Image description
অংশীজনের আপত্তি

দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের লাইসেন্স কাঠামোর পুনর্বিন্যাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের করা খসড়া নীতিমালা ঘিরে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। এ নীতিমালা নিয়ে অংশীজনের আপত্তির পর দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে এই ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলে এ বিতর্কের পালে আরও হাওয়া লাগে। টেলিযোগাযোগ খাতের অংশীজনের মতে, কোনোরকম আলোচনা না করেই এ নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এ নীতিমালার বাস্তবায়ন হলে দেশীয় উদ্যোক্তারা সংকটে পড়বেন, লাভবান হবেন টেলিকম অপারেটরসহ বিদেশি উদ্যোক্তারা।

বিএনপিও তাদের এ মতের সঙ্গে সহমত পোষণ করে সরকারকে প্রস্তাবিত এ নীতিমালা থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে সরকারের দিক থেকে বলা হচ্ছে, গ্রাহকের ভয়েস কল ও ডাটার খরচ কমানোর জন্যই নতুন নীতিমালা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিগত সরকারের আমলে যারা এ ব্যবসায় সুবিধা নিয়েছেন, তারাই এর বিরোধিতা করছে বলেও অভিযোগ সরকারের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, টেলিযোগাযোগ খাতের লাইসেন্স কাঠামোর পুনর্বিন্যাসের জন্য সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উদ্যোগে গত এপ্রিলে ‘টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক অ্যান্ড লাইসেন্সিং রিফর্ম পলিসি-২০২৫’ শীর্ষক খসড়া নীতিমালাটি করা হয়। এটি প্রকাশের পরপরই অংশীজনদের পক্ষ থেকে তার উদ্দেশ্য ও বাস্তবায়ন নিয়ে আপত্তি ওঠে। এমন প্রেক্ষাপটে খসড়া পর্যালোচনা করে মতামত দিতে গত ১৯ জুন প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করে দেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। তবে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের মতো একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে মতামত দিতে যেসব কর্মকর্তাকে নিয়ে ১১ সদস্যের এ কমিটি গঠিত হয়, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে (প্রশাসন)। অন্য ১০ সদস্যের মধ্যে রয়েছেন বিভাগের যুগ্ম সচিব (টেলিকম), টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিটিআরসির মহাপরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস), বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও ক্রয়), বিটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (নেটওয়ার্ক প্ল্যানিং), বিটিআরসির একজন উপপরিচালক এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের একজন উপসচিব/সিনিয়র সহকারী সচিব।

টেলিকম বিশেষজ্ঞদের মতে, জটিল ও কারিগরিবিষয়ক এ নীতিমালা পর্যালোচনায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রশাসন শাখার একজন কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এ কমিটিতে অপারেটরসহ সংশ্লিষ্ট কোনো অংশীজনকেই রাখা হয়নি, যা দৃশ্যত একপক্ষীয় হিসেবে চিহ্নিত হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই কমিটিতে শুধু বিটিসিএল, টেলিটক, সাবমেরিন কেবল কোম্পানির মতো রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির কর্মকর্তাদের সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। অথচ রাষ্ট্রায়ত্ত এসব কোম্পানির রাজস্ব ভাগাভাগির বিপুল অঙ্কের টাকা বকেয়া রয়েছে বিটিআরসির কাছেই। বিটিসিএলের টেলিযোগাযোগ খাতের প্রায় সব ধরনের লাইসেন্স রয়েছে; কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি কোনো ক্ষেত্রেই ব্যবসায়িক সফলতা পায়নি। বিটিআরসির নীতিমালা লঙ্ঘন করে একাধিক প্রকল্প হাতে নেওয়ারও নজির রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের। একই সঙ্গে টেলিযোগাযোগ খাতের প্রকল্প নিয়ে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির অভিযোগও বিটিসিএলের বিরুদ্ধেই। টেলিটক দেশে একেবারেই রুগণ মোবাইল ফোন অপারেটর। এই অপারেটরের কাছে অন্য তিনটি অপারেটরের তুলনায় অনেক বেশি বেতার তরঙ্গ, ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সক্ষমতা এবং জনবল থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি কখনই বাজারে প্রতিযোগিতায় আসতে পারেনি।

অন্যদিকে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে বার বার আলোচনায় এসেছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি। ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের পাইকারি বাজারে একচেটিয়া প্রভাব থাকলেও দীর্ঘ সময় ধরে নানা অনিয়মের কারণে কোম্পানিটি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী লাভের মুখ দেখেনি কখনই, বরং কাগজ-কলমে দেখানো লাভের হিসাবে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে বার বার। এসব ব্যর্থ ও অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা একটি জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় নীতিমালা তৈরির কমিটিতে থেকে কি অবদান রাখবেন, সেটা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেয়।

