
বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে সম্প্রতি আন্দোলনে নামে শিক্ষকরা। দেশের অর্থনীতির অবস্থা যখন টালমাটাল, ফ্যাসিস্ট হাসিনা যখন দেশটাকে ডুবিয়ে গেছে রসাতলে ঠিক তখনি বারবার কথিত আন্দোলনের নামে দেশের অর্থনীতির আরও বারোটা বাজাচ্ছে এসব আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারী এসব শিক্ষকদের অধিকাংশই প্রতিষ্ঠানগুলোর ম্যানেজিং কমিটিকে পয়সা খাইয়ে ম্যানেজ করে চাকুরি পওয়া বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের বেশির ভাগই নিজেদের যোগ্যতায় শিক্ষকতার মতো মহান এই পেশায় আসেননি বলেই বিস্তর অভিযোগ পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে।
বুধবার (১৩ আগষ্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তা দখল করে চলে এই আন্দোলন। এক পর্যায়ে দুপুরে ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট’-এর ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।
দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে তাদের এই আন্দোলনকে মোটেও ভালোভাবে নেয়নি আমপাবলিক। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকদের আড়ালে যারা আন্দোলনে নেমেছে তাদের অধিকাংশই নিজেদের যোগ্যতায় সেই অবস্থানে আসেননি। বরং কখনো ফ্যাসিস্ট হাসিনার দলের এমপি এর কোটা বা বিশেষ সুপারিশ আবার কখনো বা টাকা পয়সা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিকে ম্যানেজ করে ভিন্ন পন্থায় শিক্ষকতার এই চাকুরি বাগিয়ে নিয়েছেন তারা।
এভাবে নিজেরা শিক্ষকতার এই মহান পেশায় নাম লিখিয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠান অযৌক্তিকভাবে জাতীয়করণের দাবী সামনে এনে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা নিতে চাওয়া শুধু অযৌক্তিকই নয় বরং অহেতুক অবিবেচক একটি ধারণা।
তাদের এই আন্দোলনে জাতির কোন কল্যাণ হবে না বরং ঝামেলা আরও বেড়ে যাবে বহুগুণে। অন্যদিকে নেটিজেনদের মধ্যে একটি গুঞ্জন রয়েছে যে, তারা ধারণা করছেন এসব আন্দোলনকারী শিক্ষকরা ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর। তারা নির্বাচনকে সামনে রেখে এই আন্দোলনে নেমেছে কারণ একটা সময় নির্বচানের আগে তাদের প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হলে তারা নির্বাচনী প্রিজাইডিং অফিসার হওয়ার সুযোগ পেয়ে যাবেন খুব সহজেই। যদি এমন কিছু হয় তাহলে নেট নাগরিকদের দাবি অন্তর্বর্তী সরকারকে বিষয়টি বিশেষভাবে ভেবে দেখার।
শিক্ষকরা জাতি গড়ার, মানুষ গড়ার কারিগর। সেই শিক্ষকদের কাছে শিক্ষা নেবে আগামী প্রজন্ম। তাই অযাথা অহেতুক সব দাবি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার বাজে সময়ে সামনে এনে নিজেদের শুধু ছোটই করছেন না তারা বরং এই আন্দোলন যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তাও প্রমাণ করে দিচ্ছেন বারবার।