Image description

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরপরই প্রশাসনে এক ধরনের স্থবিরতা দেখা দেয়। দীর্ঘদিন ক্ষমতার প্রভাব ভোগ করা আওয়ামী ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তারা কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে সচিবালয়েও অনেক কর্মকর্তা কিছু দিনের জন্য চুপসে যান।

এমন পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালের ২৮ আগস্ট দুই বছরের চুক্তিতে জনপ্রশাসন সচিব পদে নিয়োগ পান মোখলেস উর রহমান। তার নিয়োগের পর প্রশাসনে নতুন করে প্রাণ ফিরে পান আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তারা। অবশ্য চারজন উপদেষ্টাও আওয়ামী কর্মকর্তাদের রক্ষায় ভূমিকা রাখেন।

প্রশাসনে খুব দ্রুতই গড়ে ওঠে একটি শক্তিশালী গোষ্ঠী—যা পরবর্তী সময়ে পরিচিতি পায় ‘মোখলেস সিন্ডিকেট’নামে। এই সিন্ডিকেট সচিবালয় ও মাঠ প্রশাসনের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি এমনকি বিশেষ দায়িত্ব বণ্টনের ক্ষেত্রেও প্রভাব বিস্তার করে।

অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক বিবেচনা ছাড়াও আর্থিক লেনদেনের ভিত্তিতেই শত শত আওয়ামী কর্মকর্তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে। ফলে, জুলাই বিপ্লবে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ প্রশাসনের ভেতরে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠার সুযোগ পায়। শুরু থেকেই এ আওয়ামী পুনর্বাসনের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তীব্র সমালোচনার মুখে মোখলেস উর রহমানকে গত ২১ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে বদলি করে সরকার।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, মোখলেস উর রহমান দায়িত্ব নেওয়ার পর মাত্র এক বছরের মধ্যে সচিব ও সিনিয়র সচিব পদে ৭২টি পোস্টিং অর্ডার করেন। এর অন্তত ২৫টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। অতিরিক্ত সচিব পদে ৩৫৮টি নিয়োগের প্রায় ৪০ শতাংশ, যুগ্ম সচিব পদে ৪৫০টির অর্ধেকেরও বেশি, উপসচিব পদে ৭১০টির ৫০ শতাংশ এবং সহকারী সচিব ও সিনিয়র সহকারী সচিব পর্যায়ের বড় অংশই আওয়ামী ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়।

একাধিক বঞ্চিত যুগ্ম সচিব আমার দেশকে জানান, তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাদের পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়েছে। আর এতদিন যারা প্রকাশ্যে আওয়ামী রাজনীতি করতেন এখনো তারা পদোন্নতি পাচ্ছেন।

অনেক ক্ষেত্রেই কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।

প্রশাসনের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা জেলা প্রশাসক নিয়োগ ঘিরে। অভিযোগ ওঠে, একজন ডিসি পদে বসতে হলে ৫ থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুস দিতে হয়েছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি তদন্তে তিন উপদেষ্টার নেতৃত্বে কমিটিও হয়। কিন্তু তদন্তের ফল এখনো জানা যায়নি। ওই কেলেংকারির ঘটনায় জনপ্রশাসনের তৎকালীন সংশ্লিষ্ট যুগ্ম সচিবের কক্ষ থেকে ঘুসের চেক উদ্ধার করা হয়।

একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ বা বিতর্কিত কর্মকর্তাদের ডিসি করা হয়েছিল, যাতে মাঠ প্রশাসন তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাধ্য হয়ে ৯ জেলার ডিসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করে। পরবর্তী সময়ে বিতর্কিত এসব কর্মকর্তাকে নিরাপদে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়।

এই সিন্ডিকেটের প্রধান ছিলেন মোখলেস উর রহমান নিজেই। তাকে ঘিরেই সক্রিয় ছিলেন— যুগ্ম সচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও কে এম আলী আজম। বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেন। এর মধ্যে কেএম আলী আজম নাটের গুরু। মোখলেস সিন্ডিকেট সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি তৈরি করে। এই কর্মকর্তারা মিলে জনপ্রশাসনের নিয়োগ, পদোন্নতি ও পোস্টিংয়ে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ করতেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মোখলেস সিন্ডিকেটের সবার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি এই সিন্ডিকেটকে অর্থ দিয়ে যারা বিভিন্ন জায়গায় বদলি হয়েছেন তাদের বিষয়েও খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে শিগগির প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া হবে।

