Image description

আক্রমণ বিরোধী আট স্তম্ভ নির্মাণের পেছনে দুই অরাজনৈতিক ব্যক্তির গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী ছাত্র শহীদ আবরার ফাহাদের ভাই আবরার ফাইয়াজ। 

আজ বুধবার (৮ অক্টোবর) ফাইয়াজ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে আট স্তম্ভ নির্মাণে দুই অরাজনৈতিক ব্যক্তির অবদান উল্লেখ করেন।

ফাইয়াজ স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘আগ্রাসন বিরোধী আট স্তম্ভ নির্মাণের পেছনে অরাজনৈতিক ২ জন মানুষের ভূমিকা আলাদাভাবে আমাদের জানা প্রয়োজন।’ আবরার ফাইয়াজ প্রথমে তুলে ধরেন বুয়েট অ্যালামনাই এবং ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিটেকচার শিক্ষক নাজমুল হক নাইমের অবদানকে।

তিনি বলেন, ‘নাজমুল হক নাইম ভাই বুয়েট অ্যালামনাই ও ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির আর্কিটেকচার শিক্ষক। গত ১বছর ধরে ভাই এই স্তম্ভ নিয়ে কাজ করছেন। বিশেষ করে গত একমাসে ভাই যে ডেডিকেশন দিয়ে ডিজাইন পার্ফেকশনের দিকে নজর দিয়েছেন তা না বললেই না। এমনকি যখন নিচের ফাকা রেখে স্তম্ভ করতে ইঞ্জিনিয়ার রাজি হচ্ছিল না, ভাই নিজে আসিফ ভাইকে গিয়ে বুঝিয়ে রাজি করিয়েছেন। প্রতিটা কাজের পুরো ডিটেইলস উনি বলে দিয়েছেন। গ্রানাইট সমান লাগবে, একদম বেজে লাইট লাগবে, মরিচা ধরানোর জন্য কী কী করা লাগবে থেকে শুরু করে A to Z. স্তম্ভগুলোর কনসেপ্টও ভাইয়ের যা পরে বলবো।’

দ্বিতীয় ব্যক্তির নাম হিসেবে আবরার ফাইয়াজ উল্লেখ করেছেন ডিএসসিসির ইঞ্জিনিয়ার রুয়েট ০৬ ব্যাচের মিথুন চন্দ্র শীল দাদা ও তার টিমকে, 

তিনি উল্লেখ করেন, ‘উনি কাইন্ড অফ ম্যাজিশিয়ানের মতো নাঈম ভাইয়ের সব আবদারকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। তার টিম মাত্র ৪০দিনেই কাজ শেষ করেছে। এই বৃষ্টি, পূজা সবকিছুর মধ্যে দিনরাত কাজ করে গেছেন। বার বার আমাদের নিয়ে গিয়ে দেখানো থেকে অন্যান্য সকল ঝামেলা উনি বেশ ভালোই হ্যান্ডেল করেছেন। সাথে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এর সকল প্রধান কর্মকর্তারও ধন্যবাদ প্রাপ্য, তারা সম্ভবত তাদের সিরিয়াসনেসের শতভাগ দিয়েছেন এই কাজে। নিয়মিত সবাই ভিজিট করে বিভিন্ন পরামর্শ দিতেন দেখতাম। মোটামুটি সবার উদ্দেশ্য ছিলো কিভাবে এটিকে আরো সুন্দর করা যায়।’

শেষে আবরার ফাইয়াজ উল্লেখ করেন, ‘দিনশেষে বলতে পারি তারা সফল। লাইটগুলো টিকলে খুবই ইউনিক একটি স্থাপনা হয়ে থাকবে এটি।’

আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ: আবরার ফাইয়াজ ও নাহিদের বক্তব্যে সাংঘর্ষিক ধারণা-

এদিকে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আগ্রাসনবিরোধী আটস্তম্ভের মূল উদ্যোক্তা ও পরিকল্পনাকারী ছিলেন আখতার ও মাহফুজ।

নাহিদ ইসলামের দেওয়া পোস্টটি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে দেওয়া হলো-

‘আবরার ফাহাদ হত্যাবিরোধী আন্দোলন এবং পরবর্তীতে 'আগ্রাসনবিরোধী আটস্তম্ভ' স্থাপন ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা যা রাজনীতির পথ পরিবর্তন করে দিয়েছিল। আখতার হোসেন ও মাহফুজ আলম ছিলেন আটস্তম্ভের মূল উদ্যোক্তা ও পরিকল্পনাকারী।

