
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙুলের ছাপ না মিললে জাতীয় পরিচয়পত্রের ( এনআইডি ) সেবা পেতে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয় । এ পরিস্থিতিতে নাগরিকেরা নির্বাচন কমিশনের ( ইসি ) দ্বারস্থ হচ্ছেন । কেউ কেউ ইসিতে নতুন করে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করছেন ।
যাঁদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট কোনোভাবেই আর নেওয়া যাচ্ছে না, তাঁদের ইসি থেকে প্রত্যয়নপত্র বা এনওসি দেওয়া হয় । যা দেখিয়ে তাঁরা কাঙ্ক্ষিত সেবা নিতে পারেন । জানা যায় , ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে দেশবাসী মোবাইল ফোনের সিম কেনা, পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স করা ও বিদেশে যাতায়াত করতে পারেন । কিন্তু ইসির সার্ভারে ফিঙ্গারপ্রিন্ট আপলোড না হওয়ায় অনেককে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে । এ ছাড়া বয়স বৃদ্ধি , রোগাক্রান্ত হওয়া ও হাত দিয়ে ভারী কাজ করেন— এমন পেশার লোকেরা ফিঙ্গারপ্রিন্ট না মেলার সংকটের মুখোমুখি হচ্ছেন ।
ইসির কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে , ফিঙ্গারপ্রিন্ট সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন কেউ না কেউ ইসিতে আসছেন । এদের বেশির ভাগ বয়স্ক । তবে এ সংকটে পড়া তরুণের সংখ্যাও কম নয় । সম্প্রতি আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় প্রত্যয়নপত্র নিতে গুলশান এলাকা থেকে আসা বিলকিস আরার সঙ্গে । ষাটোর্ধ্ব বিলকিস আরা আজকের পত্রিকাকে বলেন , হাতের আঙুলের ছাপ মিলছে না । তারপর অনেক প্রক্রিয়া । নির্বাচন কমিশনে এসে আবার আঙুলের ছাপ দেওয়ার চেষ্টা করেছি ।। কিন্তু মেশিনে ছাপ নেয়নি । তাই প্রত্যয়নপত্র নিতে এসেছি । যেহেতু আঙুলের ছাপ পাওয়া যাচ্ছে না । তাই এটি দিয়েই এখন কাজ করতে হবে । ’
সম্প্রতি একই ধরনের সেবা নিতে আসেন ফরিদপুরের আশিকুজ্জামান ( ৩৭ ) । তিনিও মোবাইল ফোনের সিম কিনতে গিয়ে জানতে পারেন । তাঁর আঙুলের ছাপ কাজ করছে না । পরে তিনি নির্বাচন কমিশনে যোগাযোগ করে নতুন করে আঙুলের ছাপ দেন । পুনরায় আঙুলের ছাপ দিতে বেগ পেতে হয়েছে জানিয়ে আশিকুজ্জামান বলেন , হাত ধুয়ে , স্যানিটাইজ করে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লেগেছে পুনরায় আঙুলের ছাপ দিতে । সম্প্রতি ইসি থেকে প্রত্যয়নপত্র নেন প্রায় ৮৫ বছর বয়সী হামিদা নূর চৌধুরী । ইসি থেকে তাঁকে দেওয়া প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে , চর্মরোগ ও বয়স বৃদ্ধিজনিত কারণে আঙুলের ছাপ নিম্নমানের । তাই একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁর আঙুলের ছাপ আপডেট করা সম্ভব হয়নি । ডেটাবেইসে সংশ্লিষ্ট ভোটারের এনআইডি নম্বরটি সঠিক এবং সচল রয়েছে ।
ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান , পুনরায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট না নিতে পারায় ইসি থেকে চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত কমবেশি ৮০০ জনকে প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়েছে । নির্বাচন কমিশনের বৈধ ও সঠিকতা যাচাইকরণ শাখা থেকে এ প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয় । এই সময়ে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এসে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি দিয়েছেন কমবেশি ১১ হাজার ৭০০ জন । আঙুলের ছাপ না মেলার কারণে অনেকের সেবা না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর আজকের পত্রিকাকে বলেন , কারও আঙুলের ছাপ না মিললে তাঁকে পুনরায় তা দিতে হবে । কোনো কারণে যদি তাঁর আঙুলের ছাপ না নেওয়া যায় , তখন তাঁকে প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয় । যাতে তিনি এ - সংক্রান্ত সেবা থেকে বঞ্চিত না হন ৷