো। আমরা সারাজীবন পার করে দিব IMF-WB এর ঋণ শোধ করতে করতে। আমরা কখনই ইন্দোনেশিয়া বা মালয়শিয়ার মত উন্নত ও ডেভেলপড হতে পারবো না।