জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশে বেকার মানুষ বেড়ে ২৬ লাখ ৬০ হাজার
‘তোষণ বিনিয়োগ’ হুমকির মুখে পড়েছে, সরকারকেই সেগুলো চালিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে কর্মসংস্থানের চিত্র আরও খারাপ হবে -প্রফেসর শরমিন্দ নীলোর্মি
দেশটাকে লুটেপুটে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালান। তখন দেশের অর্থনীতি ছিল অনেকটাই বিপর্যস্ত। ব্যয় মেটাতে সরকার ঋণ করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছিলো। কিন্তু গত ৫ মাসেও বিপর্যয় সামাল দিতে পারেনি। নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়েনি বরং সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে কমেছে। গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকেই দেশে বেকার মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৬০ হাজার। এমনকি দেশের মানুষ আশাবাদী ছিল রাষ্ট্রীয় মদদে স্বৈরাচার হাসিনার অর্থ পাচার ও লুট করা টাকা ফেরত আনবে বর্তমান সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এ নিয়ে নানামুখী তৎপরতায় এখনো আশাবাদী মানুষ যে পাচারের টাকা উদ্ধার করবে সরকার। এদিকে হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য দেশের অনিয়ম-দুর্নীতি দূর হবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে এবং দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানা হবে। কিন্তু বাস্তবে গত ৫ মাসে এখনো সে ধরণের কোন উদ্যোগ বা অর্জন চোখে পড়েনি। কিছু প্রতিষ্ঠানে পরিচালক এবং পরিদর্শক নিয়োগ দিয়েই শেষ। বরং বেক্সিমকোসহ অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। কিছু বন্ধের পথে। নতুন করে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে না। আবার পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে সমস্যার মুখে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাভাবিক বা সচল করতে কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। তাই প্রতিদিনই বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। দ্রব্যমূল্য আগের মতোই ঊর্ধ্বমুখী। বিদেশি বিনিয়োগ না বাড়ায় বেকার জনগোষ্ঠীর নতুন চাকরির সুযোগ সংকুচিত হয়ে গেছে। এদিকে চাকরি প্রত্যাশী অনেকেই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেন। এতে কিছুটা হলে কর্মসংস্থানে প্রভাব পড়ে। কিন্তু গত ৫ মাসে দেশের শেয়ারবাজারে হযবরল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অনেকগুলো আর্থিক সূচক ঘুরে দাঁড়ালেও শেয়ারবাজারে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। বিনিয়োগকারী, স্টক ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকারসহ সব স্টেকহোল্ডারের মধ্যে আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে। শেয়ারাবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাজারের প্রতি মানুষের আস্থা ফেরাতে কিছুই করতে পারেনি। ভালো কোন প্রতিষ্ঠানকে বাজারে ফেরাতে পারেনি। ভালো প্রতিষ্ঠানকে সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রেও কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। বরং কিছু অমূলক সিদ্ধান্ত নিয়ে বাজারে অস্থিরতা ছড়ানো হচ্ছে। আর তাই বিনিয়োগের পরিবেশ ফেরাতে না পারায় বেকারত্ব বাড়ছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, ছাত্র-জনতা যে লক্ষ্য নিয়ে অভ্যুত্থান করেছিল তার ধারেকাছেও এখনো যেতে পারেনি বর্তমান সরকার। আগের মতোই সংকটের মুখে দেশের অর্থনীতি। ফলে অর্থনীতিতে নতুন বছরে যে চ্যালেঞ্জটি বড় হয়ে উঠছে সেটা হচ্ছে কর্মসংস্থান। বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ বলছে, বর্তমান বছর দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য আরও কঠিন হবে। বিশেষ করে তারল্য সংকট, মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে বাস্তব কোন পদক্ষেপও চোখে পড়ছে না বিশেষজ্ঞদের।