সুনামগঞ্জের ছাতকে সুরমা নদীর ভাঙন বেড়েছে। হুমকিতে পড়েছে সড়ক ও সেতুসহ বহু স্থাপনা। ভাঙনে সদর ইউনিয়নের আন্ধারীগাঁও, মল্লিকপুর, কেশবপুর ও বাউশা ডহর বাসিন্দারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কেশবপুরের প্রায় ৮০০ পরিবারের ঘর-বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কে আছেন আশপাশের বসতিরা। অভিযোগ উঠেছে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যকর উদ্যোগ নেই। এদিকে, ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয়রা জিও ব্যাগ ফেলে এলাকা রক্ষার চেষ্টা করলে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
সুরমা নদীর ভাঙন প্রতিরোধে এখনই জরুরি উদ্যোগ নেওয়া না হলে হুমকিতে থাকা ছাতক-সুনামগঞ্জ সড়ক বিলীন হয়ে যাবে। এতে জেলা সদরের সঙ্গে উপজেলা সদরের যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ইতোমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে মসজিদ, স্কুল, কবরস্থান, বাজার, সড়ক, মাজার, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও ফসলি জমি। ফাটল দেখা দিয়েছে
বাউশা বড় মসজিদের দেয়াল ও ছাদে।
মুসল্লিরা জানান, মসজিদটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এক বছর আগ থেকে নামাজ পড়া বন্ধ রয়েছে। ভাঙনে নদীর পাড়ে অটো রাইস মিল ও শতাধিক পাথর ভাঙার মেশিন বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন অনেক শ্রমিক।
ছাড়াও হুমকিতে রয়েছে বাউশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভাঙনের কারণে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। দ্রুত ভাঙন রোধে উদ্যোগের দাবি জানায় তারা।
ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান শাওন জানান, কারখানা স্থাপনের জন্য জমি কিনেছিলাম। ভাঙনে প্রায় ৬০ শতাংশ জমি তলিয়ে গেছে। ভাঙন থেমে নেই। অব্যাহত ভাঙন রোধে দ্রুত সরকারি উদ্যোগ জরুরি।
ছাতক পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি শামছু মিয়া জানান, নদী ভাঙনের ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ক্ষদ্র্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন।
স্থানীয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলী হোসেন জানান, নদী ভাঙন রোধে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডে দরখাস্ত করেছি। কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, আমরা বারবার উদ্যোগ নিলেও সরকার কোনো যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা দাবি জানান তিনি।
উপজেলা প্রকৌশলী সাব্বির আহমদ জানান, নদী ভাঙ্গন থেকে সড়ক রক্ষায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইমদাদুল হক জানান, ছাতকে কয়েকটি স্থানে নদী ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাউশা এলাকায় খবর নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে নদী ভাঙ্গন রোধে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সারাবাংলা