
নাছির উদ্দিন চৌধুরী ওরফে ‘শিবির’ নাছির। খুন, অপহরণ, মারামারি অস্ত্র ও চাঁদাবাজির ৩৬ মামলার আসামি তিনি। বয়সও ছুঁয়েছে ৬০ এর ঘর। টানা ২৬ বছর কারাভোগ করেন তিনি। ১৯৯৮ সালের ৯ এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট পর্যন্ত কারাগারে ছিলেন। পরে গতবছর ১১ আগস্ট মুক্ত হন জামিনে। আর মুক্ত হওয়ার ১১ মাসের মাথায় করলেন বিয়ে। গত বৃহস্পতিবার কুলসুমা বেগমকে জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাছিরের বিয়ের বিষয়টি ভাইরাল হয়েছে।
নাছির উদ্দিন চৌধুরী হাটহাজারীর মন্দাকিনী এলাকার এলাহী বক্সের ছেলে।
জানা যায়, নাছিরের ৩৬টি মামলার মধ্যে খালাস পান ৩১টি মামলায়। দুটিতে সাজা হলেও আগে কারাভোগে শেষ হয়ে যায়। বর্তমানে ফটিকছড়ির তিনটি হত্যা মামলা বিচারাধীন আছে। এর মধ্যে দুটি মামলায় আগে থেকে জামিনে ছিলেন। শেষ মামলায় গত বছরের ১১ আগস্ট জামিন হওয়ার পর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান নাছির।
নাছির উদ্দিন সমকালকে জানান, ১৫ লাখ টাকা দেনমোহরে হাটহাজারীর ছিপাতলী গ্রামের কুলসুমা বেগমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান বলেই সংসারী হচ্ছেন তিনি।
এদিকে নাছির উদ্দিন ছাত্রশিবিরের সঙ্গে কখনো জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করেন ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগরের (উত্তর) সভাপতি তানজীর হোসেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘লোকজনের মুখে মুখে নাছিরের নামের সঙ্গে শিবির কথাটি জুড়ে যায়। তিনি হয়তো শিবিরের ভালো কাজকে সমর্থন করতেন। কিন্তু তিনি কখনো শিবিরের কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।’
জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর নাছিরের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রাবাসে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় রায় হয়। এতে তার পাঁচ বছরের সাজা হয়েছিল। এর আগে ২০০৮ সালে অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের সাজা হয়। ২০১৫ সালের ২৪ মার্চ চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জমির উদ্দিন হত্যা মামলায় খালাস পান নাছির। ১৯৯৪ সালের ২০ নভেম্বর জমিরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরি ও হাটহাজারীর তিন খুনের মামলায় খালাস পান নাছির। ২০০১ সালের ১৬ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রামের জামাল খান রোডে অধ্যক্ষ মুহুরির বাসায় ঢুকে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে। এভাবে ৩১টি মামলায় খালাস পেয়ে ৬০ বছর বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন নাছির।