
রাজধানীর মিরপুরে ৩০ রাউন্ড গুলি সহ যুবদলের ৩ নেতাকর্মীকে আটকের পর আসিফ শিকদার নামে এক যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে শাহআলী থানাধীন মিরপুর ১ নম্বরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে যৌথ বাহিনী। পরে হাসপতালে নেয়ার পথে ওই যুবদল নেতা মারা যান।
নিহতের পরিবারের দাবি অভিযানের সময় নির্যাতন চালিয়ে ভিকটিমকে হত্যা করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন আসিফ শিকদার, মো. শাকিল ও মো. সাইফুল। এর মধ্যে আসিফ শিকদার শাহআলী থানার ৯৩ নম্বর ওয়ার্ড (সাংগঠনিক ওয়ার্ড) ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব ও একই ওয়ার্ডের যুবদলের সেক্রেটারি পদপ্রার্থী, শাকিল শাহআলী থানার ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি পদপ্রার্থী ও মো. সাইফুল শাহআলী থানা যুবদলের সক্রিয় কর্মী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে যৌথবাহিনীর একটি টিম শাহআলী থানাধীন মিরপুর ১ নম্বর নিউ সি ব্লক এলাকার ২২ নম্বর রোডের একটি বাড়ি এবং এ ব্লকের ৭ নম্বর রোডের আরেকটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে যুবদলের ৩ নেতাকর্মীকে আটক করে। এ সময় আসামিদের কাছ থেকে ৩০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়ে। পরে আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাইন্সল্যাব এলাকার সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে জিঞ্জাসাবাদ শেষে ৩ আসামিকে শাহআলী থানায় হস্তান্তর করেন যৌথবাহিনীর সদস্যরা। এক পর্যায়ে দুপুর ১২ টার দিকে গ্রেফতারকৃত আসামি আসিফ শিকদারসহ অন্য ২ আসামি অসুস্থ হয়ে পড়লে শাহআলী থানার এসআই মো. আল ইমরান চিকিৎসার জন্য পুলিশের গাড়িতে করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ১ জনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে জানা গেছে নিহত যুবদল নেতা আসিফ শিকদারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি সহ শাহআলী থানা ঘেরাওয়ের মামলা রয়েছে। সম্প্রতি মিরপুর মডেল থানার একটি চাঁদাবাজির মামলায় তিনি জেল থেকে বের হয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ তারিখে আসিফ সহ ১৬ জনকে আসামি করে মিরপুর মডেল থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা হয়। মামলায় আসিফকে ৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
নিহতের চাচাতো ভাই সিয়াম বলেন, গতকাল ভোর রাতে যৌথবাহিনীর লোকজন বাসায় এসে আসিফকে বাসার মধ্যে একটি রুমের ভেতর আটকে রেখে আড়াই ঘন্টা ধরে নির্যাতন চালায়। তাকে ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়। পরে রাস্তায় নিয়েও তাকে পিটানো হয়। এ ঘটনার ভিডিও আমাদের কাছে আছে। এক পর্যায়ে মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে নিয়ে যায় যৌথবাহিনীর লোকজন।
শাহআলী থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে ৩ আসামিকে আটক করে সেনাক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযানে আসামিদের কাছ থেকে ৩০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। আজ সকালে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ৩ আসামিকে থানায় হস্তান্তর করতে চাইলে আমি আসামি গ্রহন না করে এসআই ইমরানকে জব্দ তালিকার জন্য ঘটনাস্থলে পাঠাই। এ সময় এসআই ইমরানের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর সদস্য ও আসামিরা ছিলেন। এক পর্যায়ে জব্দ তালিকা শেষ করে এসআই ইমরান থানায় ফিরে জানান, আসামিরা অসুস্থবোধ করছেন। টিমসহ দ্রুত আসামিদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠাই। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ জন মারা যান।
ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সভাপতি মো. রবিন খান বলেন, আসিফ এক সময় ছাত্রদল করতো। এখন যুবদল করে। সে যদি কোনো অপরাধ করে থাকে তাহলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করা উচিত ছিলো। আমরা বিচারবর্হিভূত কোন হত্যা সমর্থন করি না।