Image description
 

রাজধানীর হাইকোর্ট মাজার চৌরাস্তায় পুলিশের সাথে 'সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা' নামের একটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা পুলিশের দিকে ইট -পাটকেল, জুতা নিক্ষেপ করতে থাকলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ জলকামান এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে সংগঠনের কয়েকজন সদস্য ও একজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।বৃহস্পতিবার পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে এ সংঘর্ষ হয়।

এর আগে সংগঠনের নেতাকর্মীরা টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ করে। সমাবেশে সংগঠনের মুখপাত্র অঙ্কুর চাকমা সহ কয়েকজন বক্তব্য দেন। সমাবেশ শেষে মিছিল সহকারে তারা সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিকে যাওয়ার জন্য যাত্রা শুরু করে। দোয়েল চত্বর পার হয়ে হাইকোর্ট মাজার চৌরাস্তা এলাকায় আসলে ডিএমপির রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম ওই সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেন। সচিবালয় এলাকায় সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ থাকায় মিছিল নিয়ে সচিবালের দিকে না যাওয়ার অনুরোধ জানান ডিসি রমনা। তাদের ২/৩ জনের একটি প্রতিনিধি দলকে সচিবালয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি।

এই প্রস্তাবে রাজি না হয়ে এক পর্যায়ে নেতাকর্মীরা সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার রাস্তার মুখে পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেড ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করে। উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা প্রথমে বাসি হুইসেল দিয়ে নেতাকর্মীদের ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু একটু পিছু হতে নেতাকর্মীরা পুলিশের দিকে ইট পাটকেলও জুতা নিক্ষেপ করতে থাকলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এক পর্যায়ে পুলিশ জল কামান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে সংগঠনের নেতা কর্মীরা কিছু করতে বাধ্য হয়।

সংঘর্ষ শুরু হলে আশেপাশের পথচারীরা এদিক-ওদিক ছুটাছুটি শুরু করে। ওই এলাকার সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

রমনা ডিসি মাসুদ আলম জানান, সচিবালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকায় সেখানে যেতে নিষেধ করলেও তারা শুনেনি। পরে আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি। ওই সংগঠনের ইট পাটকেলের আঘাতে একজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

বুধবার দুপুরে মতিঝিলের এনসিটিবির সামনে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা নামের সংগঠনটি সচিবালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করে।

জানা গেছে, নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত একটি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছিল। সেখানে একটি গাছের পাঁচটি পাতায় লেখা ছিল মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ও আদিবাসী; পাশে লেখা ছিল ‘পাতা ছেঁড়া নিষেধ’। গত ১২ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ ব্যানারে এনসিটিবি ঘেরাও করার পর রাতে ওই বইয়ের অনলাইন সংস্করণ থেকে চিত্রকর্মটি সরিয়ে ফেলা হয়।

এর প্রতিবাদে বুধবার বেলা ১১টায় পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’ নামে শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। একই সময়ে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’ও কর্মসূচি ঘোষণা দেয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।