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর শরমিন্দ নীলোর্মি মনে করেন যেসব ‘তোষণ বিনিয়োগ’ হুমকির মুখে পড়েছে, সরকারকেই সেগুলো চালিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে কর্মসংস্থানের চিত্র আরও খারাপ হবে। তিনি বলেন, সরকার ঘনিষ্ঠ সবাই তো আর টাকা বিদেশে নেয়নি। অনেকেই দেশেও বিনিয়োগ করেছেন। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়ে এসব বিনিয়োগের ব্যাপারে জনমনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কিন্তু যেহেতু বিনিয়োগ হয়েছে এগুলো সরকারি ব্যবস্থাপনায় অন্তত বেশ কিছুদিন চালিয়ে নেয়া প্রয়োজন বিশেষত যেগুলো ভালো প্রতিষ্ঠান। যেন কর্মসংস্থানের জন্য ভুল বার্তা না যায়। অর্থাৎ আমার নতুন কর্মসংস্থান তো তৈরি করতে হবেই, পুরনো কর্মসংস্থানও যেন ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে সেটা মাথায় রাখতে হবে। এর পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগও দরকার হবে। কারণ বিনিয়োগ হলে কাজ সৃষ্টি হয়। মানুষ কাজ পায় বলে উল্লেখ করেন শরমিন্দ নীলোর্মি।
এদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার বাড়িয়ে চলছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ব্যাংক ঋণের সুদহার ক্রমশ বাড়ছে। ইতোমধ্যে সুদের হার প্রায় ১৬ শতাংশে উঠেছে। গত দেড় বছরের কম সময়ে সুদহার বেড়েছে প্রায় ৭ শতাংশ। এতে ছোট-বড় সব খাতের ব্যবসায়ীর মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ সুদের হার বৃদ্ধি মানে ঋণের কিস্তির অঙ্কও বাড়া। এমনিতেই ডলার ও গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটসহ নানা প্রতিক‚ল পরিস্থিতিতে শিল্পোৎপাদন ও ব্যবসা-বাণিজ্য কমে গেছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় নতুন বিনিয়োগ ও ব্যবসা স¤প্রসারণে আস্থা পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় ক্রমাগত সুদহার বৃদ্ধিতে নিদারুণ চাপে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। সব মিলিয়ে এরই মধ্যে কমে গেছে শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির এলসি খোলা। বেসরকারি ঋণে চলছে ধীরগতি, বিনিয়োগে নেমে এসেছে এক প্রকার স্থবিরতা। এর প্রভাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেছেন, বর্তমানে সুদের হার যে পর্যায়ে উঠেছে তাতে ব্যবসা করে মুনাফা করা সম্ভব নয়। উচ্চ সুদের কারণে ব্যবসার খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমছে ব্যবসায়ীদের। আবার ঋণ ফেরত দেওয়ার সক্ষমতাও কমছে। কারণ আমাদের সুদসহ ঋণ ফেরত দিতে হয়। তিন মাস পর পর এটা চক্রবৃদ্ধি হয়। ফলে সুদের হার যত বাড়বে, ব্যবসায়ীদের ঋণ ফেরত দেওয়ার সক্ষমতা তত কমে যাবে। দেখা যাবে সময়মতো অনেকে ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না, এক সময় খেলাপি হয়ে যাবে। আর খেলাপি হলে অন্য ব্যাংকও ঋণ দেবে না। সব মিলে ব্যবসায়ীদের বিপদ বাড়ছে। ব্যবসা বন্ধ ছাড়া উপায় থাকছে না।
তথ্য মতে, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ নিম্নমুখী। বিদেশি বিনিয়োগ আসলে দেশে ডলার পাওয়া যায়, কর্মসংস্থান তৈরি হয়। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ৮ শতাংশ কমে গেছে। বিনিয়োগ যে বাড়ছে না কিংবা স্থবির হয়ে আছে সেটাকে খারাপ লক্ষণ হিসেবেই বিবেচনা করেন অর্থনীতিবিদরা।যদিও গত কয়েক মাসে রেমিট্যান্স-রিজার্ভ বেড়েছে এবং ডলারের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে, বিনিয়োগ টানতে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে নিরেট এসব অর্থনৈতিক পদক্ষেপ দিয়ে কোন কাজ হচ্ছে না। বিশেষ করে জনমনে অসন্তোষ কিংবা দেশের রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা থাকলে অর্থনীতির পথও কঠিন হয়ে যায়; বাংলাদেশের সংকটটা সেখানেই বলেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।