
বাগেরহাটে ৪টি আসন বহালের দাবিতে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালিত হচ্ছে জেলাজুড়ে। আবার মানিকছড়ি-গুইমারা সীমান্তবর্তী তবলাপাড়ায় গ্রামবাসীর ওপর গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে ইউপিডিএফ সমর্থিত তিনটি পাহাড়ি সংগঠন ঢাকা-খাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কে আধাবেলা সড়ক অবরোধের ডাকে চরম জন ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে বাগেরহাট শহরের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, দশানীর মোড়, খান জাহান আলী মাজার মোড়, মুনিগঞ্জ সেতু ও দরটানা টোলপ্লাজা ঘুরে দেখা গেছে যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে, অথচ কোনো বাস আসছে না। দোকানপাটও বেশিরভাগই বন্ধ ছিল ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতেও ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেকে।
এদিকে হরতালের কারণে শহরের প্রধান সড়কগুলোতে স্বাভাবিক পরিবহন না থাকায় মানুষকে ইজিবাইক, রিকশা ও ভ্যানে দ্বিগুণ ভাড়া গুনে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। সাধারণ চালকরা বলছেন, সড়কে গাড়ি না থাকায় ছোট ছোট যানবাহনের ওপর চাপ বেড়েছে।
যাত্রী রফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সকালে অফিসে যাবো বলে বের হয়েছি। কিন্তু কোনো বাস নেই। ইজিবাইকে সাধারণত ২০ টাকা ভাড়া হলেও আজ দিতে হলো ৫০ টাকা। প্রতিদিনই যদি এভাবে বাড়তি খরচ হয়, তাহলে চলা কঠিন হয়ে যাবে।
হকার শেখ হৃদয় আহমেদ বলেন, হরতালের কারণে সকাল থেকে আমরা রাস্তায় বসতে পারছি না। দোকানপাট বন্ধ মানুষের চলাফেরাও কমে গেছে। এতে আমাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পরিবার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে।
রিকশাচালক মো. কুদ্দুস বলেন, আজ রাস্তায় ভাড়া বেশি দিতে হচ্ছে। আমাদেরও ঝুঁকি আছে তবুও মানুষ না নামলে তারা কীভাবে যাবে?
এদিকে বাগেরহাট শহরের গুরুত্বপূর্ণস্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা নির্বাচন অফিস ও জজ আদালতের সামনে কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা লক্ষ করা গেছে।
অন্যদিকে মানিকছড়ি-গুইমারা সীমান্তবর্তী তবলাপাড়ায় গ্রামবাসীর ওপর গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে ইউপিডিএফ সমর্থিত তিনটি পাহাড়ি সংগঠন ঢাকা-খাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কে আধাবেলা সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছে। সংগঠনগুলো হলো—পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও নারী আত্মরক্ষা কমিটি।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের দপ্তর সম্পাদক স্বপন চাকমা স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, অবরোধ চলাকালে অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি বিদ্যুৎ ও ওষুধ সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত গাড়ি, সংবাদপত্র ও সাংবাদিক বহনকারী গাড়ি অবরোধের আওতামুক্ত থাকবে বলে জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার সময় মানিকছড়ি-গুইমারা সীমান্তবর্তী তবলাপাড়ায় গ্রামবাসীর ওপর গুলিবর্ষণ করে ৬ জন সন্ত্রাসী। স্থানীয় জনতা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করে তাদের। ওই ঘটনার পর থেকে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে আসছে বিভিন্ন সংগঠন। সবশেষ গেল সোমবার ওই ছয় সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেয় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন।
শীর্ষনিউজ