এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলমসহ তার পরিবারের নামে থাকা ৬৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তার ১৬টি স্থানের স্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। এর আগে দুদকের উপপরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা (গোয়েন্দা) সিফফাত উদ্দীন এসব সম্পদ জব্দের আবেদন করেন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। বিচারক পরে জব্দের আদেশ দেন।
১৬টি স্থাবর সম্পত্তি হলো-গুলশানের এস আলম টাওয়ার ১০ তলা ভবন, ধানমন্ডিতে এক বিঘা জমিসহ ছয়তলা ভবন, ধানমন্ডি লেক সার্কাসে ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ জমিসহ চারতলা ভবন, গুলশানের ২ হাজার ৬৫৮ বর্গফুট জমির ওপর নির্মিত ফ্ল্যাট, গুলশান-২ এর শূন্য দশমিক ৭৮৮৮ একর জমির প্লট। উত্তরা আবাসিক এলাকায় সাততলা ভবন, ভাটারা থানা এলাকায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ১০৩ দশমিক ৩ কাঠা জমির প্লট, ১ দশমিক ৭ হাজার ২০০ একর জমি, ৯৬ কাঠা জমি, ১ দশমিক ৯ হাজার ৫৩৬ একর জমি, ১১ দশমিক ১ হাজার ৬১ বিঘা জমি এবং ১৩১ দশমিক ৪ কাঠা জমি।
এদিকে একই দিন বগুড়া-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর স্ত্রী মোহসীনা আকতারের বগুড়ার বিভিন্ন ব্যাংকের পাঁচটি হিসাবে থাকা ৩০ লাখ ৯১ হাজার ৭০৯ টাকা ফ্রিজের আদেশ দেন আদালত। এছাড়া বগুড়ার বিভিন্ন জায়গায় থাকা ২৪ লাখ ২৪ হাজার ৪০০ টাকা মূল্যের ১১২ দশমিক শূন্য চার শতাংশ জমি ও ১৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি মিনি ট্রাক ক্রোক করার আদেশ দেওয়া হয়। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক সিফাত উদ্দিন ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ক্রোক করার আবেদন করেন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।
আবেদনে বলা হয়, মোহসীনা আকতার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৪ লাখ ৬৬ হাজার ১৪২ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন করে দুদকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান এবং শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ দ্বারা মোহসীনা আকতার ২ কোটি ৬১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৭২ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রাখার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করে। মামলার পর থেকে আসামি মোহসীনা আকতার অপরাধলব্ধ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদগুলো অন্যত্র বিক্রয় বা হস্তান্তর, স্থানাস্তর বা বেহাত করার প্রচেষ্টায় রয়েছেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। এমন অবস্থায় তার সম্পদ ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা একান্ত প্রয়োজন।