
সম্প্রতি দেশের কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা কুরুচিপূর্ণ কটূক্তি ও অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদ এবং তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল)।
সংগঠনটি বলছে, বর্তমানে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে নারী প্রার্থীদের, বিশেষত হিজাব পরিহিত নারী প্রার্থীদের নিয়ে একটি গোষ্ঠী বিদ্বেষমূলক ও অবমাননাকর মন্তব্য অব্যাহত রেখেছে, যা ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ইউটিএল-এর আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বিশ্বাস এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন এক যৌথ বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, ডাকসুসহ দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে নারী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের লক্ষ্য করে ধারাবাহিকভাবে সাইবার বুলিং করা হচ্ছে, যা স্পষ্টতই নারীদের স্বাধীনতা ও মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করছে। শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে হিজাব পরিহিত নারী শিক্ষার্থীরা নানা কটূক্তির শিকার হয়ে আসছেন। বর্তমানে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে হিজাব পরিহিত নারী প্রার্থীদের প্রতি একটি গোষ্ঠী বিদ্বেষমূলক ও অবমাননাকর মন্তব্য অব্যাহত রেখেছে, যা ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এতে আরও বলা হয়, নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি এ ধরনের কুরুচিপূর্ণ মনোভাব আমাদের কাছে অত্যন্ত উদ্বেগজনক, এবং তাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কা প্রকাশ করছি। দু:খজনক বিষয় হলো— কেউ কেউ এ ধরনের আক্রমণাত্মক বক্তব্য ও কটূক্তিকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করারও চেষ্টা করছেন। আমরা সকলকে এহেন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।
জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, ইউটিএলের পক্ষ থেকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি— অনতিবিলম্বে যারা নারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সাইবার বুলিংয়ের মাধ্যমে মর্যাদাহানির চেষ্টা করছে এবং সামাজিকভাবে হেয় করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সবশেষে বিবৃতিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন পর ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে যে উৎসবমুখর পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক ধারা ফিরে আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে, সেই মুহূর্তে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে নির্বাচন বন্ধ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও গণতন্ত্রকামী শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাই— যত বাধাই আসুক না কেন, গৃহীত সিদ্ধান্তে অটল থেকে ডাকসু নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে এবং ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে যারা নারী শিক্ষার্থীদের সম্মানহানি করতে চায় তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ডাকসু নির্বাচন আয়োজনে ইউটিএল সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্রচর্চার এক অনন্য মাইলফলক হয়ে উঠবে।