Image description

দেশে ব্যক্তি স্বার্থে কাউকে ফাঁসানোর অন্যতম মাধ্যম এখন বৈষম্য বিরোধী মামলা। আসামি করা হচ্ছে মনগড়া তথ্য আর মিথ্যা রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে। কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই গ্রেপ্তার হচ্ছেন নিরপরাধ ব্যক্তি। নিহতের নিকটাত্মীয় ছাড়া বেশিরভাগ বাদীর উদ্দেশ্য অসৎ।

 

গত দুই মাসেও কন্যা সন্তানের নামটাও রাখতে পারেননি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মা আফরিন হাসান মুন্নী। এই নারীর স্বামী পেশায় ব্যবসায়ী ইসমাইল প্রধানিয়ার বিরুদ্ধে হয়েছে ৬টি মামলা। অভিযোগ, ৫ আগস্ট সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে আশুলিয়া, যাত্রাবাড়ী, পল্টন ও ভাটারায় গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে সে। প্রতিটি মামলায় ব্যবহার করা হয়েছে ইসমাইলের ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক পরিচয়। কোথাও দেখানো হয়েছে রমনা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদকের মিথ্যা পরিচয়, আবার কোথাও যুবলীগ নেতা। 

জানা যায়, জুলাই আন্দোলনে নিহত রিয়াজের স্ত্রী ছাড়াও একই ঘটনায় মামলা করেছে জাহিদুল নামের এক ব্যক্তি, যেখানে আসামি ইসমাইল। এই জাহিদুলের বিরুদ্ধেই আছে প্রতারণাসহ ৬টি অভিযোগ। ইসমাইলের স্বজনদের দাবি, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে নাসির উদ্দিন দুলাল নামের এক ব্যক্তির প্ররোচনায় এসব মামলা হয়েছে।

ভুক্তভোগী ইসমাইলের স্ত্রী বলেন, একই দিনে একজন মানুষ কীভাবে এতগুলো জায়গায় গিয়ে হত্যা করতে পারে। হত্যা মামলায় আসামি ধরতে আসছেন আপনারা কী তদন্ত করে আসেননি? তখন ডিবির কর্মকর্তারা বললো আমরা ধরে নিয়ে তদন্ত করবো। 

তিনি বলেন, আমার স্বামী বাচ্চাটার সঙ্গে একটু থাকতেও পারেনি, আমি হসপিটালে থাকার সময় তাকে ধরে নিয়ে গেছে। আমাদের ওপর যে কি যাচ্ছে সেটা আমরাই জানি। 

ইসমাইলের ভাই বলেন, বিভিন্ন দলের পদবি দিয়ে তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে, হয়তো একটা সময় আসবে সে নির্দোষ প্রমাণিত হবে। কিন্তু সে যে জেলে গেলো ভুক্তভোগী হইলো এটার দায় কে নেবে।

এদিকে দুলালের খোজে তার ফরচুন শপিং মলের বাসায় যায় চ্যানেল 24। জানা যায়, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের দায়ে পলাতক রয়েছে সে। দুলালের বিরুদ্ধে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি সেঁটেছে এলাকাবাসী।

অন্যদিকে ৬টি হত্যায় ব্যবসায়ী ইসমাইল প্রধানিয়ার সম্পৃক্ততা জানতে বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মামলার এজাহারে দেয়া সাদ্দাম হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, মাসুদ রানার মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। তবে আবুল হোসেন নামে একজন ফোন রিসিভ করে সাংবাদিক পরিচয় জেনে লাইন কেটে দেন।

এদিকে আইনি লড়াইয়ে গেল ১৮ জুন জামিন হয় ইসমাইল প্রধানিয়ার। কিন্তু জামিনের পর, ভাটারা থানার আলাদা মামলায় নতুনভাবে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। অভিযোগ আছে, নাম পরিচয় জালিয়াতি করা হয়েছে নতুন মামলায়। যা নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পুলিশে তদন্ত ও আদালতের জিআর শাখার কর্মকর্তার।

পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, না আমি ওটা যাচাই করতে পারিনি, আমাদের বলা হয় শোন এরেস্ট দেখান। জাস্ট নাম ঠিকানা, পদ-পদবি দেয়া হয়। সময় সুযোগ না থাকায় আমরা দিয়ে দেই। পরে জিআর ওপর থেকে বলছে উনার তো পদ পদবি আছে সেটা যোগ করে দেন।

আদালতের জিআর শাখার কর্মকর্তা বলেন, না না আমি কিভাবে বলবো, আমি আরও খুঁজলাম এমন কোনো তথ্য আছে কিনা। না এরকম কোনো তথ্য আমার কাছে নাই।