Image description

গত ৮ আগস্ট এক বছর পূর্ণ করেছে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এই এক বছরে সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে মূল্যায়ন করছে বিভিন্ন মহল। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার এক অনুষ্ঠানে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এক বছরে প্রধান উপদেষ্টার মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার এবং শ্রমিকদের মামলার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় সমালোচনা করেছেন।   

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর বিজয়নগরে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর : দায়িত্ব ও ভূমিকা পর্যালোচনা’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। এতে সভাপতিত্ব করেন আনু মুহাম্মদ।
 
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাসীনদের বিষয়ে গুরুত্ব দিলেও শ্রমিকদের মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি।”

তিনি বলেন, “শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ২০ হাজারের বেশি মামলা আছে। সেটার ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি হয়নি। কিন্তু যারা ক্ষমতাবান, তাদের ব্যাপারে অগ্রগতি হয়েছে।”

“প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের মামলা খুব দ্রুত প্রত্যাহার হয়েছে, সমাধান হয়েছে। এ রকম যারা ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত আছেন, তাদেরটাও হয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে কম হয়েছে শ্রমিকদের বিষয়ে।” যোগ করেন আনু মুহাম্মদ।

সভায় গুম, ক্রসফায়ার ও বিচারহীনতার প্রসঙ্গে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, “গুম প্রতিরোধ কমিশন হলেও ক্রসফায়ার নিয়ে কোনো তদন্ত বা কমিশন হয়নি। এ ছাড়া মব সন্ত্রাস, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, ধর্মীয় ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা ভাঙচুরের ঘটনায়ও সন্তোষজনক অগ্রগতি নেই।”

কোনো কোনো উপদেষ্টা এগুলোকে যৌক্তিকতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “অনেকে এটাকে প্রেশার গ্রুপ বলছেন। এটা তো কাণ্ডজ্ঞানের বিষয় যে মব সন্ত্রাস এবং প্রেশার গ্রুপ এক কথা নয়।”

সভায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং নজরদারি কার্যক্রমে পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন আনু মুহাম্মদ। বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যে নজরদারি প্রযুক্তি ইসরাইলের কাছ থেকে কেনা হয়েছিল, সেই নজরদারি ব্যবস্থায় সংস্কারের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।”

সভায় ৭৪-এর বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিলের দাবি জানান অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, “সরকার পরিবর্তনের পর কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে, রিজার্ভ ও রেমিট্যান্সে উন্নতি হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে খেলাপি ঋণ উদ্ধার বা পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করা হয়নি।”

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, চলচ্চিত্র নির্মাতা আকরাম খান, স্থপতি ফারহানা শারমিন ইমু প্রমুখ বক্তব্য দেন।

শীর্ষনিউজ