[গত ৭ অক্টোবর, ২০২২ তারিখে শহীদ আবরার ফাহাদের তৃতীয় শাহাদাত বার্ষিকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে শহীদ আবরার স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। স্মরণ সভা থেকে নিম্নলিখিত ঘোষণাপত্রটি প্রচার করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু শহীদ আবরারের খুনির উত্তরসূরী ছাত্রলীগের কর্মীরা স্মরণ সভায় হামলা চালায় এবং ব্যানার ও সকল লিফলেট পুড়িয়ে ফেলে। হামলায় আহতরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা কয়েক দফা হামলা চালায় এবং সবশেষে স্মরণ সভার আয়োজক আখতার হোসেনসহ ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৪ নেতা-কর্মীকে আহত অবস্থায় ছাত্রলীগের সহায়তায় পুলিশ ঢাকা মেডিকেলের বিভিন্ন রুম থেকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে আমরা দেখতে পাচ্ছি আবরার ফাহাদের শাহাদাতের তিন বছর অতিক্রম করলেও ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থায় লাঠিয়াল বাহিনী হিসাবে ছাত্রলীগের ভূমিকা এতটুকুও পরিবর্তন হয়নি। তদুপরি আবরার ফাহাদের আগ্রাসনবিরোধী ও দেশপ্রেমিক চেতনাকে বিস্মৃত করতেই ফ্যাসিস্ট শক্তি সদা তৎপর এবং সে উদ্দেশ্যই ছাত্রনেতাদের উপর এ অমানবিক হামলা-মামলার ডামাডোল। ৭ অক্টোবরের প্রকাশিত ঘোষণাপত্রটি নিম্নরুপ-]

আগ্রাসনবিরোধী আটস্তম্ভ ঘোষণা
প্রকাশকাল- ৭ অক্টোবর, ২০২২

শহীদ আবরার ফাহাদের শাহাদাত ছিল বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে ভারত রাষ্ট্রের ভাবাদর্শিক ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং তা থেকে উদ্ভুত জাতীয় অনৈক্যের মর্মান্তিক পরিণতি। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় নিরাপত্তা, তদুপরি রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী আকারে সিনাটান করে দাঁড়াবার সক্ষমতার পক্ষে ছিলেন শহীদ আবরার ফাহাদ।

কিন্তু, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভাবাদর্শিক দেউলিয়াত্ব এবং দালালির নিকৃষ্ট রূপ দেখা গেল এ শাহাদাতকান্ডে, যখন ইতিহাসের এ ফ্যাসিবাদি কালপর্বে ইসলাম ও বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়ানো যে কোন তরুণকেই তারা টার্গেট করছিল। মুক্তিযুদ্ধে কেন্দ্রীয় ভূমিকা রাখা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন বারবার ভারত রাষ্ট্রের ভাবাদর্শিক হস্তক্ষপ এবং জাতীয় অনৈক্যের ক্ষেত্রে লাঠিয়াল হিসাবে কাজ করেছে, তার উত্তর অনেকের মুখস্থ। কিন্তু, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে জাতীয় সংহতির পক্ষে, কাজে কাজে বাংলাদেশের জনগণের রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসাবে বিকশিত হবার সম্ভাবনাকে আমলে নিয়ে ভাবাদর্শিক দেউলিয়াত্ব ও দালালির বিপক্ষে অবস্থান নিলেই কেবল মুক্তিযুদ্ধের ঘোষিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক সুবিচার বাস্তবায়ন সম্ভব।  

আগ্রাসনবিরোধী আটস্তম্ভে আমরা জাতীয় সংহতি ও রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী আকারে বিকশিত হবার সম্ভাবনার কথাই বলেছি। ভারত ও আওয়ামীলীগের যে অবৈধ লিয়াজো এ জাতিরাষ্ট্রের মধ্যে চিরন্তন এক বিভেদের ক্ষত তৈরি করেছে, আবার তাঁর বিপরীতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রকল্পের বিপক্ষে ধর্মাশ্রয়ী যে শ্রেণীর আবির্ভাব আমরা প্রায়শই প্রত্যক্ষ করি- এতদুভয়কেই কিভাবে নিবীর্য করে আমরা তরুণ, ছাত্র- যুবকেরা একটি শক্তিশালী জাতিরাষ্ট্র গড়তে পারি এবং দক্ষিণ এশিয়ার মুক্তিকামী জনগোষ্ঠীগুলোর আশার অবল্মবন হতে পারি, সেদিকেই আমাদের যাত্রা। 

