Image description

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুয়েল সাংমার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছ থেকে লাঠি কেড়ে এক তরুণকে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। পেটানোর একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

মারধরের শিকার দুর্জয় উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় দিনমজুর।

এ ঘটনায় রায়হান কবীর নামের যুবদলের এক নেতা বাদী হয়ে গত রবিবার আটপাড়া আমলি আদালতে ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পরে বিচারক ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভিস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কাছে মামলা করতে অনুমতি চান রায়হান।

স্থানীয় বাসিন্দা, ইউএনও কার্যালয় ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২৪ মার্চ দুপুরে বানিয়াজান ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়।

 
ইউনিয়নের ২ হাজার ৩৭ জন উপকারভোগীর মাঝে জন প্রতি ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। সেখানে চাল নিতে আসা উপকারভোগীরা সিরিয়াল না মানায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া চাল পাচার হচ্ছে এমন খবর পেয়ে ইউএনও রুয়েল সাংমা সেখানে উপস্থিত হন। অভিযোগ ওঠেছে ওই সময় ইউএনও পুলিশের কাছ থেকে লাঠি নিয়ে উপকারভোগী দুর্জয় নামের ওই তরুণকে মারধর করেন।
 
ঘটনার পাঁচ মাস পর গত রবিবার উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান আদালতে মামলা করেন। মামলায় ইউএনওকে একমাত্র আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন বলে জানান বাদীর আইনজীবী মিজানুর রহমান।

 

এ ব্যাপারে বাদী রায়হান বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। ইউএনও ওই দিন দুপুরে পুলিশ নিয়ে পরিষদে উপস্থিত হয়ে পুলিশের কাছ থেকে লাঠি নিয়ে দুর্জয়কে মারধর করে একপর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে যান।

 
আমরা চেষ্টা করেও তাঁকে থামাতে পারিনি। একজন নিরীহ নাগরিককে সরকারি আমলা হয়ে তিনি মারধর করতে পারেন না। ন্যায় বিচারের দাবিতে আমি ছয়জনকে সাক্ষী করে মামলা করেছি। মারধরের একটি ভিডিও সংযুক্ত করা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী দুর্জয় বলেন, ‘আমার মা হুসনা আক্তার অসুস্থ । তাই আমি সেইদিন সাড়ে ১২টার সময় ভিজিএফের চাল আনতাম যাই। পরে লোকজনের ধাক্কায় পরিষদের সামনে দেওয়া বাঁশের বেড়া খুলে গেলে আমি সামনে গিয়া পড়ে যাই। এমন সময় ইউএনও স্যার আইয়া আমারে মারধর করে। পরে আমারে আটকাইয়া রেখে একটা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ছাইড়া দিছে। আমি কোন চাল লুটপাট করার লোক না।’  

জানতে চাইলে ইউএনও রুয়েল সাংমার জানান, ‘আমি কাউকে মারধর করিনি। এটা আমাকে নিয়ে বিভিন্ন মহলের চক্রান্ত চলছে। রমজানের ঈদের সময় কিছু বিশৃঙ্খল জনতা ভিজিএফের মালামাল লুট করে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন কিছু উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে আমরা ধরছি, ধরার পরে তারা আমার সাথে উদ্ধত আচরণ করে। আমি তো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তাঁকে ক্যাপচার করেছি। ওখানে পুলিশ বা অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী থাকলেও তারা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছিল না। তবে আমি কাউকেই কোন মারধর করিনি।’

পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রকিবুল আক্তার বলেন, ‘এ রকম একটি বিষয় শুনেছি তবে আদালতের আদেশটি এখনো অফিসিয়াললি পাইনি।’

ময়মনসিংহ বিভাগী কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ জানান, ‘গত রবিবার এ নিয়ে একটি ডাক ফাইল কার্যালয়ে এসেছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’