Image description
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জনগণের সার্বভৌম এখতিয়ারের ভিত্তিতেই আমরা এই ঘোষণাপত্রকে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করছি। এর চাইতে বড় জাতীয় সম্মতি আর নেই। এটা আইনের ঊর্ধ্বে। সনদের প্রস্তাব আছে সরকার গঠনের দুই বছরের মধ্যে এই অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করার। আমরা এটার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। তারা বলেছিল এই প্রতিশ্রুতিগুলো পালনের জন্য, সংবিধানে ও বিভিন্ন আইনে, বিধি বিধানে। সেখানে যা পরিবর্তন করতে হবে, সে বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। আমরা প্রতিশ্রুতিও দিয়েছি। এই সনদে শুধু কমিশন নয়, সমস্ত রাজনৈতিক দল সই করবে। এটি একটি জাতীয় ঐকমত্য। এটি জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায়। এটি আইনের চেয়েও বড়, এটি এক ধরনের ‘লেজিটিমেট এক্সপেকটেশন অফ দ্য পিপল’। জনগণের এই প্রত্যাশা সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে যুক্ত করার জন্য আমরা অঙ্গীকার করেছি। জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান মানবজমিনকে বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জুলাই সনদে ঘাটতিগুলো আছে, তা পূরণ করতে হবে। এই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। সংবিধানে এটাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শুধু কাগজে স্বাক্ষর করলে চলবে না। জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ মানবজমিনকে বলেন, জুলাই সনদ সকল দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরি হচ্ছে। এই সনদের বিরোধিতা করার কোনো অবকাশ আমরা দেখি না। নির্বাচন ছাড়া জনগণের মতামত জানারও কোনো উপায় নেই। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, নির্বাচনে আমাদের যেতে হবে। তাই যে ঐকমত্যে সবাই মিলে এসেছে, আমরা সেই ঐকমত্যটা বজায় রাখবো। গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, সরকার ও কমিশনের বক্তব্য অস্পষ্ট, একই এজেন্ডা বারবার আলোচনায় এনে সময় নষ্ট করা হয়েছে। কিছু সংস্কার অধ্যাদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব ছিল, কিন্তু কমিশন সংবিধান আলোচনায় অতিরিক্ত সময় ব্যয় করেছে। বৈঠকে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হতো দ্রুত আলোচনা শেষ করে জুলাই সনদ প্রণয়ন করা হবে। কোনো কিছুই স্পষ্ট হচ্ছে না। উল্লেখ্য, প্রথম পর্বের আলোচনায় (২০শে মার্চ-১৯শে মে) ৩৩ দলের সঙ্গে ৬২ বিষয়ে ঐকমত্য হয়। দ্বিতীয় পর্বে (৩রা জুন-৩১শে জুলাই) ৩০ দলের সঙ্গে বাকি ২০টি মৌলিক সংস্কারের মধ্যে ১১টিতে ঐকমত্য ও ৯টিতে নোট অব ডিসেন্টসহ ঐকমত্য হয়েছে।

চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কার ও নতুন রাজনৈতিক ভিত্তি হিসেবে আলোচনায় ছিল ‘জুলাই সনদ’। ঐকমত্য কমিশনের ৬৮ দিনের বৈঠকেও চূড়ান্ত রূপরেখা দিতে পারেনি কমিশন। বাস্তবায়ন পদ্ধতি ও আইনি ভিত্তি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দেখা দিয়েছে মতবিরোধ। যদিও কমিশনের মেয়াদ আরও এক মাস বাড়ানো হয়েছে। তবে সংস্কার বাস্তবায়ন ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে দ্বিধা ও মতপার্থক্য ক্রমশ গভীর হচ্ছে। সংস্কার ইস্যুতে জুলাই সনদ চূড়ান্ত না হওয়ায় প্রশ্ন উঠছে- সংকটের মূল জায়গা কোথায়? জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দাবি, সনদ চূড়ান্তকরণ ও বাস্তবায়ন কাঠামো নির্ধারণে তারা আগামী সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আলোচনায় বসবে। প্রথম ধাপের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকের পর, সেই আলোচনার ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তৃতীয় দফায় বৈঠক করে সনদ বাস্তবায়ন বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