অভ্যন্তরীণ এসকল অমীমাংসিত বিবাদকে জিইয়ে রাখার ভারতীয় প্রকৌশল যদি আমরা নিস্তেজ করে দিতে না পারি, তাহলে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বহির্মুখী যাত্রার যে সম্ভাবনা, তাকে আমরা রুদ্ধ করব। আর, সে যাত্রা কেবল রাজনৈতিক না বরং বৃহদার্থে দক্ষিণ এশিয়ার মজলুম জনগোষ্টীগুলোর সাথে মুক্তির লড়াইয়ে যে ছেদ পড়েছিল, তারই ঐতিহাসিক পুনরুজ্জীবন। 

ফলে, আটস্তম্ভ নিছক রাজনৈতিক শ্লোগান না। বরং, বাংলাদেশ রাষ্ট্রকল্পের ঐতিহাসিক ছেদকে আমলে নিয়ে ফ্যাসিবাদের এ কালপর্বে নতুন করে রাষ্ট্রভাবনার পাটাতন। যেখানে গিয়ে দাঁড়ালে আমরা একটি রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর ঐতিহাসিক উলম্ফনের সরল সোজা পথকে দেখতে পাব। এ লক্ষ্যে আটস্তম্ভকে আমরা নিছক ভারতবিরোধিতার জনপ্রিয় শ্লোগানে পর্যবসিত করি নি, বরং পঞ্চাশ বছর পরেও বাংলাদেশের অগণতান্ত্রিক এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান বিধ্বংসী ভাবাদর্শ সমূহ আর রাজনৈতিক বাস্তবতার সংবেদনশীল বিচারের ভিতর দিয়ে রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর সম্ভাবনার পক্ষে কথা বলেছি।

এক্ষেত্রে গণতন্ত্রকে আমরা প্রথমে স্থাপন করেছি। গণতন্ত্র মানে কেবল নির্বাচন ফিরিয়ে আনা না, বরং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের ভঙ্গুরতা এবং প্রতিষ্ঠানের গণতন্ত্রহীনতার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান ঘোষণা করা। চলমান ফ্যাসিবাদের কালে যে ভয়ঙ্কর ক্ষতি আওয়ামীলিগ করেছে- তা হল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান থেকে তৃণমূল প্রতিশঠান সর্বত্র অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা জারি করা। ফ্যাসিবাদের সামগ্রিক রূপকে মোকাবেলা  কেবল নির্বাচনি গণতন্ত্রে সীমিত না করে কিভাবে জাতীয় প্রতিষ্ঠান শক্ত ভিতের উপর দাড় করানো যায় এবং জাতীয় নীতি নির্ধারণ গণতান্ত্রিক করে তোলা যায়- সেদিকেই আমাদের নজর থাকবে। 

সার্বভৌমত্ব এ বিশ্বায়নের যুগে কেবল সীমান্তে এসে ঝুলে গেছে। তরল সার্বভৌমত্বের এ কালে বাংলাদেশের কাজ হল সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে আইনি ও কূটনৈতিক পদক্ষপ গ্রহণ এবং যৌথ নদীগুলোর পানি বন্টনে যে বৈষম্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি ও বীজ রক্ষা এবং খাদ্য সার্বভৌমত্ব অর্জন।  

গণপ্রতিরক্ষার ধারণা আমাদের সার্বভৌমত্বের ধারণার সাথেই জড়িত। জনগণের মধ্যে সৈনিকতা এবং   রাজনৈতিক উত্তরণের সম্ভাবনা ব্যাহত হলে যুদ্ধ যাত্রার প্রস্তুতি সম্পর্কে মোটাদাগে কোন রূপরেখা না থাকলে মেরুদন্ডসম্পন্ন একটি রাষ্ট্র গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। 

সাম্প্রাদায়িক সম্প্রীতির কথা আমাদের এখানে বলা হয় নিয়মিতই। কিন্তু রাজনৈতিক বলয়ে জাতীয় সংহতি পোক্ত  না থাকলে রাষ্ট্রের মধ্যকার ঐতিহাসিক ক্ষতগুলোতে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়িয়ে আরো বিভাজনমূলক ব্যবস্থা জারি করা হয়। ফলে, আমাদের দরকার ঐতিহাসিক যে আন্তসম্প্রদায় সম্প্রীতি ছিল তা বজায় রাখা এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সংহতির ধারণা পোক্ত রেখে রাষ্ট্রের মধ্যকার বিভেদকামী শক্তিগুলোকে নিস্তেজ করে ফেলা। 

পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থায় অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা আমাদের শ্লোগান হলেও কার্যক্ষেত্রে এটা খুবই জটিল। তবুও, আমাদের অপ্রতুল রিসোর্স কিভাবে সর্বোচ্চ কাজে লাগানো যায়, গ্রামীণ অর্থনীতিকে কিভাবে সচল রাখা যায়, কৃষি ও দেশীয় শিল্প রক্ষার ভিতর দিয়ে কি করে বড় একটি জনগোষ্ঠীকে বৃহৎ পুঁজির গ্রাসের বাইরে রাখা যায় এগুলো আমাদের ভাবতে হবে। করোনা পরবর্তী বিশ্বে যে দুর্ভিক্ষ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, সেখানে রেমিটেন্স ও আরএমজি’র ভবিষ্যত নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। দেশের মধ্যকার লুটপাটতন্ত্র এবং জবাবদিহিবিহীন অর্থনৈতিক কাঠামোর খোলনলচে না বদলালে আসন্ন দুর্ভিক্ষ আমাদের শতগুণে ভোগাবে।  

জাতীয় সম্পদ রক্ষার মধ্যে দেশীয় শিল্প- কৃষি, নদী, বন ও বন্দর রক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত। আর এ বিষয়গুলোর সাথে যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি জড়িত, ফলে আমরা উপকূলে কৃষি জমি রক্ষা, নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি , বনায়ন বিশেষত সুন্দরবন সহ সমুদ্র উপকুলের বনগুলো রক্ষার পক্ষে বলব। সামুদ্রিক অর্থনীতির সাথে বৃহৎ পুঁজির আগ্রাসন, প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশের বিপর্যয় জড়িত আবার বন্দরের সাথে ভৌগলিক কৌশলগত নিরাপত্তা জড়িত। ফলে, জাতীয় অর্থনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুগুলো আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভাবব। 

সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার বিষয়টি আমরা একটি রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর বিকাশের ক্ষেত্রে যে ধরনের কালচারাল অটনমি ঘোষণা দিয়ে এগুতে হয়, তা ভেবেই অন্তর্ভুক্ত করেছি। এ ভূখন্ড ইন্দো-ইসলামিক সভ্যতার উত্তরাধিকার বহন করছে, অন্যদিকে বাংলার অভ্যন্তরীন যে সাংস্কৃতিক সুষমা আছে তাও ধারণ করছে। ফলে, এখানে ধর্ম ও সংস্কৃতির মধ্যকার লড়াইয়ের বদলে কিভাবে বিভিন্ন মত ও স্রোতের একটা জাতীয় সংশ্লেষণ তৈরি করা যায় এবং  পূর্ববঙ্গীয় অনন্যতা ধরে রাখা যায়, সেদিকে আমরা মনো্যোগী হব। 

মানবিক মর্যাদার বিষয়টি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে লেখা আছে। তবে, এখানে আমরা একটি উপনিবেশমনা (Colonizable) জনগোষ্ঠীর প্রত্যেক সদস্যকে কিভাবে নিজের মানবিক মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন ও অধিকার দাবির সাথে সাথে দায়িত্ব নেয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষ হিসাবে গড়ে তুলতে পারি, সে বিষয়ে কথা বলতে চাই। মুক্তিযুদ্ধে মাধ্যমে এ ভূখন্ডে আমরা যে নূতন মানুষ দেখতে চেয়েছি, যাকে আর উপনিবেশিত রাখা যায় না- সে নূতন মানুষকে আবারো জাগিয়ে তুলতে হবে, এ জনগোষ্ঠীর ভিতরে। সে সম্ভাবনাকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখব। 

সর্বোপরি, আমরা চাই দক্ষিণ এশিয়ায় ভূ-রাজনীতি ও সভ্যতা- সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অনন্য, তদুপরি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ভিতর দিয়ে জন্ম নেয়ার ফলে দক্ষিণ এশিয়ার মুক্তিকামী জনগোষ্ঠীর আশার বতিঘর যে বাংলাদেশ, তা যেন এর ভেতরকার রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর ঐতিহাসিক উলম্ফনের পথ তৈরি করে দেয়। যাতে, দক্ষিণ এশিয়ার অপরাপর রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী ও জনগণের সাথে বৃহত্তর সংহতির পথ ধরে আমরা এ অঞ্চলে যে কোন আগ্রাসী ও সম্প্রসারণবাদী শক্তিকে প্রতিহত করতে পারি। -আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’