কী আছে খসড়ায়: টেলিকম খাতের লাইসেন্স কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে এ খসড়ায়। এক্ষেত্রে সেলুলার মোবাইল সার্ভিস ও ফিক্সড টেলিকম সার্ভিসের জন্য পৃথক একটি অ্যাকসেস নেটওয়ার্ক সার্ভিস প্রোভাইডার (এএনএসপি) লাইসেন্স দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এএনএসপিগুলো গ্রাহক পর্যায়েও সেবা দেওয়ার জন্য দায়বদ্ধ থাকবে। জাতীয় পর্যায়ে অবকাঠামো ও ট্রান্সমিশন সেবা যেমন ফাইবার, টাওয়ার ও নেটওয়ার্ক ট্রান্সমিশন পরিচালনার জন্য ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড কানেক্টিভিটি সার্ভিস প্রোভাইডার (এনআইসিএসপি) লাইসেন্স দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক ভয়েস, ইন্টারনেট ও ডাটা সংযোগের জন্য নিতে হবে ইন্টারন্যাশনাল কানেক্টিভিটি সার্ভিস প্রোভাইডার (আইসিএসপি) লাইসেন্স। স্যাটেলাইট, নন-টেরিস্ট্রিয়াল নেটওয়ার্কস (এনটিএন) ও হাই-অলটিটিউড প্ল্যাটফর্মস (এইচএপি) ভিত্তিক সেবার জন্য নন-টেরিস্ট্রিয়াল নেটওয়ার্কস অ্যান্ড সার্ভিস প্রোভাইডার (এনটিএনএসপি) লাইসেন্স নিতে হবে। তাছাড়া এসএমএস এগ্রিগেটর, ওটিটি ইত্যাদি সেবার জন্য টেলিকম এনাবলড সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে হবে। নতুন এ নীতিমালা কার্যকর হওয়ার পর আইজিডব্লিউ, আইআইজি, আইসিএক্স, এনআইএক্স, এমএনপি লাইসেন্সগুলো ধীরে ধীরে বাতিল হয়ে যাবে। তবে এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবসা করতে হলে ২০২৭ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নতুন কাঠামো অনুসারে লাইসেন্স নিতে হবে।

প্রস্তাবিত এ নীতিমালায় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদেশি মালিকানার সীমাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে এএনএসপি লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ বিদেশি মালিকানা থাকতে পারবে। এনআইসিএসপি লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫৫ শতাংশ বিদেশি মালিকানার সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে তা ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। আইসিএসপি লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিদেশি মালিকানার সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বোচ্চ ৪৯ শতাংশ। নতুন এ নীতিমালায় মোবাইল ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ক অপারেটর (এমভিএনও) চালুর কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি এসএমপি (সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার) প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে একচেটিয়া প্রাধান্য বিস্তার করতে না পারে সেজন্য এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের ওপর বিশেষ নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে। তাছাড়া ব্যয় কমানো ও সেবার পরিধি বাড়াতে অবকাঠামো ভাগাভাগি করা হয়েছে বাধ্যতামূলক। এ নীতিমালা অনুসারে সাইবার নিরাপত্তা আইন, জাতীয় তথ্য আইন ও ডাটা সুরক্ষা নীতিমালা মেনে চলতে হবে। আইনি অনুমোদনের ভিত্তিতে আড়ি পাতার সুযোগ রাখার কথাও বলা হয়েছে এতে। শুধু শহরে সেবা চালুর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে গ্রাম ও অনুন্নত এলাকায়ও সেবা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে ভর্তুকি, ছাড় ও বিশেষ তহবিলের সুবিধা পাওয়া যাবে।

পর্যায়ক্রমে নতুন এ নীতিমালা বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। প্রথমে এটি কার্যকরের পর প্রয়োজনীয় বিধিমালা সংশোধন হবে। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ে শুরু হবে নতুন লাইসেন্স ইস্যু। সবশেষে ২০২৭ সালের ৩০ জুনের মধ্যে পুরোনো সব লাইসেন্স বাতিল হয়ে নতুন লাইসেন্স কার্যকর হবে।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন এ নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে দেশে আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদানকারী ২৩টি আইজিডব্লিউ এবং আন্তঃঅপারেটর সেবাদানকারী ২৪টি আইসিএক্স প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হয়ে যাবে। অথচ আইসিএক্স অপারেটররা তাদের আয়ের অর্ধেকই সরকারকে দেয়। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সরকার রাজস্বও পায়। নতুন নীতিমালা অনুসারে এটি স্থানান্তরিত হয়ে চলে যাবে মোবাইল অপারেটরদের কাছে, যার সিংহভাগ মালিকানাই বিদেশিদের হাতে। এতে সরকার রাজস্ববঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যাবে স্থানীয় এ প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসাও। কর্মহীন হয়ে পড়বে কয়েক লাখ লোক।

