চালের মূল্যবৃদ্ধির সমস্যাটা সাময়িক বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, ‘আমার হাতে কোনো আলাদিনের চেরাগ নেই যে তাতে সুইচ দিলেই আগামীকাল বাজার ঠিক হয়ে যাবে।’আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় সচিবালয়ে সফররত তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী ওমর বোলাটের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা এ কথাগুলো বলেন।বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের তথ্য-উপাত্ত বলছে চালের মজুতে কোনো ঘাটতি নেই। তারপরও প্রস্তুতিমূলক পর্যায়ে যে ব্যত্যয়টা চালের বাজারে দেখছি, সেটাকে হ্যান্ডেল করার জন্য আমদানি আরও বেশি উদার করেছি। যদি কেউ অন্যায্যভাবে মজুত করে থাকেন তাহলে আমদানি শুরু হলে তাঁরা বাজারে চাল ছাড়তে বাধ্য হবেন। বাজারও তখন স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।’
এ সময়ে বাজার থেকে হাজার কোটি টাকা উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং মানুষের কষ্ট হচ্ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। আমার কাছে মনে হচ্ছে, সময়টা সাময়িক। আমার হাতে কোনো আলাদিনের চেরাগ নেই যে তাতে সুইচ দিলেই আগামীকাল বাজার ঠিক হয়ে যাবে।’বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, চালের বাজার নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। শুল্ক ৬৩ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে কয়েক লাখ টন চাল সরাসরি আমদানি হচ্ছে। চাল আমদানি করা হচ্ছে মিয়ানমার, পাকিস্তান ও ভারত থেকে। এখন আমনের ভরা মৌসুম চলছে। এপ্রিল নাগাদ বোরো ধান আসবে। আশা করা যায়, এর মধ্যেই বাজার ঠিক হয়ে যাবে।নতুন সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে কি না জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা যদি সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে দেন, তাহলে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হবে।’
দুর্নীতির কারণে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ৩৭ লাখ ফ্যামিলি কার্ড বাতিল করা হয়েছে বলেও জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘এক কোটি বলা হলেও ৬৩ লাখ ফ্যামিলি স্মার্ট কার্ডের বিপরীতে পণ্য দিচ্ছে টিসিবি। এক কোটি কার্ডের মধ্যে দুর্নীতি ছিল। একই পরিবারে একাধিক কার্ডও ছিল।’শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘যে ৩৭ লাখ কার্ড নেই তার মধ্যে প্রকৃত উপকারভোগী একজনও বাদ পড়েননি। যাঁরা সঠিক প্রাপক তাঁদের কাছেই পণ্য পাঠানো হচ্ছে। আমরা আরও ৩৭ লাখ কার্ড বাড়াতে চাই। এক কোটি থেকেও বাড়ানো গেলে সেটাও করব।’তুরস্কের সফররত প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, দুই দেশের মধ্যকার সামরিক বাণিজ্যে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশটি বাংলাদেশে অস্ত্র রপ্তানি করতে চায়। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ওষুধ, খাদ্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিনিয়োগে আগ্রহী তারা। তাই তুরস্কের জন্য আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চলও করা যেতে পারে।