Image description

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের জন্য ২০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেছেন। চূড়ান্ত আলোচনায় দর কষাকষির পর বাংলাদেশের শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে আনা হয়। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে এ খবর জানানো হয়। এ ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের জন্য এটা বিরাট সুখবর।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক কমানোর আলোচনায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তাকে সহযোগিতা করেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানসহ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। শুল্ক নিয়ে আলোচনায় বাণিজ্য উপদেষ্টা ও নিরাপত্তা উপদেষ্টার ভূমিকা ছিল খুবই ইতিবাচক। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলকে এ জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কূটনৈতিক বিজয় হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় দফার শুল্ক আলোচনা শেষ হওয়ার পর স্থানীয় সময় ৩১ জুলাই রাতে হোয়াইট হাউস থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়েছে। এটিই এখন চূড়ান্ত। এর আগে এই শুল্ক প্রথমে ৩৭ শতাংশ ও পরে ৩৫ শতাংশ ঘোষণা করা হয়েছিল।

শুল্ক আলোচনায় বাংলাদেশের নেতৃত্বদানকারী বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর ২০ ভাগ শুল্ক আরোপ করায় আমরা প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় থাকব। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আর নেই। তবে আমরা ২০ শতাংশের নিচে প্রত্যাশা করেছিলাম।’

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তানে সবচেয়ে কম ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া শ্রীলঙ্কা ২০ শতাংশ, ভারত ২৫ শতাংশ এবং কম্বোডিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। তৈরি পোশাকসহ রপ্তানি খাতে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের জন্যও ২০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর বাইরে চীনের জন্য প্রাথমিকভাবে ৫৫ শতাংশ শুল্কারোপের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে চলমান অস্থিরতার নিরসন হয়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তর (ইউএসটিআর) প্রথমে গত ২ এপ্রিল ৬০টি দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। ৯ এপ্রিল তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হলেও ৮ জুলাই জানানো হয়— বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর করা হবে ১ আগস্ট থেকে।

এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকার কৌশলগত উদ্যোগ নেয়। গত ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো একটি বিস্তারিত অবস্থানপত্রে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তি তুলে ধরা হয় যে, দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার, যা তুলনামূলকভাবে খুবই কম। একই সঙ্গে রপ্তানি খাতে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামের মতো দেশের সঙ্গে ঘাটতি যেখানে ১২৩ বিলিয়ন ডলার, সেখানে তাদের ওপর শুল্কহার ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের দাবি ছিল—এত কম ঘাটতির পরও ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ অন্যায্য ও বৈষম্যমূলক। সব শেষে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ৩১ জুলাই সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউসের ‘পারস্পরিক শুল্কহার’ নিয়ে এক ঘোষণায় মার্কিন প্রশাসন জানায়, বাংলাদেশি পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগের প্রস্তাবিত ৩৫ শতাংশের চেয়ে ১৫ শতাংশ কম।

বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের অন্য প্রতিযোগী দেশগুলোর শুল্কহার প্রায় সমান বা কাছাকাছি থাকায় ব্যবসায়ীদের মধ্যেও স্বস্তি ফিরেছে। বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আমার দেশকে বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের জন্য সত্যিই স্বস্তিদায়ক খবর। আমরা যেটুকু প্রত্যাশা করেছিলাম, প্রাপ্তি তার চেয়েও বেশি। এ সিদ্ধান্ত রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখবে।’

মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই ইতিবাচক পদক্ষেপ শুধু তৈরি পোশাক খাতেই নয়, অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রেও প্রবৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করবে। ফলে রপ্তানিকারকরা নতুন বাজার ধরার বিষয়ে আরো উৎসাহিত হবেন।’ তিনি জানান, সরকার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্টের আমদানি করা তুলা বা অন্যান্য কাঁচামাল ব্যবহার করে বাংলাদেশ যেসব পণ্য উৎপাদন করবে, সেগুলো শূন্য শুল্কে নামিয়ে আনার।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, ট্যারিফ যদি ৩৫ শতাংশ থাকত তাহলে আমাদের ব্যবসা অন্য দেশে চলে যাওয়ার যে আশঙ্কা ছিল, সে আশঙ্কা এখন আর নেই। কারণ, আমাদের ট্যারিফ আর অন্যদের ট্যারিফ এখন সমান। প্রতিবেশী দেশ ভারতের ট্যারিফ আমাদের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি। ট্যারিফ কমানোর ফলে এখন যদি অবকাঠামো, গ্যাস সরবরাহ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ব্যাংকের সুদের হার যদি সঠিক রাখা যায় তাহলে ব্যবসার যে প্রবৃদ্ধি তা বজায় থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মাহমুদ হাসান খান আরো বলেন, ‘রপ্তানি খাতে এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় অর্জন। তবে এই সফলতা টেকসই করতে হলে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো—বিশেষ করে জ্বালানি সংকট—সমাধান করতে হবে। সরকারের উচিত এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শিল্প খাতের দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তি মজবুত করা।’

