Image description

ভোটকক্ষের ভেতর থেকে সরাসরি সংবাদ সম্প্রচার করা যাবে না। এছাড়া একটি ভোট কক্ষে একসঙ্গে একাধিক মিডিয়ার প্রতিনিধি অবস্থান করতে পারবেন না। বুধবার এমন গণমাধ্যম নীতিমালা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এদিকে নির্বাচনের দিন ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার চায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে বলে ইসি সূত্রে জানা যায়।

গণমাধ্যম নীতিমালায় বলা হয়েছে, নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে আবেদনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের সাংবাদিক কার্ড, গাড়ি ও মোটরসাইকেলের স্টিকার দেবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও রিটার্নিং কর্মকর্তারা। নীতিমালা অনুযায়ী দেশের অনুমোদিত প্রিন্ট, টেলিভিশন, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, আইপিটিভি, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিদেশি সাংবাদিকরা কার্ড ও গাড়ির স্টিকার পাবেন।

নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত কার্ডধারী সাংবাদিক সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। এরপর প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে অবহিত করে তথ্য, ছবি ও ভিডিও নেবেন। তবে গোপন কক্ষের ছবি তোলা যাবে না। একসঙ্গে একটির বেশি মিডিয়ার প্রতিনিধি ভোটকক্ষে যেতে পারবেন না। ভোট কক্ষে থাকতে পারবে ১০ মিনিট। ভোটকক্ষে ভোটারের সাক্ষাৎকার নেওয়া যাবে না। সর্বোপরি ভোটকক্ষের ভেতর থেকে সরাসরি সম্প্রচারও করা যাবে না।

গণমাধ্যম নীতিমালা অনুসারে সরাসরি সম্প্রচার করতে হলে ভোটকক্ষ থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করতে হবে। তবে ভোট গণনার সময় গণমাধ্যম কর্মীরা থাকতে পারবে, সে সময় ছবিও তোলা যাবে। কিন্তু সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না। এমনকি ভোটকক্ষ থেকে কোনো তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার চায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এজন্য নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখা-২ এর সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আবদুল হাই এ সংক্রান্ত চিঠি এরইমধ্যে ইসি সচিবের কাছে পাঠিয়েছেন।

জানা যায়, সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির এক সভা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঝুঁকিপূর্ণ সকল ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, যা বাস্তবায়নের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।

এছাড়াও নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সমন্বয়ে একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। আর মাঠপর্যায়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ওসিদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করা; ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে সদস্য নিয়োগ ও পাসিং আউট কার্যক্রমও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে হয় বলে জানা যায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুইটি পৃথক প্রস্তুতিমূলক মহড়া পরিচালনা করার পরিকল্পনাও হয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যেন না ঘটে, সেজন্য নজরদারি জোরদার, নির্বাচনের আগে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক প্রচারণা থেকে সতর্ক থাকা, নির্বাচনপূর্ব এবং নির্বাচনকালীন সময়ে সব সংস্থাকে একত্রে নিরপেক্ষভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রয়োজন রয়েছে বলে ইসি সূত্র জানায়।