সূত্রমতে, জিয়াউদ্দিন ও মোখলেস আগে থেকেই ঘনিষ্ঠ। কারণ তাদের গ্রামের বাড়ি পাশাপাশি জেলায়। আলী আজমের সঙ্গেও জিয়াউদ্দিনের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। হাসিনার পতনের পর ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট জিয়াউদ্দিনকে সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এরপর ১৮ আগস্ট আরেক দফা পদোন্নতি দিয়ে তাকে করা হয় যুগ্ম সচিব।

বৈষম্যের শিকার হওয়া কর্মকর্তাদের দাবি, যুগ্মসচিব আলী আজমের নীল নকশাতেই আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টদের টাকার বিনিময়ে ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসব অভিযোগে আলী আজমকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে সিলেটে বদলি করা হয়। কিন্তু কিছুদিন পর তিনি ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে চলে আসেন। বর্তমানে রয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ে। জিয়াউদ্দিন রয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।

নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মোখলেস সিন্ডিকেটের অন্যতম কাণ্ডারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ-পদায়ন প্রেষণ উইংয়ের যুগ্মসচিব। সাবেক জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস আর এপিডি (এ্যাপয়ন্টমেন্ট, পোস্টিং, ডেপুটেশন) এরফানুল হক তার কথায় উঠবস করতেন।

অভিযোগ রয়েছে, যুগ্মসচিব আলী আজম পরিকল্পিতভাবে ২০তম ব্যাচের বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত অফিসারদের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে দূরে রাখার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী তৎকালীন গণপূর্ত সচিব খন্দকার শওকতের পিএস ছিলেন তিনি। তৎকালীন সচিবের সঙ্গে ২০ কোটি টাকার লেনদেনের বিষয়ে মনোমালিন্যের জেরে তাকে বদলি করে দেওয়া হয়। বিভাগীয় মামলা করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা থেকে রেহাই পান। কিন্তু ওই ঘটনার পর তার আর প্রমোশন হয়নি। ২০১১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ২৫ বার সরকারি সফরে বিদেশ ভ্রমণ করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ে রয়েছেন।

মোখলেস সিন্ডিকেটের গুরুত্বপূর্ণ আরেক সদস্য জিয়াউদ্দিন ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তা। বহুল আলোচিত ডিসি নিয়োগে অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় গত বছর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে থাকা তার রুম থেকে তিন কোটি টাকার চেক উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি এখন একাধিক সংস্থা খতিয়ে দেখছে। বুয়েটে পড়া অবস্থায় ছাত্র ফেডারেশনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা পালনকারী জুনায়েদ সাকি সে সময় ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। আওয়ামী আমলে ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ঘুরেফিরে ঢাকায় পোস্টিং ছিল এই কর্মকর্তার। ওই আমলে আচরণগত সমস্যার কারণে তার প্রমোশন হয়নি বলে জানা গেছে। তবে তার মা বিএনপির এমপি ছিলেন তাই এতদিন তাকে পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়েছে দাবি করে ৫ আগস্টের পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন। ২০১০ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২৪ বার আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি টাকায় তিনি বিদেশ ভ্রমণ করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তা বদিউল আলম জুলাই আন্দোলন চলাকালে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ছিলেন। আন্দোলন দমাতে ছোড়া গুলিতে প্রাণহানির ঘটনায় এই কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে সে সময় তীব্র সমালোচনা তৈরি হয়। বিতর্কিত ওই ভূমিকার কারণে শাস্তির আওতায় আনার কথা থাকলেও বিস্ময়করভাবে এই কর্মকর্তাকে চট্টগ্রামের উপভূমি সংস্কার কমিশনারের কার্যালয়ে পোস্টিং দেওয়া হয়।

২৭তম ব্যাচের নূর কুতুবুল আলম সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পিএস ছিলেন। ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে পটুয়াখালীর ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পোস্টিং দেওয়া হয় তাকে। তীব্র সমালোচনার মুখে সেই পোস্টিং বাতিল করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সচিব হিসেবে পাঠানো হয় তাকে।