উদ্যোক্তারা বলছেন, বর্তমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রতিযোগী দেশগুলোর সমপর্যায়ের এই সাফল্য একটি বড় কূটনৈতিক অর্জন। তবে তারা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, অভ্যন্তরীণ কাঠামোগত দুর্বলতা সমাধান ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য অর্জন সম্ভব নয়।

দেশের বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তা ও বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম আমার দেশকে বলেন, ভিয়েতনাম আমাদের জন্য সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় ছিল। আমরা যেহেতু তাদের সমপরিমাণ শুল্কগুণেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছিÑ তাই আপাতত শঙ্কা নেই। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে, দেশে আমরা নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে শিল্প খাতের উৎপাদন ধরে রেখেছি। বিশেষ করে আমাদের ঋণের সুদহার এখন ১৬ শতাংশ। ভিয়েতনামের তুলনায় এটা অনেক চড়া। সেই সঙ্গে জ্বালানি সংকট আমাদের নিয়মিত বিষয় হয়ে গেছে। এর ফলে আমাদের শিল্প ইউনিটগুলোর উৎপাদন দীর্ঘদিন ধরেই অর্ধেক সক্ষমতা নিয়ে চলছে।

মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম আরো বলেন, ‘আমরা নতুন বিনিয়োগ নিয়ে যতটা আলোচনা করি, পুরোনো বিনিয়োগের সক্ষমতা পুরোপুরি কাজে লাগানোতে তেমন মনোযোগ নেই। সরকারকে এ বিষয়েও এখনই নজর দিতে হবে।’

প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অক্ষুণ্ণ থাকবে বাংলাদেশের

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং নতুন এই শুল্কহারের কথা জানিয়ে এক প্রেস বিবৃতিতে বলেছে, অনেক বিষয় জড়িত থাকায় শুল্ক আলোচনার প্রক্রিয়াটি ছিল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। শুল্ক ছাড় পাওয়ার বিষয়টি শুধু মার্কিন রপ্তানির ওপর শুল্ক কমানোর সঙ্গেই যুক্ত ছিল না, বরং অশুল্ক বাধা, বাণিজ্য ঘাটতি ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত মার্কিন উদ্বেগ সমাধানে একটি দেশের সদিচ্ছার ওপরও নির্ভর করছিল।

এতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ ২০ শুল্ক পেয়েছে—যা তৈরি পোশাক খাতের প্রধান প্রতিযোগী দেশ শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার প্রায় সমান। এই দেশগুলো ১৯ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে শুল্ক পেয়েছে। ফলে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের তুলনামূলক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা অক্ষুণ্ণ রয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বিত চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারায় ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

দরকার হলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃষি পণ্য আনবে বাংলাদেশ

শুল্ক আলোচনায় বিশেষ ভূমিকা রাখা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমরা সতর্কতার সঙ্গে আলোচনা করেছি, যাতে আমাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো আমাদের জাতীয় স্বার্থ ও সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। আমাদের পোশাক শিল্পকে রক্ষা করা ছিল সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তবে এর পাশাপাশি আমরা মার্কিন কৃষিপণ্য কেনার বিষয়েও প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। এটি আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপ্রধান রাজ্যগুলোর সঙ্গে আমাদের সদ্ভাব বাড়াবে।’

খলিলুর রহমান আরো বলেন, ‘আজ আমরা সফলভাবে একটি সম্ভাব্য ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক এড়াতে পেরেছি। এটি আমাদের পোশাক খাত এবং এর ওপর নির্ভরশীল লাখ লাখ মানুষের জন্য সুখবর। এর মাধ্যমে আমরা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছি এবং বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে প্রবেশের নতুন সুযোগ তৈরি করেছি।’

