Image description

ঢাকার আশুলিয়ায় দলিল লেখকদের আন্দোলনের কারণে জমির দলিল সম্পাদন কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে জমি কেনাবেচা। জমির দলিল সম্পাদন করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। একই সঙ্গে সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেলের ভাষ্য মতে, আশুলিয়া দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন, মোতালেব, করিম, দিলবরসহ আরো কয়েকজনের ইন্ধনে ভিত্তিহীন আন্দোলনে নেমেছেন দলিল লেখকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে এক মাস ধরে দলিল লেখার কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন দলিল লেখকরা। এতে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমির দলিল সম্পাদন কার্যক্রম প্রায় বন্ধ রয়েছে। যারা স্ব-উদ্যোগে অন্যত্র থেকে দলিল লিখে তা সম্পাদন করতে আসছেন, তাদেরও ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন আলমগীর হোসেনের সমর্থকরা।

সাব-রেজিস্ট্রার খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেল বলেন, তার কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা না পেয়ে কয়েকজন দলিল লেখক ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছেন। এদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আশুলিয়া দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন। তিনিসহ আরো কয়েকজনের ইন্ধনে জোর করে বন্ধ রাখা হয়েছে দলিল লেখকদের কক্ষ। পে-অর্ডার করতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। স্ব-উদ্যোগে অন্যত্র থেকে দলিল লিখে সম্পাদন করতে আসায় আমির হোসেন নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে মারধর করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত মব সৃষ্টির মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। পরিকল্পিতভাবে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অচলাবস্থা সৃষ্টি করায় রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। সাধারণ সেবাপ্রত্যাশীরা তাদের ন্যায্য সেবাপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সাব-রেজিস্ট্রার খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেল আরও বলেন, ‘আশুলিয়া দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন ভুয়া খাজনা দিয়ে একটি দলিল সম্পাদন করাতে চেয়েছিলেন। আমি তা গ্রহণ করিনি। এছাড়া বিভিন্ন সময় তার অনৈতিক দাবির কাছে মাথা নত না করায় তিনি আমার ওপর ক্ষুব্ধ হন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমেছেন।’

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দলিল লেখক বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আলমগীর হোসেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে থেকে বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক বনে গেছেন। এখন আবার সেই আধিপত্য ফিরে পেতে ঘনিষ্ঠ কিছু দলিল লেখদের নিয়ে ষড়যন্ত্রে নেমেছেন।

সেবাপ্রত্যাশী ভুক্তভোগীরা জানান, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গত ১৭ জুন থেকে এ ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত সমাধান না হলে এ সংকট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আশুলিয়া দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘সাব-রেজিস্ট্রার পাভেলের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে আমরা তার অপসারণ চাই।’

শীর্ষনিউজ