Image description

বিয়ের প্রলোভনে স্কুলছাত্রীকে (১৫) ধর্ষণের অভিযোগ উঠে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে পাঁচ মাসেও কোনো সুরাহা করেনি ধর্ষণকারীরা। পরে দিনমজুর বাবা বাধ্য হয়ে বিচার চাইলে সালিশের আয়োজন করে স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হাসিম উদ্দিন ভুইয়া। এরপর ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এর মধ্যে ছয় মাস পার হলেও ৯০ হাজার টাকা এখনো বাকি। 

পরে গতকাল বুধবার (৮ জানুয়ারি) সালিশকারীদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন মেয়ের বাবা। ময়মনসিংহের নান্দাইলের আঁচারগাঁও ইউনিয়নের কোনাঘাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ধর্ষণে অভিযুক্ত দুই যুবক হলেন, নান্দাইল উপজেলার আঁচারগাঁও ইউনিয়নের সিংদই গ্রামের মো. রতনের ছেলে মো. পারভেজ মিয়া(৩২) ও একই গ্রামের কামালের ছেলে শবি মিয়া (২৫)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বোনের শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গেলে ওই দুই যুবকের মাধ্যমে ধর্ষণের শিকার হয় এক স্কুলছাত্রী। পরে তাদের একজনের বিয়ের প্রলোভনে গোপনে গভীর সর্ম্পকে জড়িয়ে অন্তস্বত্ত্বা পড়ে সে। এক পর্যায়ে বিয়ের জন্য চাপ দিলেও প্রায় পাঁচ মাস চলে যায়। বিয়ে না করায় সমাজের কাছে বিচার চান স্কুলছাত্রীর দিনমজুর বাবা।

অবশেষে সালিশ দরবারের আয়োজন করে স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হাসিম উদ্দিন ভুইয়া। তিনি তার দলবল নিয়ে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা ধরে এবং ওই টাকার ৮০ হাজার টাকা দেওয়া হয় মেয়ের বাবাকে। আর বাকি টাকা পরে দেবে বলে বিদায় করা হয়। 

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, ধর্ষক দুই যুবকের বাড়ির কাছেই নির্যাতনের শিকার স্কুল ছাত্রীর চাচাতো বোনকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বেড়াতে যাওয়ার সময় দুই যুবক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করে।

ওই সময় ঘটনাটি বেশ প্রচার হলেও বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। সালিশের বিচার, মেয়ের গর্ভপাত ও বাড়ি ছাড়ার ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক প্রচার হয়। ঘটনাটি নিয়ে কালের কণ্ঠ একাধিক প্রতিবেদন করলে বিষয়টি পুলিশরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছাড়াও বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থার নজরে আসে। পরে নান্দাইল থানা পুলিশ অজ্ঞাত স্থান থেকে স্কুল ছাত্রীর বাবাকে ডেকে এনে অভিযুক্ত দুইজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ নেয়। এর মধ্যে ক্ষোভ ও কষ্টে স্কুল ছাত্রীর বাবা বিচারের নামে জরিমানার টাকা আত্মসাৎ ও প্রহসন করায় সালিশকারী মোবারক, ফখর উদ্দিন ভুইয়া, রিয়াজ উদ্দিন, রুবেল মিয়া, রতন মিয়া, রোস্তম আলী, হাসিম উদ্দিন ভুইয়া ও আব্দুল হককে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ করেন। 

স্কুল ছাত্রীর বাবা জানান, লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর থেকেই তাকে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে নান্দাইল থানার ওসি ফরিদ আহম্মেদ জানান, এ ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া ছাড়াও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।