উত্তরা পূর্ব থানার ওসি শাহ আলম একজন খুনি। এখানে আমাদের ভাইদেরকে হত্যা করা হয়েছে। গণহত্যা হয়েছে। খুনি শাহ আলমকে কত টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হলো, এমনই প্রশ্ন তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক হান্নান মাসউদ। তিনি বলেন, শাহ আলম একজন চিহ্ণিত খুনি। তারা এটাকে যেন বাংলা সিনেমা পেয়েছে। একজন গণহত্যার আসামী পালিয়ে যায় কিভাবে? আমরা বলব, সেই খুনিকে ছেড়েছে আরেক খুনি। তবে কত টাকার বিনিময়ে ছাড়া হয়েছে, এটা জানাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যারা তাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে, তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আমরা ছাত্র-জনতার খুনিকে ধরব, আর আপনারা ছেড়ে দিবেন, এমন হতে পারে না। আমরা পুলিশ সংস্কারের কথা বলছি। কিন্তু সেই সংস্কার আমরা চোখে দেখছি না। এখও চাঁদাবাজি ও ঘুষ বাণিজ্য চলছে। পুলিশে এখনও সংস্কারের ছোয়া লাগেনি। আগের মতই আছে। তারা আগের মতই দেদারছে অপকর্ম করে যাচ্ছে। ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করার, বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, কত টাকার বিনিময়ে শাহ আলমকে ছাড়া হয়েছে, জানতে চাই। নাকি যারা খুনের সাথে জড়িত এবং শাহ আলম আইনের আওতায় থাকলে যাদের মুখোস উম্মোচিত হয়ে যাবে, তারাই ছেড়ে দিয়েছে? আমরা প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলেছি। সরাসরি উপদেষ্টার সাথে কথা বলেছি। আইজিপির সাথে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, অতি দ্রুত ওসি শাহ আলমকে গ্রেফতার করবেন। যারা তাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন, তাদেরকেও গ্রেফতার করবেন। ১৪-১৬ ঘণ্টা হয়ে গেলো, তারা এখনও কেউ এরেস্ট হলো না। খুনিকে পালিয়ে যেতে যারা সহযোগিতা করেছে তাদের ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ৩৬ জুলাইয়ে আমাদের শত্রু ছিল প্রকাশ্য। এখন শত্রু আমাদের ভেতরেই। এইসকল খুনি এবং শত্রুদের মুখোস উম্মোচন করতে চাই। যারা খুনিদের ছেড়ে দিয়ে বিপ্লবীদের মনোবল ভেঙে দিতে চান, তাদের স্বপ্ন অচিরেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে যারা রাজনীতি করতে চান, তারা ছাত্র জনতাকে সম্মান দিয়ে, নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদসহ ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিদের সম্মান দিয়েই রাজনীতি করতে হবে। সিলেট সীমান্ত দিয়ে ওবায়দুল কাদেরকে পালিয়ে যেতে কারা সহযোগিতা করেছিল?
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যার একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলমকে। কুষ্টিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টার পর তাঁকে উত্তরা পূর্ব থানায় আনা হয়েছিল। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি থানা থেকে পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় থানার একজন সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।