সূত্র মতে, দেশে বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশে বেকার মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৬০ হাজার। বছর ব্যবধানে বেড়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার। বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। স¤প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত ২০২৪ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। তথ্য মতে, বর্তমানে দেশে মোট বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৬০ হাজার। ২০২৩ সালের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৯০ হাজার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশে বেকার মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার।বিবিএস’র হিসাব অনুসারে, গত সেপ্টেম্বর মাস শেষে দেশে পুরুষ বেকারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৯০ হাজার, আর নারী বেকার ৮ লাখ ৭০ হাজার। বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এরমধ্যে পুরুষ বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৮১ ও নারী বেকারত্বের হার ৭ দশমিক ১৬ শতাংশ। আর ২০২৩ সালের একই সময়ে এ হার ছিল ৪ দশমিক ০৭ শতাংশ, যেখানে পুরুষ ছিল ৩ দশমিক ৪৬ ও নারী ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।
বিবিএস’র তথ্য মতে, ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছয় শতাংশের বেশি ছিল। মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ ২০২১ সালে ভারতকেও ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সুফল বাংলাদেশের অধিকাংশই পায়নি। কারণ আগের সবই ছিল কাগজে-কলমে। ২০২২ সালের সরকারি হিসাব বলছে, ১৫-২৪ বছর বয়সী ১ কোটি ৮০ লাখের বেশি বাংলাদেশি কর্মহীন ছিল। হাসিনা পলায়নের পর অস্থিরতা গার্মেন্টস শিল্পকেও নাড়া দিয়েছে। সহিংসতার মুখে গার্মেন্টস কারখানাগুলো বন্ধ রাখতে হয়েছে। আবার বেক্সিমকোর মতো কারখানা বন্ধ করে দিয়ে লাখ লাখ শ্রমিককে বেকার করা হয়েছে। নতুন করে কোন কারখানাতো হচ্ছেই না বরং যেগুলো আছে তা বন্ধ হওয়ার পথে। বাংলাদেশে ৫৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের মধ্যে ৮৫ শতাংশই আসে এই খাতের প্রায় সাড়ে তিন হাজার কারখানা থেকে। লিভাইস, জারা এবং এইচএন্ডএমসহ বহু শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি করে। পোশাক রফতানিতে চীনের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক প্রস্তুতকারক হুলা গেøাবাল, জানিয়েছে তারা ইতোমধ্যে তাদের কিছু উৎপাদন সরিয়ে নিয়েছে। অনেকে আবার ভারতে ব্যবসা সরিয়ে নিচ্ছে।
এদিকে সরকার তার খরচ কমিয়ে এবং ব্যক্তিখাতে ঋণ সংকুচিত করে মূল্যস্ফীতির চাপ সামলানোর নীতি নিয়েছে। কিন্তু এর ফলে বড় বড় প্রকল্প বন্ধ হয়ে কিংবা কাটছাঁট হয়ে এবং ব্যক্তি উদ্যোগে বিনিয়োগ কমে গিয়ে চাকরি হারাচ্ছেন অনেকেই। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের নেতাদের মালিকানায় থাকা কারখানা কিংবা শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার সংকট। ইতোমধ্যে বেক্সিমকোর মতো বড় কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। বন্ধ হওয়া এসব কারখানার লাখ লাখ শ্রমিকের কী হবে সেটা অনিশ্চিত। ফলে অর্থনীতিতে নতুন বছরে যে চ্যালেঞ্জটি বড় হয়ে উঠছে সেটা হচ্ছে কর্মসংস্থান।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মো. হাতেম বলেন, সুদের হার যেভাবে বাড়ছে তাতে নতুন বিনিয়োগে কেউ আর সাহস করবে না। বরং বর্তমানে যে বিনিয়োগ আছে সেটাই হুমকির মুখে পড়ে গেছে। সবাই এখন কিভাবে টিকে থাকা যায় সেই চিন্তায় আছে। ব্যবসায়ীদের এখন হাঁসফাঁস অবস্থা। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের গলাটিপে হত্যা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাজেই ব্যবসা ও ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে যত দ্রæত সম্ভব ঋণের সুদহার কমিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে।