
বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে শিশুদের নিয়মিত ইপিআই টিকার সরবরাহে সমস্যা দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও একেবারেই টিকা মজুদ নেই, আবার কোথাও কিছুটা দেরিতে পৌঁছেছে। ফলে টিকা দেওয়ার কাজ আংশিকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই)–এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক এ এফ এম সাহাবুদ্দিন অবশ্য দাবি করেছেন, আসলে কোনো ঘাটতি নেই। তাঁর ভাষায়, সব টিকা একসঙ্গে দেশে না আসায় জেলায় পৌঁছাতে কিছুটা সময় লেগে যায়। তবে বাচ্চারা শেষ পর্যন্ত টিকা থেকে বাদ পড়ে না।
মুন্সিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. এ টি এম ওবায়দুল্লাহ জানিয়েছেন, সামান্য সময়ের জন্য ঘাটতি দেখা দিলেও এখন জেলায় কোনো সংকট নেই। তবে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. নূর আলম দীন স্বীকার করেছেন, পেন্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন গত এক মাস ধরে একেবারেই নেই। তিনি আশা করছেন আগামী মাসেই সরবরাহ ঠিক হয়ে যাবে।
মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. খুরশীদ আলম জানিয়েছেন, ওপিভি, পেন্টা, পিসিভি আর আইপিভি টিকা জেলায় প্রায় এক মাস ধরে নেই। যদিও উপজেলা পর্যায়ে আগের মজুত দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মামুনুর রহমান আবার বলেছেন, সম্প্রতি নতুন সরবরাহ এসে পড়ায় সেখানকার সংকট কেটে গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আবু হোসাইন মইনুল আহসান জানান, আগে বিনামূল্যে টিকা পাওয়া গেলেও এখন বাংলাদেশকে কিনতে হয়। টেন্ডার ও সরবরাহ প্রক্রিয়ায় সময় লাগায় দেরি হয়, তবে অভাব দীর্ঘস্থায়ী নয়। তাঁর ভাষায়, “কোনো জেলা সংকট জানালেই আমরা পাঠিয়ে দিই।”
বাংলাদেশে বছরে গড়ে প্রায় ৪০ লাখ শিশুকে এই কর্মসূচির আওতায় টিকা দেওয়া হয়। এর ফলে যক্ষা, হাম, ধনুষ্টংকার, ডিফথেরিয়া বা নিউমোনিয়ার মতো মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ সম্ভব হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, সাময়িক জটিলতা থাকলেও শিশুরা টিকার বাইরে থাকবে না, শিগগিরই সব জেলায় স্বাভাবিক সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।