এক দশকেরও বেশি সময় আগে দেশের খারাপ পরিস্থিতি ও বাসায় থাকতে না পেরে দেশ ছেড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
১১ বছর পর যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরার পর সোমবার (৬ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। এতে সভাপতিত্ব করেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, ‘২০১৩ সালে আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি হলো। দেশের অবস্থা বেশি খারাপ। আমাদের ঘরের বাইরে থাকতে হচ্ছে। চিন্তা করলাম মাত্র দুই সপ্তাহের জন্য লন্ডন যাব।
জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী বলেন, ‘বিচার বিভাগকে রক্ষা করতে পারলে অনেক নেতাকে দেশ ছাড়তে হতো না। অনেককে জেলে যেতে হতো না। ১৯৩৫ সালের ব্রিটিশ সরকার থেকে গত সরকার পর্যন্ত (আওয়ামী সরকারের আগে) অলমোস্ট আমাদের জুডিশিয়ারি স্বাধীন ছিল, প্রেস স্বাধীন ছিল। মানুষের স্বাধীনতা ছিল। কিন্তু এই স্বাধীনতাকে বিগত সরকার হরণ করেছে। সুতরাং জুডিশিয়ারিকে রক্ষা করতে পারলে এই জাতি অনেক আগে এই ডিক্টেটরশিপের হাত থেকে রক্ষা পেত।’
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, ‘আজকে সবার একটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত। আমরা আমাদের জুডিশিয়ারিকে কোনো সময়ই পরাধীন হতে দেব না।’
সভাপতির বক্তব্যে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘এখানে যারা আইনজীবী আছেন তারা প্রশাসনে যাবেন। আপনারা যদি শক্তশালী হয়ে থাকেন আজ হোক, কাল হোক দেশ ভালো হতে বাধ্য।’ তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশরা আমাদের শাসন-শোষণ করেছে কিন্তু তারাও আইনকে সম্মান করত। একজন রাজনীতিক রাস্তা দিয়ে যাবে আর তাকে উধাও করে দেওয়া হবে। এমন উধাও করে দেওয়াটা অতীতে ছিল না।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের ১১ বছর আগে চলে যাওয়া আবার ফিরে আসা আমার কাছে অলৌকিক মনে হয়। তিনি বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের আগে কেউ মনে করেনি শেখ হাসিনার মতো প্রতাপশালী শাসক এভাবে পালিয়ে যাবে। বাংলাদেশের মানুষের জীবনে এর চেয়ে বড় অর্জন আর কিছু হতে পারে না।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এস এম শাহজাহান, মোহাম্মদ হোসেন, বদরুদ্দোজা বাদল, রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন প্রমুখ।