
জুলাই বিপ্লবে শাহাদাত বরণকারী স্কুল ছাত্র আলিফ আহমেদ সিয়াম হত্যাসহ সাভারের গণহত্যার নির্দেশদাতা ইউএনও (নির্বাহী কর্মকর্তা) রাহুল চন্দের গ্রেপ্তারের দাবিতে রাজাপুরে মানববন্ধন করার পর তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রাজাপুর উপজেলার ইউএনও রাহুল চন্দ সাভারে ছাত্র হত্যার ৫ নং এজাহারভুক্ত আসামি হলেও তাকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়নি, বরং এখনও তিনি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। যা জুলাই বিপ্লবের চেতনার সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। বক্তারা অবিলম্বে রাহুল চন্দকে চাকুরি হতে অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবি করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জুলাই যোদ্ধা মোহম্মদ মুসা, মোস্তাফিজ, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি জাকারিয়া সুমন, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা বাইজিদ, জামায়াত নেতা আব্দুল আলিম ও ইসলামি ছাত্রশিবির সভাপতি সোলায়মান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
এদিকে, সাভার উপজেলার তৎকালীন ইউএনও রাহুল চন্দকে ঝালকাঠি থেকে অপসারণ ও তার বিচার দাবি করেছেন ঝালকাঠি জেলা বিএনপি ও জেলা জামায়াত ইসলামি। যতই দিন যাচ্ছে রাহুর চন্দের বিচার দাবিতে রাজাপুরসহ ঝালকাঠি জেলা ততই উত্তাল হয়।
এ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রথমে আমি আমার দেশ পত্রিকাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এ বিষয়টি জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্য। জুলাই বিপ্লবে হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেয়া একজন ব্যক্তি কীভাবে প্রশাসনে বহাল তা আমাদের বোধগম্য নয়। রাহুল চন্দ মামলার এজহারভুক্ত আসামি। তাকে যেখানে গ্রেপ্তার করা দরকার, তা না করে তাকে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে পোস্টিং দেয়া হয়েছে। এ থেকেই প্রমাণ হয় প্রশাসনে এখনও ফ্যাসিবাদের দোসররা ঘাঁপটি মেরে আছে।
ঝালকাঠি জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান আমার দেশকে বলেন, ভাবতে অবাক লাগে রাহুল চন্দেন মত দলীয় ক্যাডাররা ও গণহত্যার নির্দেশ দাতারা কীভাবে এখনও প্রশাসনে বহাল থাকে। আমি অবিলম্বে সাভারে জুলাই বিপ্লবের সৈনিক স্কুল ছাত্র আলিফ আহমেদ সিয়াম হত্যা মামলার আসামি রাজাপুরের ইউএনও রাহুল চন্দেন গ্রেপ্তার এবং অপসারণ দাবি করছি। বিষয়টি তুলে ধরার জন্য তিনি আমার দেশ পত্রিকাকে ধন্যবাদ জানান।
রাজাপুরে রাহুল চন্দের বিচার দাবিতে পরিচালিত আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম আজম সৈকত আমার দেশকে বলেন, রাহুল চন্দকে গ্রেপ্তার ও রাজাপুর থেকে অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
বিএনপির ঝালকাঠি -১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা বলেন, শুধু স্ট্যান্ড রিলিজ করলেই হবেনা। আমরা রাহুল চন্দের গ্রেপ্তার এবং গণহত্যার দায়ে ফাঁসি দাবি করছি।
এদিকে ২১ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে রাহুল চন্দকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওএসডি) করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব বারিউল করিম খান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ আদেশ দেয়া হয়।
গত বছর ৫ আগস্ট ঢাকার সাভারে ঢাকামুখী লং মার্চে গুলিবর্ষণ করে পুলিশ। এ সময় সাভার ডেইরি ফার্ম স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আলিফ আহমেদ সিয়াম নিহত হন। এ ঘটনায় সিয়ামের বাবা বুলবুল কবির সাভার থানায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১ নং এবং তৎকালীন সাভারের ইউএনও রাহুল চন্দকে ৫ নং আসামি করে সাভার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।