
বাগমারায় জোকা বিল মৎস্যচাষ প্রকল্পের সহ-সভাপতিসহ কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ধরতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেছেন হিসাবরক্ষক সাজ্জাদুর রহমান মিঠু। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রকল্পের প্রায় ৬২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কমিটি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে বিলসংলগ্ন এলাকায় আবার দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার সরেজমিন এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, ২০০৬ সাল থেকে নরদাশ ইউনিয়নের জোকা বিলের সব কৃষিজমিতে বিনামূল্যে সেচ সুবিধা ও কৃষকদের বছরে বিঘাপ্রতি ছয় হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রকল্পের মাধ্যমে মাছচাষ হয়ে আসছে।
সম্প্রতি ওই বিলে মাছচাষকে কেন্দ্র করে দুটি হত্যাকাণ্ডও সংঘটিত হয়। এরপর এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে বিলটি স্থানীয় প্রশাসন নিয়ন্ত্রণে নেয়। কিন্তু গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ‘জোকা বিল মৎস্যচাষ প্রকল্প’ নামে একটি কমিটি গঠন করে এলাকার লোকজন বিলটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মাছচাষ শুরু করেন।
তবে ওই কমিটির সহ-সভাপতিসহ কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে প্রকল্পের প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেন প্রকল্পের হিসাবরক্ষক সাজ্জাদুর রহমান মিঠু।
তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্প থেকে তাদের বহিষ্কারও করা হয়। এরপর বহিষ্কৃতদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণ করতে গিয়ে হিসাবরক্ষক মিঠু নিজেই দুর্নীতির জালে ধরা পড়েন।
প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, হিসাবরক্ষক সাজ্জাদুর রহমান মিঠু ও ক্যাশিয়ার আফসার আলী আমারসহ কয়েকজন সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে প্রকল্পের এক লাখ ৬৮ হাজার টাকা, একাধিক ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে তিন লাখ ৫২ হাজার টাকা, আড়তে মাছ বিক্রয় করে ৩০ লাখ টাকা এবং বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ২৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকাসহ মোট ৬২ লাখ সাত হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আত্মসাতের সেই প্রমাণ ঢাকতে তারা দুটি আয়ের ভাউচার বইও গায়েব করে দিয়েছেন।
প্রকল্পের সভাপতি এফাজুর রহমান জানান, প্রকল্পের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ করতে গিয়ে হিসাবরক্ষক মিঠু নিজেই দুর্নীতির জালে ধরা পড়েছেন। এ কারণে তাকে প্রকল্প থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদিকে অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক সাজ্জাদুর রহমান মিঠু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, সবাই মিলে চক্রান্ত করে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।