
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রদীপ রায়কে সিলেট নগরীর একটি ভাড়া বাসা থেকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। পরে পুলিশ তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। বুধবার (৯ জুলাই) রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে সিলেটের সুবিদবাজারের লন্ডনি রোড এলাকার ওই বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সিলেট জালালাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ নেতা প্রদীপ রায়কে স্থানীয় জনতা আটক করলে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জে একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের জারুলিয়া জলমহালের দখল নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। ওই ঘটনায় প্রদীপ রায়সহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। তবে পুলিশি তদন্ত শেষে চার্জশিটে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর দিরাইয়ের ভাটিপাড়া জলমহাল নিয়ে সংঘর্ষে আরও একজন নিহত হলে সেই মামলাতেও তার নাম আসে।
গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দিরাই-শাল্লা অঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে আসছিলেন প্রদীপ রায়। বিভিন্ন সময় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে তার নাম জড়ালেও তিনি স্থানীয়ভাবে দলীয় শক্তি দিয়ে তা সামাল দিয়েছেন। সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। তার ছোট ভাই বিশ্বজিৎ রায়ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে দিরাই পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন।
সরকার পরিবর্তনের পর প্রদীপ রায় ও তার ভাই আত্মগোপনে চলে যান। সম্প্রতি তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর বিএনপি কর্মীরা স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় বলে জানা গেছে।