
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেহাল অবস্থা ও তীব্র যানজট সরেজমিনে দেখতে গিয়ে নিজেই সেই যানজটের শিকার হয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
বুধবার সকালে তিনি প্রায় দুই ঘণ্টা আশুগঞ্জের সোনারামপুর এলাকায় আটকে ছিলেন। পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে এবং শেষমেশ মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন।
এদিন সকালে চট্টগ্রামগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে উপদেষ্টা আশুগঞ্জ রেলস্টেশন পরিদর্শন করেন। এরপর সকাল ১০টা ২০ মিনিটে তিনি আশুগঞ্জ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড মোড়ের দিকে যাত্রা শুরু করেন। কিন্তু সোনারামপুর এলাকায় পৌঁছাতেই তার গাড়ি দীর্ঘ যানজটে আটকে যায়।
প্রায় দুই ঘণ্টা যানজটে থাকার পর তিনি গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে চলেন। পরে বাহাদুরপুর এলাকায় একটি মোটরসাইকেলে চড়ে সরাইল বিশ্বরোডের দিকে যাত্রা করেন। এসময় তার বিশেষ সহকারী শেখ মঈনউদ্দীনও অন্য একটি মোটরসাইকেলে সঙ্গী হন।
এই ভোগান্তির মাঝেও উপদেষ্টা বলেন, “শেষ পর্যন্ত আমি মহাসড়ক ঘুরে দেখব সমস্যা কোথায়, এবং এর সমাধান করব।”
উপদেষ্টার পরিদর্শনের আগেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে যানজট ভয়াবহ রূপ নেয়। আশুগঞ্জের সোহাগপুর থেকে সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা যায়।
মূলত আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত প্রায় ৫১ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ ধীরগতিতে চলা এবং সংস্কারের অভাবে সড়কের অসংখ্য গর্ত তৈরি হওয়ায় এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইল বিশ্বরোড পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়ক একেবারে বেহাল।
উপদেষ্টার পরিদর্শনের খবর পেয়ে সকাল থেকেই তড়িঘড়ি করে খানাখন্দের ভরাট শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিন্তু সংস্কারকাজের জন্য মহাসড়কের একপাশ বন্ধ রাখায় যানজট আরও তীব্র হয়ে ওঠে।
এ বিষয়ে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, “গতকাল (মঙ্গলবার) রাত থেকেই যানজট তীব্র হয়েছে। মূলত সড়কের দুরবস্থার কারণেই প্রতিনিয়ত এই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। হাইওয়ে পুলিশ যানজট নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।”
হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, রাস্তার একপাশে মালামাল রেখে কাজ করায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
উপদেষ্টার পরিদর্শনের সময় তার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম, পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক, এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে উপদেষ্টাকে গ্রহণের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসেন এবং হাইওয়ে পুলিশ সুপার শাহীনুর আলম।