Image description
অনিয়মের শেষ নেই

রাজধানীর আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানায় এতিম শিশুদের নামে অবাধে লুটপাট চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা চারটি সিন্ডিকেট প্রতিষ্ঠানটিতে লুটপাটে লিপ্ত, যেখানে এতিমদের চেয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্টাফদের পেছনে ব্যয় বেশি। অপ্রয়োজনীয় পদ সৃষ্টি করে আত্মীয়-পরিজন নিয়োগের মাধ্যমে বাজেটের অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টির অভিযোগও রয়েছে। উন্নয়নের নামে প্রকল্প বাজেটে গরমিল, সম্পত্তি আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিবাদ করলে শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের ওপর হয় মারধর, মিথ্যা মামলা ও হয়রানি। প্রভাবশালীদের অযাচিত হস্তক্ষেপের ফলে অনিয়মের কোনো শেষ নেই, আর এতিমদের অধিকার রক্ষায়ও দেখা যায় কোনো পদক্ষেপ। মানবিকতার মুখোশ পরে এতিমখানায় চলছে স্বার্থের লড়াই, যেখানে অসহায় শিশুরা হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য থেকে।

সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আজিমপুর এতিমখানাকেন্দ্রিক কয়েকটি শক্তিশালী বলয় রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় প্রভাবশালীদের বাইরেও সমাজসেবা অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা এ সিন্ডিকেট পরিচালনা করেন। বিশেষ করে কয়েক বছর ধরে সমাজসেবার তিন কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, মো. রকনুল হক ও মো. জহির উদ্দিনের সঙ্গে এতিমখানার কর্মচারীদের একটি সিন্ডিকেট চক্র গড়ে উঠেছে। গত বছরের ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ও মো. রকনুল হককে বদলি করলেও মো. জহির উদ্দিন এখনো স্বপদে বহাল।

জানা গেছে, এতিমদের সম্পত্তি লুটপাটে প্রতিযোগিতার দ্বন্দ্বে চারটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে। এর একটিতে রয়েছে চাকরিচ্যুত হওয়া হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা নুসরাত আলম, স্টোর অফিসার আলমগীর হোসাইন বালি ও বর্তমান জনসংযোগ কর্মকর্তা আশিকুর রহমান, যারা এতিমখানার টাকা আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্য একটি গ্রুপ পরিচালিত হয় কর্মচারীদের সঙ্গে মিলে, যার নেতৃত্বে আছেন চতুর্থ শ্রেণির মালি আব্দুর রহিম। এ ছাড়া এতিমখানার কার্যনির্বাহী কমিটি, বর্তমান ও সাবেক কমিটির নেতাদের নেতৃত্বে একটি গ্রুপও সক্রিয়। এদের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জড়িত থাকেন কমিটি থেকে বাদ পড়া নেতারা। এসব গ্রুপের সিন্ডিকেট সদস্যদের সঙ্গে সুবিধা নিতে যুক্ত থাকেন সমাজসেবার কয়েকজন কর্মকর্তা, যারা ভেতরে ভেতরে নিয়ন্ত্রণ করেন স্টাফদের। যখন যে গ্রুপ ক্ষমতায় থাকে, সুবিধা নিতে তারা তাদের হয়ে কাজ করেন। মূলত সবাই এতিমদের সেবার নামে কে কত টাকা লুটপাট করতে পারল, সে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। ছাত্রছাত্রীরা জানান, প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে এতিমদের চেয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা বেশি। এতিমখানায় থাকা ছাত্রছাত্রীদের ভালো খাবারের কথা বলা হলেও, কোনো ব্যক্তি দান করলেও তা কর্মকর্তাদের পেটে চলে যায়।

স্যার সলিমুল্লাহ এতিমখানার তথ্য বলছে, বর্তমানে ছাত্র ৮৭ ও ছাত্রী ৯৬ জন। কর্মকর্তা-কর্মচারী সর্বমোট ৫৪ জন। ১৮৩ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য মাসে প্রায় ৮ লাখ টাকার মতো ব্যয় হলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতায় ব্যয় হয় প্রায় ১১ লাখ টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন মিটিং, সিটিং ও উন্নয়নের নামে লুটপাট ও এতিমদের টাকা আত্মসাতের প্রতিটি কৃতকর্মে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের টাকা আত্মসাৎ, দুর্নীতি, নির্যাতনসহ কোনো অনিয়মের প্রতিবাদ করলেই ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্নভাবে চাপে রাখা হয়। শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের ওপর নির্যাতন ও উন্নয়নের নামে প্রকল্প নিয়ে লুটপাটের প্রশ্ন তোলায় এতিমখানার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে তত্ত্বাবধায়ক কমিটি। কমিটির তিন সদস্যের নির্দেশে তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর লালবাগ থানায় এতিমখানার ছাত্রছাত্রী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার এক দিন আগে ২১ নভেম্বর সকাল ১১টায় কয়েকজন ছাত্রছাত্রীকে গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বর্তমানে খুলনায় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে তিনি তিনটি প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) ছিলেন—প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প, বেড়া ডায়াবেটিক সমিতি (বেডাস) ভবন নির্মাণ কর্মসূচি এবং বিদ্যমান শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র (তিনটি) সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রকল্প। সাবেক ঢাকা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. রকনুল হক বর্তমানে বগুড়ায় কর্মরত, আর মো. জহির উদ্দিন শহর সমাজসেবা-৫-এর কর্মকর্তা। জহির বাদে অন্য দুই কর্মকর্তা ঢাকার বাইরে গেলেও জহিরের মাধ্যমে সিন্ডিকেট এখনো পরিচালিত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মো. জহির উদ্দিন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক হল শাখার নেতা হিসেবে ক্ষমতার প্রভাবে ছয় বছর ধরে একই পদে রয়েছেন। ঢাকার আজিমপুর শহর সমাজসেবা-৫ কার্যালয় থেকে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রভাব বিস্তার করতেন। এ চক্রের সঙ্গে দুজন আইনজীবীও সক্রিয় রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এসব গ্রুপের নীতিনির্ধারকরা আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনার সঙ্গে হত্যা মামলায় মো. হারুন অর রশিদ নামে একজনকে আসামি করেছেন, যিনি এতিমখানার কর্মচারী। তার নামে রাজধানীতে ছয়টি মামলা রয়েছে এবং মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি কারাগারে রয়েছেন। মূলত এতিমখানার কর্মকর্তাদের লুটপাটের প্রতিযোগিতার দ্বন্দ্বের কারণে এ মামলা করা হয়। ছয় মামলার দুটি রামপুরা থানায় এবং কোতোয়ালি থানা, নিউমার্কেট থানা, যাত্রাবাড়ী থানা ও বনানী থানায় একটি করে মামলা করা হয়েছে। বেশিরভাগ মামলার বাদী আসামিকে চেনেন না বলে জানা গেছে। এসব মামলায় অন্যদের সঙ্গে আসামি করা হারুন অর রশিদ গত বছরের ৩ জুলাই হার্নিয়া অপারেশনের জন্য ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। গত বছর ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রামপুরা থানার একটি হত্যা মামলায় তার নাম ওঠে। অথচ সেদিন তিনি অপারেশনের সেলাই কাটার জন্য ধানমন্ডির ওই বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলেন।

এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, এ চক্রটি মূলত এতিমখানায় শুধু এতিমদের সম্পত্তি ভোগ ও লুটপাটে মগ্ন। এতিমদের অর্থ আত্মসাৎ-সংক্রান্ত মামলার কোনো ফলাফল নেই। কার্যনির্বাহী কমিটি যদিও আত্মসাৎকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে, তবে কেউ টাকা ফেরত দেয়নি।

কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২২-২০২৪ কার্যনির্বাহী পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্টোর অফিসার পদ বিলুপ্ত হওয়া সত্ত্বেও মো. আলমগীর হোসাইন বালি উচ্চতর স্কেলে ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছেন। ২০০৭ সালের জুলাইয়ে ওই বেতন স্কেল বাতিল হয়। ১৯৯৮ সালের বার্ষিক সাধারণ সভায় স্টোর অফিসার ও ক্যাশ সহকারী পদ বিলুপ্ত হয়। তবু ২০০৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত জালিয়াতির মাধ্যমে স্টোর অফিসার পদ দখল করে এতিমখানার কোষাগার থেকে মোট ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছেন আলমগীর। নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদ তদন্তে অর্থ আত্মসাৎ ধরা পড়লে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। কমিটি টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিলেও এখনো তা পাননি। চাকরি চলে গেলেও তিনি জোরপূর্বক ক্ষমতার অপব্যবহার করে এতিমখানার আবাসিক বাসাটি দখল করে রেখেছেন।

নুসরাত আলম হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা ছিলেন। ২০১৭-২০২২ অর্থবছরে অডিট না হওয়ায় প্রায় ৫৬ লাখ টাকার হিসাবে গরমিল দেখা দেয়। অর্থ গরমিলের প্রমাণ পাওয়ায় মামলা হয়। কার্যনির্বাহী কমিটি টাকা ফেরত দিতে বললেও তিনি দেননি। ২০২২-২৪ সালের নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদ পুরো অডিট রিপোর্ট বাস্তবায়ন করেছে। বর্তমানে শহর সমাজসেবা কার্যালয়-৫-এর কর্মকর্তা মো. জহির উদ্দিনের যোগসাজশে বরখাস্ত হওয়া নুসরাত আলম ও আলমগীর হোসাইনকে ফের নিয়োগের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এক নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয় সমাজসেবার তিন কর্মকর্তার দ্বারা। এ সময় স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানায় গঠনতন্ত্র বহির্ভূত পদ সৃষ্টি করে উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল), ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর (ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারি) ও প্লাম্বার পদ তৈরি করা হয়। এ পদগুলোয় তিন কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠজনদের নিয়োগ দেওয়া হয়। পাশাপাশি কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের ভাতিজা মো. সাকিলকে সহকারী হিসাবরক্ষক ও তার স্ত্রী নুসরাত আলমকে হিসাবরক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

জানা যায়, ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এই তিন কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রিত চক্র ৫৮ লাখ ৪ হাজার ২০৯ টাকা হিসাব গরমিল করেছে। এ সময়কালে অডিটে আপত্তি জানানো হয়।

অডিট রিপোর্টে দেখা যায়, ২০১৬ সালের ১ মে থেকে ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর পর্যন্ত দৈনিক আদান-প্রদানকৃত বই নং-৫৮ চলমান ছিল। কিন্তু হিসাবরক্ষক নুসরাত আলম যোগদানের পর এই বই বন্ধ করে নতুন একটি ক্যাশবুক চালু করেন, যার কোনো নম্বর না দিয়ে ‘পেটি ক্যাশ’ নামে নামকরণ করা হয়। তার এই হিসাব বইয়ে ৩০ আগস্ট ২২ লাখ ৪৩ হাজার ৩৮৪ টাকা, ২৫ সেপ্টেম্বর ২১ লাখ ৭০ হাজার ৪০৯ টাকা ও ৩০ সেপ্টেম্বর ১ লাখ ৫০ হাজার ৫২৬ টাকার হিসাব গরমিল পাওয়া যায়। অভিযোগ রয়েছে, আব্দুল্লাহ আল মামুনকে তত্ত্বাবধায়ক পদে নিয়োগের পর কমিটি অপরিকল্পিতভাবে ১১টি প্রকল্প গ্রহণ করে ৬২ লাখ ২১ হাজার ৬৬৫ টাকা বাজেট ঘোষণা করে। প্রকল্পে খরচ দেখানো হয়েছে ৪০ লাখ ২ হাজার ১৫৫ টাকা। তবে বাজেট ও খরচের বিবরণীতে কমিটি সব প্রকল্পের বাজেট দেখালেও একটি প্রকল্পের বাজেট দেখায়নি, যা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ইট, বালু, সিমেন্ট, রড, কাঠসহ অন্যান্য মালপত্র ক্রয়ের খরচ। হিসাব বিবরণীতে সরাসরি এ প্রকল্পের খরচ হিসেবে ১২ লাখ চার হাজার ৮৬২ টাকা দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া সব প্রকল্পের মধ্যে শুধু অফিস ভবনের প্রধান গেট নির্মাণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা প্রকল্পে বাজেট ও খরচ একই দেখানো হয়েছে। বাকি সব প্রকল্পে বাজেটের তুলনায় কম খরচ দেখানো হয়েছে। দুটি প্রকল্পের হিসাব বিবরণীতে দেখা যায়, মালপত্র ক্রয়ের খরচের ছয়গুণ বেশি মিস্ত্রির খরচ দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে বালক হোস্টেলের প্রাচীর ভেঙে যাওয়ায় নতুন নির্মাণ ও গেস্টরুম তৈরি প্রকল্পে মালপত্র খরচ মাত্র ৮৪ হাজার ১১ টাকা, যেখানে মিস্ত্রির খরচ ৪ লাখ ১০ হাজার ৩০০ টাকা। অফিস ভবন ও সামনের রাস্তা মেরামত প্রকল্পে মালপত্র খরচ ১৯ হাজার ৭৪ টাকা, যেখানে মিস্ত্রির খরচ ১ লাখ ২৬ হাজার ৩০০ টাকা দেখানো হয়েছে।

স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার প্রশাসক অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. আজমল হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘যারা এতিমখানার অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে চাকরিচ্যুত হয়েছে, তাদের বিষয়ে আমার জানা নেই। তাদের চাকরি ফেরত দেওয়ার বিষয়ে জানি না।’

শহর সমাজসেবা-৫-এর কর্মকর্তা মো. জহির উদ্দিন বলেন, ‘৫ আগস্টের পর মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ও মো. রকনুল হককে ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে। আলমগীর ও নুসরাতের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই; কিন্তু অফিসের বড় স্যার বললে সেই অনুযায়ী আমার কাজ করতে হয়। তাদের নামে এতিমখানা থেকে বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগ আছে, কিন্তু সেই টাকা এখনো ফেরত দেয়নি।’

চাকরিচ্যুত হিসাবরক্ষক নুসরাত আলম বলেন, ‘এতিমখানার চাকরি মানুষ করে? এটা একটা নোংরা জায়গা। চাকরি ফেরত পেতে কোনো তদবির করিনি। আর আমার হিসাবে কোনো গরমিল ছিল না এবং টাকাও আত্মসাৎ করিনি। আমার নামে কোনো মামলা হয়নি।’

এ বিষয়ে কথা বলতে বিভাগীয় সমাজসেবার অতিরিক্ত পরিচালক মো. কামরুজ্জামান ও উপপরিচালক মো. রোকনুল হককে একাধিকবার ফোন দিলেও ধরেননি। এ ছাড়া চাকরিচ্যুত স্টোর অফিসার মো. আলমগীর হোসাইন বালির সঙ্গে কথা বলতে ফোন দিলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।