কমিশন জানায়, আজ দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়া পাঠানো হবে। বিশেষজ্ঞদের মতামত ও পরামর্শ সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে জানাবে কমিশন। ঐকমত্য কমিশনের বিশেষ কোনো পছন্দ নেই। তবে বাস্তবায়ন ও আইনি ভিত্তি এসব প্রশ্নের সমাধান খুঁজতে কাজ করছে কমিশন। বিশেষজ্ঞদের মতামত নেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি ছয়জন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বৈঠকে বিকল্প বাস্তবায়নপথ হিসেবে উঠে এসেছে- গণভোট, সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স মতামত, বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ ব্যবস্থা ও অধ্যাদেশ জারি। অনানুষ্ঠানিকভাবেও অনেকের পরামর্শ ও মতামত নেয়া হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, অধ্যাদেশে কিছু বাস্তবায়ন সম্ভব হলেও সংসদ অনুমোদন না দিলে কার্যকারিতা হারাবে। এদিকে, কমিশনের সময় বাড়লেও জুলাই সনদের বাস্তবায়ন কাঠামো ও আইনি ভিত্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে না সহসাই। ফলে নির্বাচনের রোডম্যাপ এগোলেও সংস্কার বাস্তবায়নের গন্তব্য এখনো স্পষ্ট নয়।
জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন ও এনসিপি বলছে, জুলাই সনদের ভিত্তিতে হবে আগামীর নির্বাচন। সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন ছাড়া জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না তারা। আগামী সংসদের হাতে এই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন ছেড়ে দেয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। বর্তমান সরকারের সময় থেকেই এই সনদের বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছে দলগুলো। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না দিলে অন্তর্বর্তী সরকার ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করবে জামায়াত। দলটি মনে করে, সনদের বাস্তবায়ন প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভর করলে হবে না, আইনি ভিত্তি না থাকলে সনদ মূল্যহীন হয়ে পড়বে। এদিকে, জুলাই সনদে কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানিয়েছে এনসিপি।  বিএনপি বলছে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির আলোচনায় ডাকা হলে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে দলটি। জনগণের সার্বভৌম এখতিয়ারের ভিত্তিতেই এই ঘোষণাপত্রকে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করা হয়েছে। এর চাইতে বড় জাতীয় সম্মতি আর নেই। 

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ মানবজমিনকে বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতামত ও পরামর্শ নেয়া হচ্ছে। তারা যে পরামর্শ দেবেন সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবো। এখন পর্যন্ত আমরা লিগ্যাল মতামত পাইনি। বিশেষজ্ঞ যারা ঐদিন ছিলেন তার বাইরেও অনানুষ্ঠানিকভাবে আমরা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছি। 
চূড়ান্ত খসড়া যেটা আজকে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু ছোটখাটো কিছু বিষয়ে আমরা পুনর্বিবেচনা করছি। আগামীকাল আমরা পাঠাতে পারবো বলে আশা করছি। ফলে, খসড়ার মধ্যে কী আছে বা নেই এর চূড়ান্ত রূপ দাঁড়ায় নাই। 

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জনগণের সার্বভৌম এখতিয়ারের ভিত্তিতেই আমরা এই ঘোষণাপত্রকে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করছি। এর চাইতে বড় জাতীয় সম্মতি আর নেই। এটা আইনের ঊর্ধ্বে। সনদের প্রস্তাব আছে সরকার গঠনের দুই বছরের মধ্যে এই অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করার। আমরা এটার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। তারা বলেছিল এই প্রতিশ্রুতিগুলো পালনের জন্য, সংবিধানে ও বিভিন্ন আইনে, বিধি বিধানে। সেখানে যা পরিবর্তন করতে হবে, সে বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। আমরা প্রতিশ্রুতিও দিয়েছি। এই সনদে শুধু কমিশন নয়, সমস্ত রাজনৈতিক দল সই করবে। এটি একটি জাতীয় ঐকমত্য। এটি জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায়। এটি আইনের চেয়েও বড়, এটি এক ধরনের ‘লেজিটিমেট এক্সপেকটেশন অফ দ্য পিপল’। জনগণের এই প্রত্যাশা সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে যুক্ত করার জন্য আমরা অঙ্গীকার করেছি।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান মানবজমিনকে বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জুলাই সনদে ঘাটতিগুলো আছে, তা পূরণ করতে হবে। এই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। সংবিধানে এটাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শুধু কাগজে স্বাক্ষর করলে চলবে না। 

জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ মানবজমিনকে বলেন, জুলাই সনদ সকল দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরি হচ্ছে। এই সনদের বিরোধিতা করার কোনো অবকাশ আমরা দেখি না। নির্বাচন ছাড়া জনগণের মতামত জানারও কোনো উপায় নেই। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, নির্বাচনে আমাদের যেতে হবে। তাই যে ঐকমত্যে সবাই মিলে এসেছে, আমরা সেই ঐকমত্যটা বজায় রাখবো। 

গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, সরকার ও কমিশনের বক্তব্য অস্পষ্ট, একই এজেন্ডা বারবার আলোচনায় এনে সময় নষ্ট করা হয়েছে। কিছু সংস্কার অধ্যাদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব ছিল, কিন্তু কমিশন সংবিধান আলোচনায় অতিরিক্ত সময় ব্যয় করেছে। বৈঠকে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হতো দ্রুত আলোচনা শেষ করে জুলাই সনদ প্রণয়ন করা হবে। কোনো কিছুই স্পষ্ট হচ্ছে না। 

উল্লেখ্য, প্রথম পর্বের আলোচনায় (২০শে মার্চ-১৯শে মে) ৩৩ দলের সঙ্গে ৬২ বিষয়ে ঐকমত্য হয়। দ্বিতীয় পর্বে (৩রা জুন-৩১শে জুলাই) ৩০ দলের সঙ্গে বাকি ২০টি মৌলিক সংস্কারের মধ্যে ১১টিতে ঐকমত্য ও ৯টিতে নোট অব ডিসেন্টসহ ঐকমত্য হয়েছে ।