
কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নে ভিজিডি কার্ড বিতরণ ঘিরে বড় ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। প্রকৃত দুস্থ নারীদের বাদ দিয়ে সচ্ছলদের নামে কার্ড তৈরি হওয়ায় ব্যাপক বিতর্ক দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য নাসরিন পারভীন কবির ক্ষোভে শতাধিক ভিজিডি কার্ড ছিঁড়ে পুকুরে ছুড়ে ফেলেন। ঘটনাটির একটি ভিডিও দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে কার্ড বিতরণের সময় এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নাসরিন পারভীন কবির শুধু নিজের ও মেয়ের নামেই নয়, আত্মীয়-স্বজনের নামেও ভিজিডি কার্ড তৈরি করেছিলেন। এই নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে প্রায় দুই শতাধিক কার্ড পানিতে নিক্ষেপ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে হ্নীলা ইউনিয়নে প্রায় দুই শতাধিক ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। কর্মসূচি অনুযায়ী, প্রতিটি কার্ডধারী নারী মাসে ৩০ কেজি চাল পাওয়ার কথা। নীতিমালায় বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত, ভূমিহীন ও নিয়মিত আয়ের উৎসবিহীন নারীদের এই সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা উপেক্ষা করে সচ্ছল পরিবারের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে, ইউপি সদস্য নাসরিন পারভীন কবির নিজের ও মেয়ের পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজনের নামেও কার্ড তৈরি করেছেন। এই অনিয়ম নিয়ে প্রতিবাদ উঠতেই তিনি ক্ষোভে শতাধিক কার্ড ছিঁড়ে পুকুরে ফেলে দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, নাসরিন চিৎকার করতে করতে কার্ড ছিঁড়ে পানিতে ছুড়ে দিচ্ছেন।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নাসরিন পারভীন কবির অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, “আমার আর মেয়ের নামে কার্ড করার বিষয়টি সত্য। তবে আমি আসলে অসহায়দের জন্যই এগুলো রেখেছিলাম। বিতরণের সময় হট্টগোল শুরু হলে রাগের মাথায় সেগুলো ছিঁড়ে ফেলেছি। চেয়ারম্যান আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করেন না, নিজের ইচ্ছামতো কার্ড বাতিল করেন।”
এ প্রসঙ্গে ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, “ওই ইউপি সদস্য জালিয়াতি করে স্বজনদের নামেও চালের কার্ড করেছেন। বিষয়টি ধরা পড়তেই তিনি জোর করে সবগুলো ছিঁড়ে পুকুরে ফেলেন। একজন জনপ্রতিনিধির পক্ষে এ ধরনের আচরণ খুবই লজ্জাজনক।”
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন জানান, “আমাদের কাছে খবর এসেছে, ইউপি সদস্য নিজের নামেও ভিজিডি কার্ড করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।