Image description
 

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বাসের ধাক্কায় নিহত হন ছয়জন যাত্রী। তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই দুর্ঘটনায় আহত দুই পরিবারের পাঁচ সদস্যকে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কারণও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

ওই দুর্ঘটনায় ভুক্তভোগী দুই ব্যক্তির করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (১৪ জুলাই) বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন। পাশাপাশি সড়ক পরিবহন আইনের ৩টি ধারার বিধান (আইনের ৯৮, ৯৯ ও ১০৫ ধারা) সংশোধন প্রশ্নে রুল হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফজলুর রহমান, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শামসুর রহমান (বাদল) ও মো. রিপন হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।

 

এর আগে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। টোল পরিশোধের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দেয় ‘বেপারি পরিবহন’-এর একটি বাস, যার ফলে যানগুলো দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে প্রাইভেটকারে থাকা একই পরিবারের চারজন এবং মোটরসাইকেলের দুই আরোহী প্রাণ হারান। এ ঘটনায় দুই পরিবারের পাঁচজনসহ আরও বেশ কয়েকজন আহত হন।

 

পরিবারের সদস্য হারানো প্রাইভেটকারের মালিক নূর আলম এবং নিহত মোটরসাইকেল আরোহী সুমন মিয়ার পক্ষ থেকে গত ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়।

 

ভুক্তভোগী দুই ব্যক্তির পক্ষে দায়ের করা রিট আবেদনে সড়ক পরিবহন আইনের ৯৮, ৯৯ ও ১০৫ ধারা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আইনটির ৯৮ ধারায় বলা হয়েছে, ওভারলোডিং বা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে মোটরযান চালিয়ে জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করলে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। ৯৯ ধারায় অপরাধে সহায়তা, প্ররোচনা ও ষড়যন্ত্রের দণ্ড এবং ১০৫ ধারায় দুর্ঘটনাজনিত অপরাধের শাস্তির বিধান রয়েছে।

রিটকারীদের আইনজীবী শামসুর রহমান বলেন, বেপরোয়া বা অবহেলাজনিত মোটরযান চালনার ফলে কেউ গুরুতর আহত হলে বা প্রাণ হারালে দোষী ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড, বা পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। কিন্তু এমন গুরুতর অপরাধের জন্য এই শাস্তি যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন তিনি। তাই আইনের ৯৮, ৯৯ ও ১০৫ ধারাগুলো সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সেগুলো কেন পরিবর্তন বা সংশোধন করা হবে না- তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন।