
রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ও আহতদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী। আহতদের চিকিৎসার সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছেন প্রধান উপদেষ্টা। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় শনাক্ত করা যাবে না তাদের মৃতদেহ ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করে পরবর্তীতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়,রাজধানীর দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় শনাক্ত করা যাবে তাদের মৃতদেহ অতিসত্বর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। যাদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা যাবে না তাদের মৃত্যুদেহ ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করে পরবর্তীতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এতে আরও বলা হয়, আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন। চিকিৎসা কাজ নির্বিঘেœ করার স্বার্থে হাসপাতাল এলাকায় অহেতুক ভীড় না করার জন্য সর্বসাধারণকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে। এর আগে দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজেআই প্রশিক্ষণ বিমানটি উড্ডয়ন করে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানটি ১টা ১৮ মিনিটে বিধ্বস্ত হয়েছে। কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যালয় শাখার ক্যান্টিন লাগোয়া একটি ক্লাসরুম বিমান বিধ্বস্তে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষকেও ঘটনাস্থলে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
জানা গেছে, দুর্ঘটনার সময় মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে প্রথম শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস চলছিল। হঠাৎ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা দিশেহারা হয়ে পড়ে। অনেক শিক্ষার্থী কান্নায় ভেঙে পড়ে, কেউ কেউ আশেপাশের রুম থেকে দৌড়ে মাঠে ছুটে যায়। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই অভিভাবক-স্বজনরা ছুটে আসেন সন্তানদের খোঁজ নিতে। কলেজের প্রবেশপথে ও আশপাশে উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ধোঁয়ার কুÐলী আকাশে উড়তে দেখা গেছে। ভিডিওতে দুর্ঘটনাস্থলে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।
এদিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহেদ কামাল বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জন মারা গেছে। প্রেস উইং এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শতাধিক আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৮৩ জন রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
আইএসপিআর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজেআই প্রশিক্ষণ বিমান উত্তরায় বিধ্বস্ত হয়। ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান। তিনি জানান, চিকিৎসার কাজ নির্বিঘেœ করার স্বার্থে হাসপাতাল এলাকায় অহেতুক ভিড় না করতে সর্বসাধারণকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এর আগে দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমানটি উড্ডয়ন করে। পরে এটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।