
পুলিশের সামনে কেউ অস্ত্র বের করলে আত্মরক্ষার্থে পুলিশ সদস্যদের গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ।
মঙ্গলবার রাতে এক ওয়্যারলেস বার্তায় সিএমপির পুলিশ সদস্যদের এই নির্দেশনা দেন তিনি। বিষয়টি বুধবার (১৩ আগস্ট) রাতে একাধিক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার রাতে নগরীর ঈশান মিস্ত্রি হাট এলাকায় আওয়ামী লীগের মিছিলে ধাওয়া দিতে গিয়ে হামলার শিকার হন বন্দর থানার এসআই আবু সাঈদ রানা। তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ কমিশনার সিএমপির পুলিশ সদস্যদের এই নির্দেশনা দেন।
এছাড়া গত বছরের ৫ আগস্টের আগের প্রাধিকার অনুযায়ী থাকা অস্ত্র ও তাজা বুলেট নিয়ে ডিউটিতে বের হওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
সিএমপির পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ওয়্যারলেস বার্তায় সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে যে অস্ত্রের প্রাধিকার ছিল, ওই অস্ত্রের গোলাবারুদের প্রাধিকার অনুযায়ী থানার মোবাইল পার্টি, পেট্রোল পার্টি এবং ডিবির টিমগুলো সব র্যাংকের পুলিশ সদস্য অস্ত্র বহন করবে। আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়া কোনো মোবাইল, পেট্রোল, ডিবি, ও চেকপোস্ট দল ডিউটিতে বের হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু রাবার বুলেট দিয়ে কাজ হচ্ছে না। বন্দরে আমার এসআই গুরুতর আহত হয়েছেন। আরেক ইঞ্চি এদিক সেদিক হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতো। বন্দর থানার সাব-ইন্সপেক্টর যে পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন, ওই পরিস্থিতিতে কেউ পড়লে, কোনো অবস্থাতেই প্রজেক্টাইল লাশ ছাড়া কেউ ফিরে আসবে না।’
সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সোজা কথা, পুলিশের কোনো টহল পার্টির সামনে কেউ অস্ত্র বের করা মাত্র গুলি করা হবে। সেটা আগ্নেয়াস্ত্র হতে পারে, সেটা ধারালো অস্ত্রও হতে পারে। অস্ত্র বের করা মাত্র গুলি হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। দণ্ডবিধির ৯৬ থেকে ১০৬ ধারা অনুযায়ী, সব পুলিশ অফিসার আত্মরক্ষার অধিকার রাখেন। আক্রমণ হওয়ার আগেই, অস্ত্র বের করার মুহূর্তেই গুলি করবে। হয় মাথায়, নয়তো বুকে, নয়তো পিঠে করবে। সরকারি গুলির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’
এর আগে, সোমবার রাতে নগরীর ঈশান মিস্ত্রি হাট এলাকায় ঝটিকা মিছিল বের করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে এসআই আবু সাঈদ রানা গুরুতর আহত হন। তিনি এখনও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, আক্রমণের সময় এসআই রানার সঙ্গে থাকা দুই কনস্টেবল শটগান বহন করলেও তা ব্যবহার করেননি। আক্রমণের শিকার হলেও বেশিরভাগ পুলিশ সদস্য অস্ত্র ব্যবহার করতে চান না। গুলিতে কারও মৃত্যু হলে পুলিশ সদস্যদের আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হয়।
জানতে চাইলে সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, ‘তারা আমার কর্মকর্তার মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারত। আল্লাহ তাকে বাঁচিয়েছেন। আমার বাহিনী আত্মরক্ষার জন্য যা যা দরকার, করবে। কেউ বসে থেকে আক্রান্ত হবে না।’
শীর্ষনিউজ