
চুয়াডাঙ্গার সীমান্ত ও শিল্পনগরী খ্যাত দর্শনা হল্ট স্টেশনে অবশেষে ঢাকাগামী সুন্দরবন আপ এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজ বাস্তবায়ন হয়েছে। গতরাত ১২টা ১২ মিনিটে প্রথমবারের মতো ট্রেনটি থামলে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন দর্শনাবাসী। সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বিরতির প্রথম দিনে দর্শনা স্টেশনের জন্য ১৫টি টিকিট বরাদ্দ থাকলেও অর্ধশত যাত্রী বিভিন্ন স্টেশন থেকে বরাদ্দকৃত ট্রেনের টিকিট কেটে দর্শনা স্টেশন থেকে রওনা দেয়।
দীর্ঘদিনের আন্দোলন ও দাবির প্রেক্ষিতে অর্জিত এ সফলতার সাক্ষী হতে সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন বয়সী মানুষ জড়ো হতে থাকেন স্টেশনে। রাত জেগে স্টেশন প্রাঙ্গণ আলোকসজ্জায় সাজানো হয়। ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে দর্শনার মানুষের জন্য খাবারের আয়োজনও করা হয়।
গভীর রাতে ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করলে আন্দোলনকারীরা স্লোগান দিয়ে চালক, পরিচালকসহ স্টাফদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় এবং হাতে খাবার তুলে দেয়। আগত যাত্রীদেরও ফুল ও খাবার দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
সুন্দরবন এক্সপ্রেসের এ স্টপেজ পেতে দর্শনাবাসীকে দীর্ঘ আন্দোলনের পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। বারবার দাবি জানানো হলেও রাজনৈতিক অনীহা ও প্রশাসনিক জটিলতায় তা বাস্তবায়ন হয়নি। শেষ পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে তীব্র আন্দোলন শুরু হলে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ গত মাসে সিদ্ধান্ত দেয়। গত রাতের প্রথম স্টপেজের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত রূপ পায়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আজিজুর রহমান, জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, দর্শনা পৌর বিএনপির হাবিবুর রহমান বুলেট, চুয়াডাঙ্গা জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক তানভির রহমান অনিক, জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুল খালেক, দর্শনা পৌর বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান বুলেট, সমন্বয়ক মুকুল শাহ, সমন্বয়ক মশিউর রহমান, সমন্বয়ক ইকবাল হোসেন, জামায়াতের দর্শনা পৌর যুব বিভাগের সভাপতি তানজিল হোসেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের দর্শনা থানা সভাপতি লোকমান হোসেন, জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, দর্শনা ডি এস মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোল্লা শফি উদ্দিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তৌহিদ হোসেন, আবিদ হাসান রিফাত, থানা যুবদলের সভাপতি জালাল উদ্দীন লিটন, যুগ্ম-আহবায়ক সরোয়ার হোসেন, ছাত্রদলের কলেজ শাখার পলাশ আহাম্মেদ, সহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন নেতা।
প্রথম দিনে দর্শনা থেকে মাত্র ১৫টি টিকিট বরাদ্দ থাকলেও অর্ধশতাধিক যাত্রী বিভিন্ন স্টেশন থেকে টিকিট সংগ্রহ করে ট্রেনে যাত্রা করেন। বক্তারা বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানান।
সভায় নেতারা বলেন, এই সাফল্য দর্শনাবাসীর ঐক্য ও সংগ্রামের ফসল। তারা ভবিষ্যতে দর্শনা উপজেলা বাস্তবায়নেও সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। প্রায় ১০ মিনিট অবস্থান শেষে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।