
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশে পুশ ইন করা ৭২ বছর বয়সি এক ভারতীয় বৃদ্ধাকে খুঁজে পেতে তার ছেলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। ৩৩ বছর বয়সি আব্দুল সুবহান ১ জুলাই আসামের হোজাইয়ের পুলিশ সুপার (সীমান্ত) এর কাছে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন, যেখানে তার অসুস্থ মা মিসমা খাতুনকে উদ্ধারের জন্য জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
আব্দুল সুবহান লিখেছেন, ২০২৫ সালের ২৪ মে বিকাল ৫টার দিকে, হোজাই পুলিশ কর্মকর্তারা আমার মাকে বিদেশি ট্রাইব্যুনাল মামলার (এফটি মামলা নং/জো/১৩) সঙ্গে সম্পর্কিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমাদের জন্মস্থান থেকে নিয়ে যান। তাকে হেফাজতে নেয়ার পর, আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি যে, আমার মাকে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়েছে। পরে আমরা শুনেছি যে, তিনি বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফিরে এসেছেন, কিন্তু তারপর থেকে আমরা আর কোনো তথ্য পাইনি। কর্তৃপক্ষকে আমার বৃদ্ধা মাকে খুঁজে বের করার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানাই।
এ ব্যাপারে সুবহান বলেন, আমরা ভারতীয় নাগরিক। আমার দাদা, বাবা এবং মা সকলের নাম অতীতের একাধিক ভোটার তালিকায় রয়েছে। আমাদের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় সকল নথিপত্র রয়েছে।
কেন তার মাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো জানতে চাইলে তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, হোজাইয়ের নন্দপুর চারিয়ালির লঙ্কাজান দর্জিসিতে তার পরিবারের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিলো।
আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা ২০১১ সালে স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের করে দাবি করে যে, আমরা বাংলাদেশি নাগরিক। আমার মাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছিলো, কিন্তু পরে সুপ্রিম কোর্ট আমাদের পক্ষে রায় দেয় এবং আমাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব নিশ্চিত করে। পরে আমার মাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
সুবহানের মতে, সম্প্রতি তার মাকে পুলিশ সুপার সাক্ষ্য দেয়ার জন্য তলব করেছিলেন এবং পরে আরো ৬৫ জনকে নিয়ে তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিলো।
সুবহান বলেন, খবর শোনার পর, আমরা সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ক্যাম্পে যাই এবং আমাদের নাগরিকত্ব প্রমাণকারী সমস্ত নথি জমা দিই। এরপর বিএসএফ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করে এবং কিছু ব্যক্তিকে ফিরিয়ে আনে। কিন্তু তারপর থেকে আমি আমার মাকে খুঁজে পাইনি।
সুবহান বলেন, খবর শোনার পর, আমরা সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ক্যাম্পে যাই এবং আমাদের নাগরিকত্ব প্রমাণকারী সমস্ত নথি জমা দিই। এরপর বিএসএফ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করে এবং কিছু ব্যক্তিকে ফিরিয়ে আনে। কিন্তু তারপর থেকে আমি আমার মাকে খুঁজে পাইনি।
এদিকে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন যে, বিএসএফ নিয়মিত পুশ ইন করছে, যার মধ্যে ভারতীয় নাগরিক এবং রোহিঙ্গারাও রয়েছেন-যা মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন। পুশ ইন চলছে। মাঝে মাঝে এটি কয়েক দিনের জন্য থেমে থাকে, কিন্তু প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
তিনি বলেন, আমরা একটি পদ্ধতিগত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। যদি কোনও বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে, তাহলে আমরা বিএসএফের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠকের মাধ্যমে তাদের প্রত্যাবাসন করতে ইচ্ছুক। কিছু ক্ষেত্রে, বিএসএফ এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হস্তান্তর করে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে, তারা তা করে না এবং পুশ ইন অব্যাহত থাকে।
শীর্ষনিউজ