সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে, সকালে কফি পান করাটা সারা দিনের অন্য যে কোনো সময় কফি পান করার তুলনায় স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী হতে পারে। ইউরোপীয় হার্ট জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে কফি গ্রহণের মাধ্যমে মৃত্যু ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। টুলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে গবেষণাটি পরিচালিত হয় এবং প্রায় এক দশক ধরে অংশগ্রহণকারীদের পর্যবেক্ষণ করা হয়।গবেষণার প্রধান লেখক ড. লু চি বলেন, ‘এটি প্রথম গবেষণা, যেখানে কফি পানের সময় এবং স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পর্যালোচনা করা হয়েছে। খাদ্যতালিকায় সময় নির্ধারণের পরামর্শ সাধারণত দেওয়া হয় না। কিন্তু ভবিষ্যতে হয়তো এ বিষয়ে ভাবা উচিত’।
অংশগ্রহণকারীদের কফি পানের ধরন
গবেষণায় ৪০,৭২৫ জন অংশগ্রহণকারীর তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। এতে কফি পানের দুটি আলাদা ধরন চিহ্নিত করা হয়েছে:
সকালবেলা: যারা মূলত ভোর সকাল ৪টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে কফি পান করতেন।
সারাদিন: যারা সারা দিনব্যাপী—সকাল, দুপুর (১২টা থেকে বিকাল ৫টা) এবং সন্ধ্যা (৫টা থেকে ভোর ৪টা)—কফি পান করতেন।
গবেষণার ফলাফল
প্রায় ১০ বছরের ফলো-আপ পর্যবেক্ষণ শেষে গবেষকরা দেখেন- যারা কফি পান করেন না তাদের তুলনায় সকালবেলায় কফি পানকারীদের মৃত্যু ঝুঁকি ১৬ শতাংশ কম ছিল। এছাড়া তাদের হৃদরোগের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি ৩১ শতাংশ কম ছিল।
অন্যদিকে সারাদিন কফি পানকারীদের মধ্যে এমন ঝুঁকি কমার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।
এই গবেষণা আরও ইঙ্গিত দেয় যে, কফি পানের সময়সূচি স্বাস্থ্যের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
কেন সকালে কফি পান উপকারী?
ড. চি বলেন, ‘গবেষণাগুলো এখন পর্যন্ত দেখিয়েছে যে, কফি পান করলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে না। বরং টাইপ-২ ডায়াবেটিসের মতো কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমে’।
অন্যদিকে সন্ধ্যা বা রাতে কফি পানের ফলে সার্কাডিয়ান রিদম এবং মেলাটোনিন হরমোনের স্তরে প্রভাব পড়তে পারে। এর ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
আলোচ্য গবেষণাটি মূলত কফি পানের সময়সূচি এবং পরিমাণের সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। সকালে কফি পান করলে এটি শুধু মানবদেহ ও মনের সতেজতাই বাড়ায় না, বরং দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যও কার্যকরী হতে পারে। সূত্র: এনডিটিভি