
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই শীর্ষ ৩ ইরানি কর্মকর্তার খোঁজে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে। তাদের গ্রেপ্তারে তথ্য চেয়ে পোস্টার প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। ওই ইরানি কর্মকর্তাদের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকাভুক্ত করার ঘোষণা দিয়ে এফবিআই বলেছে, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনতে একাধিক দল কাজ করছে। খবর ইরান ইন্টারন্যাশনালের।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এফবিআই ৩ ইরানি কর্মকর্তার ছবিসহ পোস্টার প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, অবসরপ্রাপ্ত এফবিআই এজেন্ট রবার্ট লেভিনসনের অপহরণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজন ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে তাদের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে বর্তমানে পাকিস্তানে ইরানের রাষ্ট্রদূতও রয়েছেন। ধারণা করা হয় লেভিনসন মারা গেছেন।
এফবিআইয়ের ওয়াশিংটন ফিল্ড অফিস কর্তৃক প্রকাশিত তিন ব্যক্তি হলেন- রেজা আমিরি মোঘাদাম, তাগি দানেশভার ও গোলামহোসেন মোহাম্মাদনিয়া।
রেজা আমিরি মোঘাদাম বর্তমানে পাকিস্তানে ইরানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাগি দানেশভারের গোয়েন্দা এবং সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের পটভূমি রয়েছে বলে বর্ণনা করা হয়েছে। আর গোলামহোসেন মোহাম্মাদনিয়া পূর্বে আলবেনিয়ায় ইরানের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।
এফবিআইয়ের মতে, তিনজনই ইরানের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের (এমওআইএস) সাথে যুক্ত। জিম্মি, অপহরণ এবং বিদেশে আমেরিকানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মূল খেলোয়াড় হিসেবে তাদের চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই ব্যক্তিরা ইতিমধ্যে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন। এবার তারা ইরানে আমেরিকান নাগরিকদের অপহরণ ও অন্যায়ভাবে আটকের ঘটনার সাথে যুক্ত বলে তালিকাভুক্ত হলেন।
এ ব্যাপারে সিনেটর জিম রিশ এক্স-এ লিখেছেন, লেভিনসন একজন নিবেদিতপ্রাণ এবং দেশপ্রেমিক আমেরিকান। তাকে অপহরণের জন্য ইরানকে জবাবদিহি করতে এফবিআই কাজ করছে দিচ্ছে।
তিনি আরও লিখেন, এই নতুন পোস্টারগুলো তার অপহরণ সম্পর্কিত তথ্য চাচ্ছে। আমরা লেভিনসন ও তার পরিবারকে কখনো ভুলব না। তার অপরাধের জন্য দায়ীদের জবাবদিহি করা হবে।
লেভিনসন ২০০৭ সালে ইরানের কিশ দ্বীপে একটি অননুমোদিত সিআইএ মিশনে থাকাকালীন নিখোঁজ হন। মার্কিন কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, তিনি ইরানি হেফাজতে মারা গেছেন। যদিও তেহরান কখনো তাকে আটক করার কথা স্বীকার করেনি এবং তার জড়িত থাকার বিষয়ে অস্বীকার করে চলেছে।
২০২০ সালে লেভিনসনের পরিবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানায়, মার্কিন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তারা উপসংহারে পৌঁছেছেন যে তিনি ইরানি হেফাজতে থাকাকালীন মারা গেছেন।
এফবিআই পূর্বে দুই ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা মোহাম্মদ বাসেরি ও আহমদ খাজাইয়ের গ্রেপ্তারের জন্য তথ্যের বিনিময়ে ২৫ মিলিয়ন ডলারের পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। ওই দুজনও লেভিনসনের অপহরণ, আটক এবং সম্ভাব্য মৃত্যুর জন্য দায়ী বলে অভিযোগ করে আসছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।