
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর এক বছর পার হয়েছে শফিকুল আলমের। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। এতে শেখ হাসিনার ডাস্টবিন ও বামদের নিয়ে ‘বনসাই’ মন্তব্য করাসহ বেশ কয়েকটি আলোচিত ঘটনা নিয়ে ওঠা প্রশ্নের জবাবও দেন তিনি।
পোস্টে প্রেস সচিব লেখেন—আজ এক বছর হলো প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালনের ।অবিশ্বাস্য একটি যাত্রা ছিল এটি ।একটি বিদেশি সংস্থার ব্যুরো চিফ হিসেবে দায়িত্ব পালন থেকে দৈনিক স্পটলাইটে এসেছিলাম। গত এক বছরে আমি প্রতিদিন নতুন কিছু শিখেছি। কাজটি গোড়া থেকে শুরু করতে হয়েছে এবং তা আস্তে আস্তে গড়ে তুলতে হয়েছে । আগে যেহেতু এটি মূলত আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব ছিল।
আমার কাজ কি আমি ভাল করেছি?
আমি করেছি-আমি বিশ্বাস করি ।আমার কিছু বন্ধু যদিও অন্য কিছু মনে করে। আমি তাদের মতামতকে সম্মান করি। ইস! আমি যদি আরো ভালো করতে পারতাম। আমার কিছু ভুল ছিল ।মাঝে মাঝে আমি প্রতিক্রিয়া জানাতে খুব দেরি করেছি।মাঝে মাঝে আমার প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত হয়নি ।অর্থনীতির মতো যোগাযোগকে ‘ডিসমাল সায়েন্স বলা হয়। নিয়ম আছে — কিন্তু বাস্তবতা সবসময় তা মানে না।
এই বছরটি কঠিন ছিল-আমার স্ত্রী, সন্তান এবং ভাইবোনদের জন্য।আমার অবস্থানের জন্য আসা চাপ তাদের সহ্য করতে হয়েছে। আমি বন্ধুদের হারিয়েছি। সাংবাদিকদের হারিয়েছি ।কিছু তরুণ সাংবাদিক খোলাখুলিভাবে আমার সমালোচনা করেছে । আমাকে একজন ‘স্পিন ডাক্তার’ হিসেবে দেখেছে।কিন্তু আমি স্পিন করিনি ।আমি সাদা কে ‘সাদা’ আর কালো কে ‘কালো’ বলেছি ।ব্যাখ্যার মধ্যে পার্থক্য মানে এই নয় যে একপক্ষ মিথ্যা বলছে।
পোস্টে গত বছরের সবচেয়ে আলোচিত কয়েকটির প্রশ্নসহ জবাব দেন প্রেস সচিব।
হাসিনার ডাস্টবিনে ময়লা ফেলার কি প্রয়োজন ছিল?
হ্যাঁ ছিল ।তিনি ছিলেন একজন নির্মম স্বৈরশাসক।জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে তাকে তার জায়গা দেখানো দরকার ছিল।
আপনি কি বামপন্থিদের ‘বনসাই’ বলেছেন?
না আমি তা বলিনি ।আমি বলেছি ওরা বাংলাদেশকে বনসাই করে রাখতে চায়।
আপনি কি আপনার দায়িত্বের পর রাজনীতিতে যোগ দেবেন?
না। আবার সাংবাদিকতায় ফিরব ইনশাআল্লাহ।
লন্ডনে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা কি আপনাকে আক্রমণ করেছিলেন?
না ।চাথাম হাউজের বাইরে কিঞ্চিৎ চিৎকার করেছিল ।এটা ছিল পশ্চিমা ধাঁচের প্রতিবাদ । তারা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকাকালীন এরকম প্রতিবাদ করতে পারত । খুন করার চেয়ে ঘেউ ঘেউ করা ভালো।
আপনি সরকারের মুখপাত্র নাকি প্রেস সচিব?
হোয়াইট হাউসের ক্লাসিক মডেল অনুযায়ী-একজন প্রেস সচিবই রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব এবং সরকারের মুখপাত্র ও । প্রেস সচিবের ভূমিকা ওভারল্যাপ হয় ।
‘স্টারমার কানাডা ভ্রমণ করছে’ মন্তব্য কি ইচ্ছাকৃত ছিল?
না। প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্য সফরের প্রথম দিনে, একজন ব্রিটিশ এমপি জানিয়েছিলেন যে-তিনি সন্দেহ করছেন যে স্টারমার হয়ত কানাডায় । আমি প্রেসকে বলেছিলাম যে সে ‘সম্ভবত’ কানাডাতে ।ধারাভাষ্যকাররা ‘সম্ভবত’ বাদ দিয়েছিল ।আমার ভুল হয়েছিল— কথা বলার আগে চেক করে নেয়া উচিত ছিল।
আপনি কি কাজটি উপভোগ করছেন?
একেবারে। আমার জন্য এটি একটি বিশাল শিক্ষা সফর ছিল।
আপনি কি চাপে আছেন?
না, তবে ৩৬ ঘণ্টায় দিন হলে আমার জন্য ভালো হত ।
আপনি আপনার সরকারের কর্মক্ষমতা কিভাবে মূল্যায়ন করেন?
এ++। ইনশাল্লাহ ইতিহাস দয়ালু হবে। সংস্কার চলছে, ট্রায়াল দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।এখন মনোযোগ সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দিকে।
আপনি আপনার প্রেস উইং কে কীভাবে রেট করেন?
ট্রেইলব্লেজার- ভবিষ্যতের প্রেস উইং এর জন্য একটি উচ্চ বার স্থাপন করা হয়েছে।
আপনি কি এখন ধনী?
না। আমার সঞ্চয় এর একটি ভাল অংশ শেষ হয়ে গেছে।
আপনার সবচেয়ে বড়ো চিন্তা?
লাইভ ব্রিফিং বা টকশোতে ভুল কিছু বলে ফেলা—যেখানে কোনো উপায় নেই কথাটি ফিরিয়ে নেওয়ার।