Image description

চাকরির জন্য দেওয়া টাকা ফেরত চেয়ে রংপুরের পীরগঞ্জে আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মণ্ডলের বাড়িতে অনশন করেছেন একদল যুবক। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ওই নেতার স্ত্রীর দেওয়া দুই মাসের আশ্বাসে তারা সেখান থেকে চলে যান।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত উপজেলার পৌর শহরের ওসমানপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নূর মোহাম্মদ মণ্ডল উপজেলা চেয়ারম্যান থাকায় নিজের পছন্দের লোকজনকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমিটিতে বসান।

 
এরপর বিদ্যালয়গুলোতে নৈশপ্রহরী নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হলে তিনি চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে অসংখ্য লোকের কাছে ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত টাকা নেন। কিন্তু উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞায় সেই নিয়োগ আটকে যায়।

এদিকে নিয়োগ কার্যক্রম আটকে গেলে আওয়ামীপন্থী স্থানীয় প্রভাবশালীদের টাকা ফেরত দেন তিনি। আবার দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সময়ক্ষেপণ করেও অনেকের টাকা ফেরত দেননি।

কিন্তু জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হলে উপজেলা পরিষদেরও বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। তিনি পালিয়ে বেড়ান। তার কোনো খোঁজই পাচ্ছিলেন না পাওনাদাররা।

এদিকে সোমবার সকালে পীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ২০-২৫ জন চাকরিপ্রত্যাশী তার পীরগঞ্জ পৌর শহরের ওসমানপুর এলাকার বাড়িতে অবস্থান নেন।

 
দুপুর ১২টার দিকে নূর মোহাম্মদ মণ্ডলের বাসা থেকে জানানো হয়, তিনি বাসায় নেই। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন পাওনাদাররা। এ সময় টাকা না দিলে বাড়ির সামনেই বিষপান করে আত্মহত্যা করার হুমকি দেন। 

এক পর্যায়ে তারা তার বাসার ভেতর প্রবেশ করে অনশনে বসেন। বিব্রত হয়ে ওঠেন বাসার লোকজন।

পরে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে অনশনরত যুবকদের সঙ্গে কথা বলে থানায় অভিযোগ দিতে বলেন। এ সময় দুই মাসের সময় চান নূর মোহাম্মদ মণ্ডলের স্ত্রী লাইলী বেগম। পরে তারা ৩টার দিকে চলে যান।

ঘটনাস্থলে থাকা মিলন জানান, নূর মোহাম্মদ মণ্ডলের স্ত্রী লাইলী বেগম পাওনাদারদের বলেন, ‘অনেকজনকে টাকা ফের দেওয়া হয়েছে। আমরা বিপদে আছি। যারা টাকা পান দুই মাস পর প্রমাণ নিয়ে আসবেন, যাচাই-বাছাই কারার পর টাকা দেওয়া হবে। পরে তারা চলে যান। কিন্তু থানায় অভিযোগ দেননি।’

সেখানে থাকা শামসুল হক জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরীর সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা বলে তার কাছে সাড়ে ৮ লাখ টাকা নিয়েছেন নূর মোহাম্মদ মণ্ডল। কিন্তু চাকরি দেননি, এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না। অনেকবার টাকা চেয়েও নানাভাবে হুমকি দিয়েছেন। আমাদের সব শেষ, চাকরিও নাই টাকাও নাই। এখন মৃত্যুর মুখে আছি।

পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি জানার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। অভিযোগকারীদের থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।