গাজী তারিক সালমানকে গত ২৩ জুলাই গুরুত্বপূর্ণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পোস্টিং দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের শাসনামলে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি আঁকার ঘটনায় আলোচনায় আসেন তিনি। সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির নাতি এই কর্মকর্তা। ‘বাংলা পেলাম’ এবং ‘এক যে ছিল স্বাধীনতা নামে’ শেখ মুজিবের বন্দনায় কবিতা লিখে হন সমালোচিত। আবু নঈম মুহাম্মদ মারুফ খান ২৪তম ব্যাচের কর্মকর্তা। আলোচিত ডিসি বদিউল আলমের আগে নরসিংদী জেলার ডিসি ছিলেন। শেখ হাসিনার সাবেক মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার পিএস ছিলেন এই কর্মকর্তা। এখন তাকে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ান হাসানের পিএস হিসেবে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। বহাল রয়েছেন সেখানে।

যুগ্মসচিব আতাউর রহমান খান আওয়ামী আমলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে ছিলেন। ১৭তম ব্যাচের এই কর্মকর্তা নিয়মিত পদোন্নতি পেয়েছেন। ৫ আগস্টের পর তাকে গুরুত্বপূর্ণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়।

২০তম ব্যাচের ফিরোজ উদ্দিন খলিফা আওয়ামী লীগের সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুগ্মসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা উইংয়ে। যুগ্মসচিব ফরিদীর আপন ভায়রা তিনি। বর্তমানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় রয়েছেন।

আনোয়ারুজ্জামান হাসিনার শাসনামলে মুজিবের ৭ মার্চের ছবি দিয়ে রাখতেন ফেসবুক প্রোফাইলে। ছিলেন সিলেটের এডিসি। গত ১৫ জুলাই জনপ্রশান মন্ত্রণালয়ে তাকে পদায়ন করা হয়। মুজিবভক্ত এই কর্মকর্তার বিভিন্ন কীর্তি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শেষ পর্যন্ত তাকে হবিগঞ্জে পোস্টিং দেওয়া হয়।

৩০তম ব্যাচের বারিউল করিম খান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ নিয়োগ শাখায় রয়েছেন। হাসিনার সময়ে তৎকালীন জনপ্রশাসন সচিব মেজবাহ উদ্দিনের পিএস ছিলেন উপসচিব পদমর্যাদার এই কর্মকর্তা।

মুর্তজা আল মুইদের বাবা আওয়ামী লীগের নেতা। তিনি নিজে ছাত্রজীবনে করতেন ছাত্রলীগ। ৩১তম ব্যাচের এই কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা-৫ শাখায় কর্মরত ছিলেন। সেখানে বহুল আলোচিত মোখলেস উর রহমানের সময়কার ডিসি পদায়নের ফিট লিস্ট টাইপ করেন এই কর্মকর্তা। হাসিনার সময়ে স্পেশাল ব্রাঞ্চ এসবির সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলামের স্ত্রী শায়লা ফারজানার সঙ্গে দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করার কারণে তাদের মধ্যে এক ধরনের ঘনিষ্ঠতা ছিল। ৫ আগস্টের পর শায়লা ফারজানাকে মন্ত্রণালয় থেকে যখন

উত্তেজিত কর্মকর্তারা বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন তখন তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসেন এই মুইদ।

এদিকে যুগ্মসচিব জিয়াউদ্দিন এবং আলী আজমও ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগী ও দোসর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে পদায়ন করেছেন। তারা মূলত সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া তানভীরের প্রভাব কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করেছেন। এর মধ্যে ৪০০ কোটি টাকা কমিশন বাণিজ্যের সংবাদ প্রকাশিত হলে তানভীরকে সমন্বয়কের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

যুগ্ম সচিব কাজী মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে পদায়ন করা হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-৪ অধিশাখায়। আওয়ামী আমলে তিনি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা অধিশাখায়। গত বছরের ৬ আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তা যুগ্মসচিব রিপন চাকমা আওয়ামী লীগ শাসনামলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রভাবশালী কর্মকর্তা ছিলেন। বর্তমানে তাকে রাখা হয়েছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মোখলেস সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পুনর্বাসিত কর্মকর্তারা কেবল তাদের পদ রক্ষা করেননি, বরং ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে যুক্ত হওয়ার মতো শক্তি অর্জন করেছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর যে প্রশাসনিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা ছিল, তা ভেস্তে যাচ্ছে তাদের কারণে। ফলে প্রশাসনে নতুন করে সংকট তৈরি হতে পারে।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবং সাবেক সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার আমার দেশকে বলেন, মোখলেস সিন্ডিকেটের সময়ে প্রশাসন সঠিকভাবে চলছিল না। এক ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা গিয়েছিল। নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগও ওঠে এ সময়। সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি রয়েছে, তদন্ত করে অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কারণ কেউই জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়।