Image description
সরকারের উদাসীনতা, সমাধানে বাংলাদেশের হাতে সময় রয়েছে তিন মাস

সরকারের উদাসীনতা বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা পিছিয়ে দেবে, দেশের ওষুধ শিল্প আবার ৮০ দশকে ফিরে যাবে। দেশের ওষুধ শিল্প প্রয়েজনীয় অনেক ওষুধ উৎপাদনের সক্ষমতা হারাবে। ফলে সামনের দিনগুলোতে অনেক জীবনরক্ষকারী ওষুধ সাধারণের নাগালের বাইরে চলে যাবে। এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের হাতে সময় রয়েছে তিন মাসের মতো। কিন্তু প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে সরকারের উদাসীনতা লক্ষণীয়। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএইচআরএফ) আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন সমিতির নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটবে। ফলে মেধাস্বত্ব আইন (ট্রিপস) সুবিধা বাতিল হয়ে যাবে। এই আইন অনুসারে চলতি বছরের নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ চাইলেই জীবন রক্ষাকারী কোন ওষুধের পেটেন্ট নিয়ে ওষুধ উৎপাদন করতে পারবে না।

এমন পরিস্থিতিতে ঔষুধ শিল্প সমিতির পক্ষ থেকে নতুন করে এক হাজারের বেশি ওষুধ উৎপাদনের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রায় এক বছরের বেশি সময় পর ড্রাগ কন্ট্রোল কমিটির (ডিসিসি) সভা অনুষ্ঠিত হলেও সেখানে আবেদিত ওষুধগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

সমিতির মহাসচিব ড. মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রায় এক হাজারের বেশি ওষুধ অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এরমধ্যে মাত্র তিন শতাধিক ওষুধ তালিকাভুক্ত হয়েছে। বাকীগুলো ফেলে রেখেছে। আমাদের হাতে সময় আছে মাত্র তিন মাসের মতো, এখন যদি এ ধরনের আচরণ করা হয় তাহলে দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তিনি বলেন, আগে প্রতি দুই থেকে তিন মাস পরপর ডিসিসির সভা অনুষ্ঠিত হতো, তখন নিয়মিত ওষুধের অনুমোদন নেওয়া যেত। কিন্তু বর্তমান সময়ে ভাবতে হয় আগামী ৩০ বছরের কথা। আগামী ২০ থেকে ৩০ বছর আমাদের কি ধরনের ওষুধ প্রয়োজন হবে, সেটা বুঝে আবেদিত ওষুধগুলো অনুমোদন করতে হবে। কিন্তু সরকারের সে ধরনের আচরণ করছে না।

সমিতির কোষধ্যক্ষ মো. হালিমুজ্জামান বলেন, বর্তমান সরকার ওষুধ সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সবার মতামত নিলেও ওষুধ শিল্প সমিতির সঙ্গে কোন আলোচনা করছে না, বা মতামত গ্রহণ করছে না। এভাবে চলতে থাকলে দেশের ওষুধ শিল্প আবার ৮০ দশকে ফিরে যাবে, আমদানি নির্ভর হয়ে পড়বে এই খাত। সরকারের বোঝা উচিত, আমরাও দেশের অংশ, আমাদের বিরোধী দল ভাবার সুযোগ নেই। আমরা দেশ ও দেশের মানুষের মঙ্গলে কাজ করছি। তাই ওষুধ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমাদের অংশগ্রহণ জরুরী। ঔষুধ শিল্প সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি এম মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, মার্কিন নতুন শুল্কনীতিতে ওষুধ শিল্পে কোন প্রভাব পড়বে না। কারণ ওষুধের ওপর কোন ট্যারিফ বসানো হয়নি। সরকারের ১৯৮২ সালের ওষুধ নীতি ওষুধ শিল্প সৃষ্টিতে সহায়ক ছিল, তাই দেশের ওষুধ শিল্প এতোটা এগিয়েছে। কিন্তু এখন যদি সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করে তাহলে দেশের ওষুধ শিল্প ক্ষতিগ্রস্থ হবে।