Image description
 

আরব রাষ্ট্রগুলো প্রকাশ্যে ইসরাইলের বিরোধিতা করলেও, পর্দার আড়ালে এক ভিন্ন কৌশলগত খেলা চলছে। এবার মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) বিশ্বাসঘাতকতার বড় নজির প্রকাশ্যে এসেছে। দেশটির আঞ্চলিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং ইসরাইলের সঙ্গে গভীরতর কৌশলগত সম্পর্কের আভাস দিচ্ছে নতুনভাবে নির্মিত রানওয়ে ও বন্দরগুলো।

 

গণমাধ্যম মিডল ইস্ট আই স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে। ভারত মহাসাগরের সুকটরা (Socotra) দ্বীপপুঞ্জ থেকে শুরু করে সোমালিয়া এবং ইয়েমেনের উপকূল পর্যন্ত ইউএই-এর নির্মিত সামরিক ও গোয়েন্দা ঘাঁটিগুলোর এক বিশাল সম্প্রসারিত নেটওয়ার্ক প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

ইরানের বিরুদ্ধে কৌশলগত অবস্থান
ইরানের অতি নিকটবর্তী আরব আমিরাতের এমন কাজের পেছনের মূল উদ্দেশ্য যে আয়াতুল্লাহ খামেনির বাহিনীকে আটকানো, তা ক্রমশ পরিষ্কার হয়ে উঠছে। বিশ্বের ব্যস্ততম শিপিং লেনগুলোর মধ্যে অন্যতম এই নিয়ন্ত্রণ বলয়ের পরিধি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

এই ঘাঁটিগুলোর নির্মাণ এবং সম্প্রসারণে ইউএই-এর অংশীদার হলো ইসরাইল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য সহযোগী দেশ।

 

ইসরাইলি উপস্থিতি: এই দ্বীপগুলোতে ইসরাইলি কর্মকর্তারা অবস্থান করছেন।

সামরিক সহযোগিতা: ইসরাইলি রাডার ব্যবস্থা এবং অন্যান্য সামরিক নিরাপত্তা সরঞ্জামের মাধ্যমে ইউএই, ইয়েমেনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলা থেকে রক্ষা করতে তেলাবিবকে সাহায্য করছে।

ইসরাইলি কূটনীতিকরা মিডল ইস্ট আইকে বলেছেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের আগেও আমিরাত এবং ইসরাইলের মধ্যকার সম্পর্ক খুব উন্নত ছিল, যদিও তা নীরবতা এবং গোপনে মোড়া ছিল।

কৌশলগত অংশীদারিত্বের গভীরতা
ইসরাইলপন্থী মার্কিন থিংক ট্যাংক ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসি বলেছে, বহুপাক্ষিক বিমান প্রতিরক্ষা জোটগুলো অক্টোবর ৭-এর পরের মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরক্ষা ল্যান্ডস্কেপের মূল বিষয় হয়ে উঠেছে। এই জোটগুলোতে দেশগুলো তাদের রাডার, গোয়েন্দা এবং প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা ভাগ করে নিচ্ছে।

এই নেটওয়ার্কের বিকাশ ইউএই এবং ইসরাইলের মধ্যে গভীর হওয়া কৌশলগত নিরাপত্তা অংশীদারিত্বের সঙ্গে যুক্ত। এই অংশীদারিত্ব ২০২০ সালের আব্রাহাম অ্যাকর্ডস (Abraham Accords)-এর মধ্য দিয়ে পূর্ণতা পেয়েছে।

সুকটরা দ্বীপপুঞ্জের সামরিক সম্প্রসারণ
আবদ আল কুরি দ্বীপের পাশাপাশি আরব সাগরের গভীরে থাকা সুকটরার তিনটি জনবসতিপূর্ণ দ্বীপের মধ্যে সবচেয়ে ছোট সামহা দ্বীপেও দ্রুতগতিতে কাজ চলছে।

এয়ার স্ট্রিপ নির্মাণ: স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে দ্বীপটিতে একটি এয়ার স্ট্রিপ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। উপসাগরীয় অঞ্চল এবং আরব সাগরের মধ্যকার সমুদ্রপথ পর্যবেক্ষণের জন্য দ্বীপটির অবস্থান আদর্শ, যে পথ দিয়ে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের প্রায় ১২ শতাংশ চলাচল করে।

অস্থায়ী বালির বাঁধ: ২০২৫ সালের ২৫ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিলের মধ্যে সামহার পশ্চিম দিকে একটি অস্থায়ী বালির বাঁধের উপস্থিতিও দেখেছে মিডল ইস্ট আই। ধারণা করা হচ্ছে, এই ছোট বালির বাঁধটি অস্থায়ী সামুদ্রিক নিষ্কাশনের জন্য তৈরি হয়েছে, যা বিচ্ছিন্ন সামরিক নির্মাণ প্রকল্পের একটি সাধারণ প্রবণতা।