
পুরান ঢাকায় মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় আসামি নান্নু কাজীসহ তিনজনকে সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুজ্জামান রিমান্ডে নেওয়ার এই নির্দেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন আদালতের কোতোয়ালি থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই তানভীর আহমেদ।
রিমান্ডে নেওয়া অপর দুই আসামি হলেন রেজওয়ান উদ্দিন ওরফে অভিজিৎ বসু ও তারেক রহমান রবিন।
আজ বিকেলে আসামি নান্নু কাজী ও রেজওয়ান উদ্দিনকে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। তারেক রহমান রবিনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মনিরুজ্জামান প্রত্যেককে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের সাত দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গতকাল মঙ্গলবার রেজওয়ান উদ্দিনকে পটুয়াখালী থেকে আটক করা হয়। এর আগের দিন নান্নু কাজীকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক করা হয়। এর আগে ৯ জুলাই তারেক রহমান রবিনকে আটক করা হয়। তাঁর কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল উদ্ধার হওয়ায় প্রথমে তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়। ওই মামলায় রিমান্ডে নেওয়ার পর তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে রবিনকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
১০ জুলাই সোহাগ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার মাহমুদুল হাসান মহিনকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল আবার পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
এরপর ১১ জুলাই আসামি টিটন গাজীকে পাঁচ দিন, ১২ জুলাই আলমগীর ও মনির ওরফে লম্বা মনিরকে চার দিন এবং ১৪ জুলাই সজীব ব্যাপারী ও রাজীব ব্যাপারীকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
৯ জুলাই মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় সোহাগকে (৩৯)। এর দুদিন পর হত্যাকাণ্ডটির একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান নেটিজেনরা।
এ ঘটনায় নিহত সোহাগের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বাদী বলেন, সোহাগ দীর্ঘদিন ধরে পুরান ঢাকার ওই এলাকায় ব্যবসা করায় ব্যবসায়িক বিভিন্ন বিষয়সহ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আসামিদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে তাঁরা সোহাগের গুদাম তালাবদ্ধ করে রেখেছিলেন। সেই সঙ্গে তাঁকে এলাকাছাড়া করতে নানা রকম ভয় দেখিয়ে আসছিলেন। ৯ জুলাই সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে তাঁরা পরিকল্পিতভাবে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সোহাগের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বের করেন। তাঁকে মারধর করতে করতে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের ভেতরে নিয়ে যান। সেখানে রড, লাঠি, সিমেন্টের ব্লক বা ইট দিয়ে তাঁকে আঘাত করেন। একপর্যায়ে সোহাগ নিস্তেজ হয়ে ড্রেনের পাশে লুটিয়ে পড়েন। তখন তাঁর নিথর দেহ টেনে হাসপাতালের সামনের রাস্তায় নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।