Image description

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে রেললাইন পার হওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা প্রায় ১০০ ফুট দূরে গিয়ে পড়েছে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও দুজন।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর ১টা দিকে পৌরসভার মৌলভীপাড়া এলাকায় রেললাইনে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত মসুদা আক্তার (৫০) ও সানজিদা আক্তার চুমকি (২৮) সম্পর্কে মা-মেয়ে। আহত বদিউল আলম ও তার নাতি সাফওয়ান চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তারা পৌর সদরের মৌলভীপাড়ার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

‎স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বদিউল আলম তার পরিবার নিয়ে মেয়ের নানা শ্বশুর মারা যাওয়ার সংবাদে মুরাদপুর ইউনিয়নের গুপ্তাখালীতে জানাজায় অংশগ্রহণ করতে যায়। ‎তার সঙ্গে ছিল স্ত্রী, মেয়ে, ছেলে ও নাতি। জানাজা শেষে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে বাড়ি ফেরার পথে নিহতের বাড়ির সামনেই রেললাইন পার হতে গিয়ে রেললাইনের উপরে হঠাৎ সিএনজিচালিত অটোরিকশার ইঞ্জিন বিকল হয়ে বন্ধ হয়ে যায়। অনেক ধাক্কাধাক্কি করার পরও সিএনজিটি ওঠাতে পারেনি।

এ সময় রেললাইন দিয়ে ঢাকামুখী মহানগর এক্সপ্রেস আসছিল। এই বুঝে সিএনজির চালক গাড়ি থেকে নেমে যায়। ওই সময় ট্রেন কাছাকাছি চলে আসাতে বদিউল আলম ও তার ছেলে হাসান অটোরিকশা থেকে তড়িঘড়ি করে নেমে গিয়ে গাড়িটিকে ধাক্কা দিয়ে রেললাইন থেকে তোলার চেষ্টা করেন। তখন অটোরিকশার মধ্যে বসা ছিল বদিউল আলমের স্ত্রী মসুদা আক্তার, মেয়ে সানজিদা আক্তার চুমকি (২৮) ও এক বছরের নাতি সাফোয়ান। এক পর্যায়ে মহানগরে এক্সপ্রেস ট্রেনটি সিএনজিটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে সিএনজিটি প্রায় ১০০ ফুট দূরে রেললাইনের বাইরে গিয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনাস্থলে মাসুদা আক্তারের রক্তাক্ত বোরকা পরে থাকতে দেখা যায়।

শিমুল নামের স্থানীয় এক যুবক বলেন, দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে এসে দেখি দুর্ঘটনার স্থান থেকে প্রায় ১০০ ফুট দূরে রেললাইনের পশ্চিম পাশে একজন নারী ও পূর্ব পাশে আরেকজন পড়ে আছে। আর দুই রেললাইনের মাঝখানে পড়ে ছিল বাকি দুজন। তাৎক্ষণিক তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বাকি বদি আলম ও তার নাতি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

এ বিষয়ে রেলওয়ে পুলিশ আশরাফ সিদ্দিকী কালবেলাকে বলেন, দুর্ঘটনা খবর পেয়ে রেল পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু ওই সময় ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়দের তথ্য বরাতে দুপুর ১টার দিকে দুর্ঘটনা ঘটে। ওই সময় মহানগর এক্সপ্রেস যাওয়ার সময়। ধারণা করা হচ্ছে, মহানগর এক্সপ্রেসের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে; কিন্তু মারা যাওয়ার বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হয়নি।