Image description

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থানের অভিযোগে আটক আরও ৩৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আজ শনিবার সকালে মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে তারা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।

ফেরত পাঠানোর এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থা (আইসিই)। এর আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ অনুবিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, মোট ৬১ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হবে। তবে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) সূত্রে জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত ৩৯ জনকে বহনকারী বিমানটিই ঢাকা পৌঁছেছে।

ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের সংখ্যা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি থাকলেও, এটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের অভিবাসন নীতিরই বাস্তবায়ন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম জোরদার করেছে।

বাংলাদেশ সরকার কূটনৈতিক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে, ফেরত পাঠানো বাংলাদেশিদের প্রতি যেন মানবিক আচরণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই বাংলাদেশিদের সঙ্গে কোনো শারীরিক নিপীড়ন বা অপমানজনক আচরণ করা হয়নি এবং তাদের কাউকে হাতকড়া পরানো হয়নি—যা অনেক সময় অন্যান্য দেশের নাগরিকদের ক্ষেত্রে দেখা যায়।

এর আগে গত কয়েক বছরে ধাপে ধাপে ১১৮ জন বাংলাদেশিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। আজকের এই ঘটনা সেই চলমান প্রক্রিয়ারই একটি অংশ। মার্কিন প্রশাসনের এ ধরনের পদক্ষেপ দেশটিতে অবৈধভাবে বসবাসরত অভিবাসীদের জন্য একটি কঠোর বার্তা বলেই মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।

বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলো ফেরত আসা বাংলাদেশিদের গ্রহণ করে এবং তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা ও যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করে।

মিশনের একজন কূটনীতিক জানান, আটক হওয়া ব্যক্তির বৈধ পাসপোর্ট থাকলে তাকে দ্রুত পাঠানো হচ্ছে। মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট থাকলে বাংলাদেশ মিশন থেকে একমুখী ট্রাভেল পারমিট (টিপি) দেওয়ার পর পাঠানো হচ্ছে। আর যাদের পরিচয় শনাক্ত করার মতো পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র বা অন্য কোনো প্রমাণপত্র নেই, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাঁদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা গেলে তারপর টিপি দেওয়া হচ্ছে।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নত দেশে অভিবাসনের আগে বৈধ কাগজপত্র ও অভিবাসন আইন সম্পর্কে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। না হলে ভবিষ্যতেও এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে অনেক বাংলাদেশিকে।

ঢাকাটাইমস