প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়বে

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর শুল্কহার ২০ শতাংশে নেমে আসায় বৈশ্বিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় উপদেষ্টা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এতেও আমরা প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে থাকব। ফলে মার্কিন বাজারে আমাদের রপ্তানিতে কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে আমরা আশা করেছিলাম এটি ২০ শতাংশের নিচে থাকবে।’

চমক পাকিস্তানের

ভারতের জন্য পাল্টা শুল্ক ২৫ শতাংশ করা হলেও, বাংলাদেশের মতোই চমক দেখিয়েছে পাকিস্তান। পূর্বঘোষিত ২৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৯ শতাংশ পাল্টা শুল্ক ঘোষণায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম শুল্কহার এখন পাকিস্তানের। বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ চুক্তি (যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে) অর্থনৈতিক সহযোগিতার এক নতুন যুগের সূচনা করল; বিশেষ করে জ্বালানি, খনি ও খনিজ সম্পদ, তথ্যপ্রযুক্তি, ক্রিপ্টোকারেন্সি ও অন্যান্য খাতে।

সুইজারল্যান্ডসহ দশ দেশে চড়া শুল্ক

ট্রাম্প প্রশাসন সুইজারল্যান্ডসহ দশ দেশের ওপর বাড়তি চড়া শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। যেমন সিরিয়ার ওপর ৪১ শতাংশ, লাওস ৪০, মিয়ানমার (বার্মা) ৪০, সুইজারল্যান্ড ৩৯, ইরাক ৩৫, সার্বিয়া ৩৫, আলজেরিয়া ৩০, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ৩০, লিবিয়া ৩০ ও দক্ষিণ আফ্রিকা ৩০ শতাংশ।

মাঝারি শুল্ক যেসব দেশের জন্য

যুক্তরাষ্ট্র সরকার নতুন যে শুল্কহার ঘোষণা করেছে তা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মাঝারি শুল্ক তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে ব্রুনেই, ভারত, কাজাখস্তান, মলদোভা, তিউনিসিয়ার ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ শুল্ক; বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ১৯ শতাংশ এবং নিকারাগুয়ার ক্ষেত্রে ১৮ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

তুরস্কসহ বেশি সুবিধা পেয়েছে যেসব দেশ

যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে শুল্ক নিয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছে তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। এর বাইরে আছে আফগানিস্তান, অ্যাঙ্গোলা, বলিভিয়া, বতসোয়ানা, ক্যামেরুন, চাদ, কোস্টারিকা, কোট দিভোয়ার (আইভরি কোস্ট), গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো, ইকুয়েডর, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ফিজি, ঘানা, গায়ানা, আইসল্যান্ড, ইসরাইল, জাপান, জর্ডান, লেসোথো, লিচেনস্টাইন, মাদাগাস্কার, মালাউই, মরিশাস, মোজাম্বিক, নামিবিয়া, নাউরু, নিউজিল্যান্ড, নাইজেরিয়া, উত্তর ম্যাসেডোনিয়া, নরওয়ে, পাপুয়া নিউগিনি, দক্ষিণ কোরিয়া, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, উগান্ডা, ভানুয়াতু, ভেনেজুয়েলা, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ের জন্য ১৫ শতাংশ শুল্ক।

যেভাবে কার্যকর হবে পাল্টা শুল্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া সর্বশেষ নির্বাহী আদেশে বিভিন্ন দেশের ওপর আরোপিত নতুন শুল্কহার কার্যকর হওয়ার সময়সূচিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৭ আগস্ট থেকে তা কার্যকর হবে।

এর আগে ট্রাম্প ১ আগস্টের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন করার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। তখন তিনি বলে দিয়েছিলেন, এ সময়ের মধ্যে চুক্তিতে না পৌঁছালে চড়া শুল্ক আরোপ করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার নতুন নির্বাহী আদেশে ৭০টির বেশি দেশের ওপর নতুন পাল্টা শুল্কহার ঘোষণা করেছেন। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সেগুলো আগামী সাত দিনের মধ্যে কার্যকর হবে। যেসব পণ্য ৭ আগস্টের মধ্যে জাহাজে তোলা হবে বা বর্তমানে যাত্রাপথে রয়েছে এবং সেগুলো যদি ৫ অক্টোবরের আগে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছে যায়, তবে সেগুলোর ক্ষেত্রে শুল্ক প্রযোজ্য হবে না। অবশ্য কানাডার ওপর যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক গতকাল ১ আগস্ট থেকেই কার্যকর হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মেক্সিকোকে ৯০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে।