
এ বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ভারতের ব্যবসায়ীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এক হাজার ২০০ মে টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এমন একটা সময়ে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলো যখন কিনা কম সরবরাহ ও অতিরিক্ত দামের কারণে দেশের মানুষ ইলিশের স্বাদ ভুলতে বসেছে।
আজ সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি-২ শাখা থেকে জারিকৃত এক আদেশে বলা হয়েছে- শর্তসাপেক্ষে রপ্তানির জন্য সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আগ্রহী রপ্তানিকারকদের অনুমতির জন্য আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
তবে রপ্তানির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে- প্রতি কেজি ইলিশের ন্যূনতম মূল্য ১২ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার। ১২২ টাকা করে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ধরলে টাকায় প্রতি কেজির দাম পড়ে ১৫২৫ টাকা। যেখানে দেশে ৫০০ গ্রাম ওজনের এক কেজি ইলিশ কিনতে হলে প্রায় ২ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে ভোক্তাকে। আর বড় আকারের ইলিশের দাম আরও নাগালের বাইরে। এখনো ২৮০০ সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ইলিশ।
গত বছর জুলাই আন্দোলনে আওয়ামী লীগের দেড় যুগের শাসনামলের পতন হলে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী ভারতে পালিয়ে যান। এতে করে বাংলাদেশের সঙ্গে এক ধরনের টানাপোড়েন তৈরি হয়। তখন এই দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ব্যবসায়ীরা ইলিশ চাইলে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়। তবে সরকার প্রথমদিকে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করলেও শেষমেষ ২৪০০ মে. টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি প্রদান করেছিল। এবারে সেটা আরও কমিয়ে ১২০০ মে টনে নামিয়ে আনা হলো।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে এবারে ইলিশের সরবরাহ কম। যে কারণে দেশের মানুষও পর্যাপ্ত ইলিশ পাচ্ছেন না এবং দামও বেশি। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনুমতি দেওয়ার মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে প্রতি বছরের ইলিশ রপ্তানির মাধ্যমে যে সৌহার্দ তার ধারাবাহিকতাও রক্ষা করা হয়েছে।
এদিকে যারা ইলিশ রপ্তানির আবেদন করবেন তাদের অনুমতির আবেদেনের সঙ্গে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, ইআরসি, আয়কর সার্টিফিকেট, ভ্যাট সার্টিফিকেট, বিক্রয় চুক্তিপত্র, মৎস্য অধিদপ্তরের লাইসেন্সসহ সংশ্লিষ্ট দলিলাদি দাখিল করতে হবে। ইতোমধ্যে যারা আহবান ব্যতিরেকেই আবেদন করেছেন, তাদেরকেও নতুনভাবে আবেদন দাখিল করতে হবে।