এর আগে টেলিকম পলিসির খসড়া প্রকাশ হওয়ার পরই এ বিষয়ে নিজেদের উদ্বেগ জানায় অ্যাসোসিয়েশন অব আইসিএক্স অপারেটরস অব বাংলাদেশ। সংগঠনটির মতে, এ নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে হাজার হাজার পরিবারের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে, যা দেশের অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী টেলিকম খাতের নিয়ন্ত্রণ মূলত বিদেশি বড় কোম্পানিগুলোর হাতে চলে যাবে।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের সাবেক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আইন অনুযায়ী এ ধরনের নীতিমালা তৈরির দায়িত্ব বিটিআরসির। বিটিআরসি সেটা করেছে। এখন এ খাতের অংশীজন এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে এ নীতিমালা পরিমার্জন করে চূড়ান্ত করার কথা। তবে সংশোধিত টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে অনুমোদনের কথা রয়েছে। এ অবস্থায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ যেভাবে পর্যালোচনা কমিটি গঠন করেছে সে কমিটি কোনোভাবেই এ ধরনের কারিগরি নীতিমালার ক্ষেত্রে মতামত দেওয়ার জন্য উপযুক্ত নয়।’

সাবেক এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এই কমিটিতে এমন কিছু প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সদস্য হিসেবে আছেন, যেসব প্রতিষ্ঠান বারবার নীতিমালা লঙ্ঘনের জন্য খোদ বিটিআরসি কর্তৃক অভিযুক্ত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে যথাযথ সুপারিশ আশা করা যায় না।’

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আমিনুল হাকিম কালবেলাকে বলেন, ‘ঘন ঘন নীতিমালার পরিবর্তন আমাদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করে। আমরা যারা ফিক্সড টেলিকম অপারেটর রয়েছি, তারা সবাই স্থানীয় উদ্যোক্তা এবং এর ৯৫ শতাংশই আবার ছোট উদ্যোক্তা। এনটিটিএন অপারেটরদের নতুন নীতিমালায় এনআইসিএসপি বলা হচ্ছে। তাদের নামে-বেনামে ফিক্সড টেলিকম অপারেটরের লাইসেন্স রয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে যে, ফিক্সড টেলিকম অপারেটর চাইলে লাস্ট মাইলে চলে যেতে পারবে। যেহেতু তাদের নামে-বেনামে অন্যান্য লাইসেন্স রয়েছে, সেহেতু তাকে এটা বলার মানে হলো যে, লাস্ট মাইলে ফাইবার অপটিকস আবার চলে যাবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের জন্য কোনো সুরক্ষা থাকছে না।’

এদিকে টেলিকম খাতের খসড়া নীতিমালা নিয়ে আইএসপিএবি এবং আইসিএক্স-এর সঙ্গে সহমত পোষণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে বিএনপি। রাজনীতির বাইরে এসে টেলিকমের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘টেলিকম খাতের পলিসি নির্ধারণে সরকার তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।’

খসড়া নীতিমালাটি বিশ্লেষণ করে কিছু গুরুতর সমস্যা পাওয়া গেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘টেলিকম খাতে সমতাভিত্তিক ও টেকসই উন্নয়নে বাধা হতে পারে এ নীতিমালা। এটা ছোট ও মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় উদ্যোক্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই, এ গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা যেন পূর্ণাঙ্গ আর্থিক ও সামাজিক প্রভাব বিশ্লেষণ এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে অংশগ্রহণমূলক আলোচনার পর চূড়ান্ত করা হয়।’

খসড়া নীতিমালার সম্ভাব্য সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের দিক তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একাধিক সেবা খাতে মালিকানা রাখার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে বড় মোবাইল অপারেটররা একাধিক খাতে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এতে প্রতিযোগিতা কমে যাবে এবং ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো পিছিয়ে পড়বে।’ বিএনপির এমন বক্তব্যের পর খসড়া এ টেলিকম নীতিমালা নিয়ে বিতর্ক আরও তুঙ্গে উঠেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো এ ধরনের বিষয়ে মতামত দিচ্ছে, এটিকে স্বাগত জানাই। আমরা বিদেশি বিনিয়োগ উন্মুক্ত করার পাশাপাশি স্থানীয় বিনিয়োগকারীদেরও সুরক্ষা দিতে চাইছি। যেসব ব্যবসায়ী বিগত সময়ে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করে কয়েকশ কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছেন, তাদের আমরা নতুন লাইসেন্স রেজিমে চাই না। তবে তাদের লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া হবে না। যে সময় পর্যন্ত তারা লাইসেন্স পেয়েছিলেন সেটি শেষ হলে তখন তাদের নতুন বিনিয়োগ ও লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করতে হবে।’